যার শুরু আছে তার পিছনে কারণ থাকতেই হবে- এই ধরণের দর্শন বিজ্ঞান কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে বাতিল করে দিয়েছে বহু আগেই। আনবিক পরিব্যাপ্তি,আনবিক নিউক্লিয়াসের তেজষ্ক্রিয় অবক্ষয়ের মতো কোয়ান্টাম ঘটনা সমুহ কোন কারণ ছাড়াই ঘটে বলে বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। হাইজেনবার্গ এর অনিশ্চয়তা তত্ব (E=mc2 এর সাহায্যে) প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে সামান্য সময়ের জন্য শক্তির উৎপত্তি এবং বিনাশ ঘটতে পারে কোন কারণ ছাড়াই স্বতস্ফুর্তভাবে, এগুলো সবই প্রমাণিত সত্য।
স্টিফেন হকিং তার a brief hitory বইয়ে দেখিয়েছেন যদি এমন একটি মহাবিশ্ব ধরে নেয়া হয় যা মুটোমুটি সমসত্ব তাহলে দেখানো সম্ভব যে ঋনাত্মক মহাকর্ষ শক্তি ধনাত্মক মহাকর্ষ শক্তি ঠিক ঠিক কাটাকাটি হয়ে যায়। তাই মহাবিশ্বের মোট শক্তি থাকে শূণ্য। এ তত্ব আমাদের বলে দেয় কারও হস্তক্ষেপ ছাড়াই মহাবিশ্বের তৈরি হওয়া সম্ভব। পরবর্তীতে,বিগব্যং তত্বের মাধ্যমে প্রমানিত হয় মহাবিশ্ব ক্রম প্রসারমান কাজেই এর একটা আদি বিন্দু থাকা সম্ভব,আর তা হচ্ছে কৃষ্ঞগহ্বর। কৃষ্ঞগহ্বরে এ্যান্ট্রপি বা বিশৃঙ্খলা থাকে সবচেয়ে বেশি।
মহাবিশ্ব যদি কেউ সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে তার একটা সুশৃঙ্খল নকশা অবশ্যই থাকবে,কিন্তু তাপগতিবিদ্যার দ্বীতিয় সূত্রের সাহায্যে দেখা যায় আদিতে বিশৃঙ্খলা (আ্যান্ট্রপি) ছিল সবচেয়ে বেশি।
কোন গোলকের এ্যান্ট্রপি বা বিশৃঙ্খলা যদি সবেচেয়ে বেশি হয় তাহলে তা কৃষ্ঞগহ্বরে পরিণত হয়। মহাবিশ্বকে একটি গোলক ধরলে তার শুরুতে যেহেতু এ্যান্ট্রপি সবচেয়ে বেশি ছিল কাজেই বলা যায় এটি একটি কৃষ্ঞগহ্বর ছিল। আর কৃষ্ঞগহ্বরের বিশৃঙ্খলা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ক্রম প্রসারমান মহাবিশ্বতো পুরোপুরি একটা কৃষ্ঞগহ্বর নয়। তার মানে মহাবিশ্বের এ্যান্ট্রপি বা বিশৃঙ্খলা সবের্বাচ্চের চেয়ে কিছুটা হলেও কম । কিন্তু শুরুতে সবচেয়ে বেশি ছিল। আমরা মহাবিশ্বে যে শৃঙ্খলা দেখি তার কারণ হচ্ছে মহাবিশ্বের ক্রমবর্ধীত আয়তনের থেকে আ্যান্ট্রপির বা বিশৃঙ্খলার পরিমাণ কম। আর কিছু পরিমাণ বিশৃঙ্খলা কম হওয়ার জন্যই কোন কোন ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা দেখা যায়।
বৈজ্ঞানিক প্রাপ্ত উপাত্ত মতে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে কোনরুপ পরিকল্পনা, শৃঙ্খলা বা নির্মান ছাড়াই।শুরুতে ছিল শুধুই বিশৃঙ্খলা। যা কোন সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ঠের সাথে একেবারেই বেমানান।