৫ জুন : বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত আর্ন্তজাতিক আইন অমান্য করে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করায় বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত আমাদের তীব্র প্রতিবাদের মুখেও যে ভাবে বাঁধ নির্মাণের তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে, এতে সুষ্পষ্ট হয়ে উঠেছে তারা আমাদেরকে সব দিক থেকে আগ্রাসনের শিকার করতে চাইছে। তারা বলছেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে অবিলম্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। আর্ন্তজাতিক নদী আইন অমান্য করে ভারত টিপাইমুখ বাঁধের নকশা তৈরী ও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। তারা এখন যে কোন সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্ন্তজাতিক পানি শাসন আইনের প্রতি কোন ধরনের তোয়াক্কা না করে, ভারত যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এর বিরুদ্ধে এখনই জোর কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তারা বলছেন, গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধ, গজল ডোবায় তিস্তা নদীতে ব্যারাজ তৈরী করে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলকে মরুময় করে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বরাক নদীতে টিপাইমুখে বাঁধ তৈরী করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করার চক্রান্ত করছে ভারত। আর্ন্তজাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে ভারত ইতিমধ্যে যতটুকু এগিয়েছে তা ভারতের নিজস্ব আইন, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের বিভিন্ন নির্দেশনার মূলনীতি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ১৯৯৬ সালে করা চুক্তির বরখেলাপ। টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্প গ্রহণ করা হলে, বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না বলে ভারত যে আশ্বাস দিচ্ছে, তা শুধু আইনগতভাবে অগ্রহনযোগ্য নয়, এটি বিভিন্ন কারণে অবিশ্বাস্যও। তিনি বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজ হলে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না- এই দাবী ভারত ১৯৫১ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত আমাদের অব্যাহতভাবে শুনিয়ে এসেছে। ফারাক্কা ব্যারাজের অপূরণীয় ক্ষতির তিক্ত অভিজ্ঞতার পর টিপাইমুখ বাঁধ ক্ষতিকর হবে না ভারতের এই দাবী অন্ধের মত মেনে নেওয়ার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিপাইমুখ বাঁধ কার্যকর হলে সুরমা-কুশিয়ারা ও মেঘনা অববাহিকা অঞ্চলের বৃহত্তর সিলেটসহ ১৬ জেলার ৩ কোটি মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাবে। মৎস্য ও চা বাগানসহ কৃষি ক্ষেত এবং সুন্দরবন হাওর-বাওড় সহ প্রাণী বৈচিত্রে নেমে আসবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরে পতন ঘটবে। বিঘ্নিত হবে নদীর স্বাভাবিক গতি প্রবাহ, সামুদ্রিক লোনা পানি চলে আসবে উজানের দিকে। ঐ অঞ্চলের সার কারখানা, বিদ্যুৎ প্রকল্প সহ শিল্প কারখানা হুমকির মুখে পড়বে।
বিশিষ্ট প্রকৌশলী ও অঙ্গীকারের প্রধান নির্বাহী পরিচালক হেলাল উদ্দীন বলেন, বরাক নদীর উৎস ভারতে হলেও সেখানে এর ব্যাপ্তি ২৭৭ কিলোমিটার। অন্যদিকে আমাদের দেশে এর ব্যাপ্তি ৬৬৯ কিলোমিটার। বিশাল এ নদীর মুখে বাঁধ নির্মিত হলে এর বাকী অংশে কি হবে তা বিবেচনায় না এনে ভারত যে ভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে এটি ভুল এবং অন্যায় কাজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত আমাদের দূর্বল মনে করেই আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছেন, টিপাইমুখ ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যমত প্রকাশের পাশপাশি জাতিসঙ্ঘ সহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগের কৌশল নিতে হবে। তারা বলছেন, আয়তনে আমাদের দেশ ছোট হলেও আমাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো নেই। #
যারা পরিবেশবান্ধব নীতিমালা মানবে না, তাদের কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে : শেখ হাসিনা
লিংকঃ
Click This Link
১. এখনই সময় বাধা দেবার
২. আঃলীগ আসলেই কেন ভারতের বাধ দেবার হিড়িক পড়ে ?
৩. কোথায় জাতীয় স্বার্থ ?
৪. আমাদের বাধ রক্ষার সংগ্রাম চলবেই চলবে.......