ঘটনা ১
সাকিব আল হাসান ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। দেশের অভিজাত অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিরাপত্তা এবং উন্নত চিকিৎসায় বিন্দু পরিমান ত্রুটি নেই কর্তৃপক্ষের। এর মাঝখানে সাকিবের খোঁজখবর নিতে হসপিটালে উপস্থিতি হলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই গুনটি আমার অসম্ভব ভাল লাগে। মানবিক দৃষ্টিকোণে তিনি অনন্য। এরপর দুদিন পর কিছুটা সুস্থ হয়ে সাকিব ফিরে গেলেন তার পরিবারের কাছে। পরিবারের সবার মুখেই হাসি।
ঘটনা ২
হরতাল চলাকালীন সময়ে গাজীপুরে পিকেটারদের দেয়া আগুনে মারাত্মক আহত হয় ১২ বছরের কিশোর মনির। তার বাবা কাভার্ডভ্যান চালক। সন্তান যখন আগুন পুড়ছিল তখন বাবা পাশেই ছিলেন। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায়তম ওই বাবা সন্তানকে আগুন থেকে বাঁচাতে পারেননি। শরীরের প্রায় ৯৫ ভাগ পুড়ে যায় মনিরের। ঠিক অনেকটা শিক-কাবাবের মতো পুড়ে মনিরের শরীর। স্থানীয়দের সহায়তায় বাবা ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করেন। ডাক্তাররা হতাশ করেন সেই বাবাকে। যেকোন সময় মারা যাবে ওই ছোট্ট কিশোর। (যা দেশের সব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়।) একজন বাবা কতখানি অসহায় হলে সন্তানের মৃত্যুর জন্য কামনা করতে থাকেন। এরপর প্রায় তিনদিনেরও বেশি সময় যমদূতের সঙ্গে যুদ্ধ করে গত রাতে মনির মারা গেলো।
নাহ! মনিরকে দেখতে প্রধানমন্ত্রী আসেননি। প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে একটা ফোনও আসেনি মনিরের চিকিতসার জন্য। অসহায় বাবা-মা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। সে ছাড়া তো তাদের আর কেউ নেই! তাদের মনির তো আর সাকিব আল হাসান নন। আর আল্লাহ কাছে প্রার্থনা করেই কি লাভ। উনি তো গরিবদের পছন্দই করেননা।
হয়তো রাজনৈতিক দলগুলো এখানে(মনিরের) মানবিকতা প্রকাশ করতে চায়নি ইচ্ছে করেই। মারা গেলেই তো লাশের সংখ্যা বাড়বে। রাজনীতির মাঠে হিসেব নিকাশ বাড়বে। সাকিবের মায়েদের মুখে হাসি নিরন্তর, আর মনিরদের মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ সারা জীবনের।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৪