গ্রীনহিলসের এক রাত। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে এক মোটাসোটা লোক একটূ কুজো হয়ে কি যেন করছে। টিটুর সাথে এগিয়ে গিয়ে দেখল এ আর কেও নয়। স্বয়ং ঝামেলা মানে আমাদের ফগ! আর এটা নিশ্চয়ই তোমাদের বলা লাগবে না ফগের পা টিটুর খুবই পছন্দের জিনিস! একটু গর গর করতেই ফগ চমকে উঠে ঘুরে তাকিয়ে টিটুকে দেখেই উল্টে পড়ে যাচ্ছিল। ওদিকে কিশোর চেইনটা একটু হালকা করল যাতে টিটু কিছুটা সামনে এগিয়ে গিয়ে দন্ত প্রদর্শন করতে পারে। ফগ দ্রুতই বলে উঠল- ‘কুত্তা সামলাও’। বব অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখল। অন্ধকার ছিল বলে রক্ষা। মুসা বলল-‘ কি ব্যাপার মিস্টার ফগ? হাতে কি?’
এতক্ষণে সবাই খেয়াল করল ফগের মুঠোয় কি যেন।
‘ঝামেলা! পুলিশের ব্যাপারে নাক গলাতে এসো না।’ ফগের হুমকি।
‘আরে! মুসার দেখি খাবার ছাড়াও অন্যকিছুর ওপর নজর পরে। নাকি এটাও কোন খাবার ভেবেছিলে?’ রবিনের সকৌতুক মন্তব্য।
দেখ রবিন, আমি বেশি খাই তা অস্বীকার করব না। তবে আমার কিন্তু ফগের মত ওরকম ঝুলন্ত ভুড়ি নেই। বলেই সাদা দাঁত বের করে হাসতে লাগল মুসা
ফগ বোধহয় মুসাকে ধরার জন্য হাত বাড়িয়েছিল। ঠিক তখনই কিশোর বলল-‘ মিস্টার ফগ। আপনি বোধহয় কিছু নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। নাহলে রাস্তার পাশে এরকমভাবে ওই জিনিসটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন না।’
ফগ হয়ত ভাবল এদের কাছে সমাধান পাওয়া যেতে পারে। যদিও তার আঁতে ঘা লাগছিল সাহায্য চাইতে তবুও চাকরির কথা ভেবে ওদের কাছে সাহায্যের প্রয়োজন মনে করল। তার আগে ভাবল একটু গরম দেখিয়ে নেই। ‘ঝামেলা! সবসময় আমার পিছে লেগে থাক কেন? যেখানে যাই সেখানেই হাজির হও কেন?’ ফগের গরম গরম প্রশ্ন।
বব বলল- ‘তুমি কি চোর-ডাকাত নাকি যে আমরা তোমার পিছে পিছে ঘুরব? আমাদের সময়ের দাম আছে। তোমার মত ঝামেলার পিছে ঘুরি না আমরা। ছোট একটা শহর। তাই ঘুরতে ফিরতে দেখা হতেই পারে।’
ফগ কিছু বলার আগেই কিশোর ববকে ধমক দিয়ে বলল- ‘বব। এ তোমার চাচা। সম্মান দিয়ে কথা বল। মিস্টার ফগ আমরা আসল কথায় আসি এবার।’
ওদের সামনে বাড়িয়ে দিতেই সবাই দেখল একটা মোবাইল ফোন। মাত্র কয়েকমাস আগে একটি প্রতিষ্ঠান পুরো বিশ্বে বাণিজ্যিক ভাবে মোবাইল ফোন ছেড়েছে। তিন গোয়েন্দার প্রত্যেকের বাসায়ই কিনা হয়েছে। ওরা টিপেটুপে সব দেখে ফেলেছে। এখন আর আগ্রহ নেই।
ফগ বলল-‘থানা থেকে সব পুলিশকে দেয়া হয়েছে আজকে। সমস্যা হল বসের নাম্বার কিভাবে এ ফোনে টুকে রাখতে হয় তা ভুলে গেছি। সবাইকে একবার দেখানো হয়েছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম এটাতো আমাদের ববের থেকেও বলদ কোন ছেলে পারবে। কিন্তু বের হয়ে দেখি ভুলে গেছি। বয়সের দোষ। অনেক কিছুই মনে থাকে না। আজকের মধ্যে যদি বসের নাম্বার এ ফোনে সেভ করতে না পারি তাহলে কাল কপালে খারাপি আছে। তোমরা পারবে?’
কিশোর বলল- ‘এটা ব্যাপার না। আমাদের সবার বাসায় আছে। দিন নাম্বারটা। সেভ করে দিচ্ছি।‘
ফগ খুশিমনে দিল। ফেরত দেয়ার সময় কিশোর বলল-‘যেহেতু আমরা একে অপরের পরিচিত আর কেসে আমাদের সাহায্য লাগে তাই আমাদের নাম্বারটা তিনটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে সেভ করে দিলাম যাতে ফোন করতে পারেন। আর এই দেখুন আপনার বসের নাম্বার সেভ করা হয়েছে।’
ফগ ছো মেরে নিয়ে নিল রাগের মাথায় কোন কিছুর দেখাদেখির ধার না ধরে। বলল-‘ শয়তানের দল! সব জায়গায় তামাশা কর না? আমি অবশ্যই তোমাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলব।’ বলেই গট গট করে চলে গেল।
কিশোর সবার দিকে ঘুরল। ‘একটু আগে আমরা কি ভাবছিলাম? এবারের ছুটিটা বোরিং হবে ,তাই না?’
মুসা বলল-‘কিশোর তোমার ওই মঙ্গল গ্রহের মংগলি ভাষা শুনলে হতাশায় আমার আজকে বেশি খাওয়া লাগবে। তার চেয়ে ইংরেজিতে বলে ফেল।’
চল হাটতে হাটতে বলি। একটু পর চারজনের সম্মিলিত হাসি শুনতে পেল রাস্তার অনেকেই। সাথে কি টিটুও যোগ দিয়েছিল? কি জানি! মনে হচ্ছে সামনে মজার কিছু ঘটাবে এই প্রাণের তিন বন্ধু।
বিঃদ্রঃ- ইহা সম্পূর্ণই আমার নিজের লিখা। কেও কপি-পেস্ট করে নিজের নামে চালায় দিলে তার ইহকাল আর পরকাল দুটার ক্ষতিই কামনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৫