(চুম্মাচাটির ছবি অধমের তোলা)
একা থাকার একটা মজা আছে। কারো আবেগ অনুভুতি আপনারে নাড়া দিবে না, আপনি নিজেরে নিয়া নিজের ভিতরে বসবাস করবেন। তবে হ্যাঁ, আপনার আবেগ অনুভূতি দিয়া কাউরে নাড়া দেয়ার সুযোগও থাকে না। যদি আপনি চান, কেউ আপনার দুঃখে উহু আহা করুক, আপনার সুখে আপনার মন মতো হাসুক, সেই উহু আহা শুনে, সেই হাসি দেখে আপনার সুখ অনুভব হোক, তাইলে কিন্তু ভিন্ন কথা। তখন আপনারও আরেকজনের সুখে হাসতে হবে। সে খাইছে কি না জিগাইতে হবে। সে খাইছে কি না এটা জিগানো মানেই একটা দায়িত্বের ব্যাপার চলে আসে। সে যদি না খায়, তারে খাওয়ানোর দায়িত্ব, সে যদি দুঃখি হয় তাইলে তারে সুখি করার দায়। একা থাকার মজাটা ততক্ষণে শেষ। ‘আপনার রাজ্যে আপনি রাজা’র খেলা শেষ।
মানুষ কি চাইলেই একা থাকতে পারে? সবসময় না। কারণ দিনের শেষে আমরা সামাজিক জীব তো, সবসময় তাই এইটা হয়ে উঠে না। একাকিত্বের মধ্যে যিনি আনন্দ খুঁজে পান, তিনি দশ জনের সাথে বসে থেকেও নিজের একাকিত্বের আবহ তৈরি করে নেন, সবাই দেখেন তিনি তাদের সাথে, কিন্তু আসলে তিনি তার নিজের মধ্যে। ব্যাপারটা মজার।
ফরাসী সাহিত্যিক বালজাক একাকিত্ব নিয়া একটা মজা কথা কইছেন, “এককিত্ব সত্যিই দারুন একটা ব্যাপার, কিন্তু ব্যাপারখান যে দারুন সেটা বলার জন্য তোমার একজন মানুষের দরকার।” তাই আমাদেরকে অল্প বিস্তর সামাজিক হইতেই হয়।
এই একা থাকার প্রেমে পড়া মানুষগুলা কিভাবে একা থাকে? তারা কিন্তু আসলে একা থাকে না। এরা কিন্তু নিজের জায়গায় নিজের জগৎ বানায়া নেয়। সেই জগতে তারা ভীষণ রকম সামাজিক এবং দায়িত্বশীল। এইটা তার সেই জগতে যদি আপনে যান, তাইলে আপনি পরিষ্কার বুঝতে পারবেন, যদিও ব্যাপারটা সম্ভব না।
তবে সব মানুষ নিজের জগতে বুঁদ হইয়া থাকার জন্য বা একাকিত্বকে উপভোগ করার জন্য একা থাকে না। কেউ কেউ হয়তো বাইরের জগতটার সাথে বহুবার মিশতে গিয়াও পারে নাই বিধায় একা থাকে। কারণ বাইরের জগতের মানুষগুলার সাথে তার কোন কারণে হচ্ছে না বলেই সে নিজেরে গুটায়া নিছে।
জাঁ পল সার্ত্রে একটা কথা কইছিলেন, “যখন তুমি একা, তখন যদি তুমি নিঃসঙ্গ থাকো, তাইলে তুমি অসৎসঙ্গে বসবাস করতাছো।” একা থাকার প্রেমে পড়া মানুষগুলার মজা হইলো এইখানেই, তারা সৎসঙ্গে থাকে, তারা একা না।
একা থাকা নিয়া মেলা প্যাঁচাল পাড়লাম। ফালতু প্যাঁচাল বন্ধ করি। সময় নষ্ট না কইরা, যান অন্য লেখা পড়েন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৪৮