গত কয়দিন ব্লগরে খুব মিস করছি। হুট কইরা ব্যস্ততা বিপুল পরিমাণে বাইড়া যাওনের কারণে খুব ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্লগে উঁকিও মারতে পারি নাই। তয় এই কয়দিন অনেক কিছুই ঘইটা গ্যাছে। বারবার মনে করছি এইটা নিয়া লেখা উচিৎ কিন্তু সময় হইয়া উঠে নাই। এই ধরেন ক্রিকেট মাঠে সাকিবের কাণ্ডখান। ক্রিকেট বিষয়ক বিশেষঅজ্ঞ, প্রাক্তন খেলুয়ার, সাংবাদিক সবাই কইতাছে আম্পায়ারের উল্টাপাল্টা কুকাম নিয়া প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ, কিন্তু সাকিব যা করছে এক্কেরে ঠিক করে নাই। ইহা একটি অখেলুয়ার সুলভ আচরণ হইছে। তাহারা সকলে অবাক। নাম্বার ওয়ান সাকিব খান (ক্রিকেটে)-এর পক্ষ থেকে এই আচরণ দেখে তারা বিস্মিত, বিচলিত...ব্লা...ব্লা...ব্লা...
আমি কিন্তু এক্কেরে একশ ভাগ সাকিবের পক্ষে। সাবাস বেটা। এইটাই করার দরকার ছিল। ভেরি গুড। এটার কারণটা পরে কইতাছি। আগে দেখি সাকিব কী করছে। প্রথমত: সাকিব আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে একমত না হইয়া স্ট্যাম্পে লাথি মারছে। সাবাস। দ্বিতীয়ত, বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্তেও সে দ্বিমত পোষণ কইরা আবারো স্ট্যাম্প ভাঙছে। এবার শুধু স্ট্যাম্প ভেঙেই সে বসে থাকে নাই, সে আরেকটা কাজ করছে যা মিডিয়াওয়ালারা খেয়াল করলেও শরমের কারণে কিছু কইতে পারে নাই। একটা স্ট্যাম্প মাটির থিকা তুইলা আম্পায়ারের দুই পায়ের ফাঁকে জায়গামতো ঠেকা দিয়া আইছে। সুপার্ব! ক্লেভার! সবাই পারলে ভিডিওটা দেইখেন। মজা পাইবেন। আমিও পাইছি।
তিন নাম্বার কাম সাকিব যেইটা করছে, সেইটা হইলো মাঠ থেকে বাইর হইয়া গতিদানবরে আঙুল দেখাইছে। মনে রাখবেন, গতিদানব কিন্তু নিছক আবাহনির কোচ না, গতিদানব হইতাছে বিসিবির দানব। বাপের বেটা, বুকের পাটা আছে!
পাকিস্তানের শাসনের মধ্যে থেকে, সেই আইন মেনে পাকিস্তানের নাগরিকসুলভ আচরণ বজায় রাইখা প্রতিবাদ করলে আজকের বাংলাদেশ আর দেখতে হইতো না। এই জন্য আসলে বাঙালিদেরকে তৎকালীন পাকিস্তানী আইন অনুযায়ী অনাগরিকসুলভ হইতে হইছে। একটা ভুল সিস্টেমের মধ্যে থাইকা, সেই সিস্টেম যথাযথভাবে মেনে কারো পক্ষে সিস্টেম পরিবর্তন সম্ভব না। সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হইলে সিস্টেমটা ভাঙতেই হয়। এখন আপনি যদি কন যে, এইটা অ-সিস্টেমসুলভ হইছে, তো হইছে। সাকিব আসলে সে কাজটাই করছে- সিস্টেমের বাইরে গেছে।
প্রতিবাদ কেমনে করতে হয় তা আমাদের সাকিবের কাছ থেকেই শিখতে হবে। সমস্যা হইলো, পরীমনির মতো সাকিবের পাশেও তার সতীর্থ কেউ নাই। আহা! আবার পরীমনির কথা চলে আসলো। তার চলচিত্রের মানুষগুলাই তার পাশে নাই। সমস্যা হইলো জায়েদ খানের মতো একটা বলদ যেখানে সমগ্র চলচ্চিত্রশিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের থেকে এর চাইতে ভাল কিছু আশা করা যায় না।
পরীমনি আর সাকিবের মতো আরেকজন একলা মানুষ আছে- নিখোঁজ (গুম এখনো বলা যাচ্ছে না) হয়ে যাওয়া মাওলানা আবু ত্বাহা মোহাম্মদ আদনানের স্ত্রী। ব্যক্তিগতভাবে আমি মোল্লা পছন্দ করি না। তাদের থেকে দূরে দূরে থাকি। তবে আমার কোন স্বজন এভাবে নিখোঁজ হইলে আমি সহ্য করতে পারতাম না। তারাও আমার মতোই মানুষ।
মানুষের মানুষ হইতে আরো কত দেরী!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ১:৫৯