কামাল উদ্দিন। আমার বন্ধু। স্কুল জীবনের। খুবই ভাল ছাত্র। দুর্ভাগ্যক্রমে ঠাই হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর স্বপ্নময় তরুন বন্ধুটির জীবনের করুণ পরিণতি। বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। সংসার চলে না। প্রিয়তমার বিয়ে হয়ে গেছে। বয়স হয়ে যাচ্ছে বলে। কিন্তু এখনও কামালের পড়া শেষ হয়নি। চাকরি তো দুরের কথা।
অনার্স শেষ করতে সময় লেগেছে প্রায় ৬ বছর। রেজাল্ট পেতে আরও ৬ মাস। মাস্টার্স ভর্তি হয়েছে। কবে শেষ হবে তা আল্লাহ পাকই জানে। আহ ! আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা! জীবন গড়ার জন্য নয়, জীবন ধ্বংশ করার জন্য। ৫ বছরের পড়াশোনা যদি লাগে ৮ বছর তাহলে সেটাকে তো ধ্বংশই বলতে হবে। একটা তরুন/যুবকের জীবনের আর কিইবা আশা থাকে !!
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সেশনজটের কথা সরকারের সবাই জানে। ছেলে-মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে এটাও জানে। তবুও কারো যেন মাথাব্যথা নেই ! সবাই কেমন নিশ্চিন্তে আছে ! লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মি. নাহিদ আগের মতোই হেসে যাচ্ছেন।
কোন পাবলিক ভার্সিটিতে এক মাস ক্লাস বন্ধ থাকলে মিডিয়ার মাথা গরম। একমাস সেশনজট, শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকি স্বরপ ইত্যাদি আরও কত কলাগাছ। কিন্তু এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে ৩ বছরের সেশনজট !! কোথায় মিডিয়া, কোথায় দায়িত্বশীলরা !! এরা কি সতীনের ছেলে? নাকি বিহারী পাঞ্জাবী ? যে এদের জীবনের কোন দাম নেই! এদের নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই !!
আন্দোলন, রক্তের মধ্য দিয়ে ৭১ এ আমাদের অধিকার আদায় করতে হয়েছে। আপনাদের মনে রাখতে হবে, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়।
এবার সিদ্ধান্ত আপনার। এভাবেই জীবনটা ধ্বংশ করবেন নাকি নিজের অধিকার নিজে আদায় করবেন।