১ম পর্ব : Click This Link
যাক ভিসা পাওয়ার পর নতুন করে আবার ট্রেনের টিকেট করালাম বাই দিস টাইম হাসান জানাল যে তার কোন কাজ একবারে হ্য়না; এই যেমন উদাহরণ হিসাবে বলল..এস,এস,সি -দুবার,এইচ,এস,সি তেও প্র্যাকটিকাল মার্ক বিষয়ক জটিলতায় রেজাল্ট উইদেল্ড,ইভেন বাইরে পড়তে আসার সময় ও একবারে ভিসা হয়নি...ইত্যাকার আরো অনেক দৃষ্টান্ত সে উপস্হাপন করল এবং সর্বশেষ উদাহরণতো্ হাতে হাতে পেলাম এমব্যাসীতে জাকান্দানি আর ট্রাভেল টিকেটের টাকা গচ্চা দিয়ে আবার বুকিং।সো হাসান বলল এই সমস্ত ডিলিং গুলো যেন আমি নিজে নিজে সামলাই তাকে না জড়াই কারন তাকে জড়ালেই বিড়ম্বনা আর অর্থের শ্রাদ্ধ বই কিছুই হবেনা।আমি এ সমস্ত সুপারস্টিশাস্ ব্যাপারগুলোতে বিশ্বাস না করলেও পরবর্তীতে তার এ কুফা বিষয়ক ব্যাপারটি হাতে নাতে বেশ কয়েকবার রেজাল্ট পেয়েছি।
যাহোক এবার আমিই ট্রেনের টিকেট বুকিং দিলাম..এর আগের বার অনলাইন বুকিং দিয়েছিলাম টিকেট বাসার এড্রেস এ চলে এসেছিল।সেদিন আমার কপালটাই খারাপ ছিল তার সাথে পাল্লা দিয়ে মেজাজ ও।রাতের শিফট্ এ কামলা দিয়ে(সকাল থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ছিল ক্লাস) সকালে বাসায় এসেছি ভাবলাম নেট এ ট্রেনের বুকিং টা দিয়েই দিই।সবকিছু ঠিক ছিল ..সিট চয়েজ,টাইম,কস্ট বাট যেই না ক্রেডিট কার্ড নাম্বার দিয়ে ওকে করেছি দেখি কি ল্যাপটপ হ্যাং হয়ে গেছে,এমন রাগ লাগছে,বুজতে পারছিনা পেমেন্ট ক্লিয়ার হল কিনা ,অন্য একটা ল্যাপটপ থেকে আমার মেইল একাউন্টে ঢুকলাম সেখানেও কোন পেমেন্ট একসেপ্ট বা বুকিং কনফার্মেশান মেইল নাই।এদিকে ওদের কনট্যাক্ট নাম্বারে দেখলাম কাস্টমার সার্ভিস এভেলএবল সকাল নয়টায় আর তখন বাজে সকাল সোয়া সাতটা।কি করি !
শেষমেশ কল করলাম অপারেশান টুয়েন্টি ফোর আওয়ার এ.. অপারেটর চাইনিজ মহিলা..তারে বললাম বিস্তারিত ...এক কথা তিনবার বলার পর সে বুজে ..অবশেষে সে তরিকা বাতাইল : যে অনলাইন পেমেন্ট যদিও একসেপ্ট হয় সে সেটা ক্যানসেল করে টাকা রিফান্ড করবে এখন সে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বুকিং কনফার্ম করবে তার আগে আমার ডিটেলস্ আবার দিতে হবে উইদ ক্রেডিট কার্ড নাম্বার বাট টিকেট তারা পোস্ট এ পাঠাবে না অফিস থেকে প্রপার আই ডি দেখিয়ে নিয়ে আসতে হবে(এখন একটা কোড নাম্বার দিবে ওটাও দেখাতে হবে) কারন আমার অনলাইন বুকিং এ সমস্যা হয়েছিল।যাক টাকা বা ট্রানজেকসান নিয়ে এখানে সমস্যা নেই কারন অফিসিয়ালি এখানে দু্ই নম্বরির উপা্য নাই কিন্তু হ্যাকার আর অনলাইন ফ্রডস্টারদের বিষয় আলাদা আর আমি ভাবছিলাম টিকেট আনতে যাবার ঝামেলার বিষয়টি যেটা এভয়েড করতে চাইছিলাম কিন্তু এখন ওটাই অনিবার্য।
যাহোক ওদের অফিসটা নতুন ইণ্টারন্যাশনাল ট্রেন টার্মিনালে...ঐ দিন আমার একটা বিশেষ জরুরি কাজ থাকায় হাসানকে সাথে নিলাম যাতে আমার ডকুমেণ্টস্ আর টিকেট টা তাকে দিয়ে পাঠিয়ে দেব।সে যেতে চায়নি আবার তার কারনে নতুন কোন গ্যাণ্জাম লাগবে এই ভয়ে ...অথচ অদৃষ্টের কি পরিহাস !!!ঐ দিন ঐ সময়টাতে নিরাপত্তাজনিত কারণে স্টেশন ক্লোজ..ঐ স্টেশনের আগে এবং পিছের স্টেশনে ট্রেন থামছে বাট ঐটা ক্লোজ তার মানে আজ আর টিকেট নেয়া হচ্ছেনা এবং হাসানের কথাই সত্য প্রমাণিত হল যে,সে থাকলে যে কোন কাজ একবারে হবে না..দুবার লাগবেই...।সে মুখ কালো করে বলল:'' ভাই্য়া এবার প্রমান হলতো ? আমি কুফা''আমি ভাবলাম আসলেইতো ..তারপরও এই সরলমনের ছেলেটিকে কিভাবে বলি , হ্যাঁ তু্ই একটা কুফা !!! কুফা!!!! আমি হাসলাম ,দুর বোকা এসব অন্ধবিশ্বাস..টিকেট পাইনাইতো কি হয়েছে? কালকে এসে নিয়ে যাব ,চল আজকে সব কিছু ক্যানসেল,কাজে সিক কল দেব..হলে গিয়ে সিনেমা দেখব আর রেস্টুরেণ্টে খাব।হাসান বলল,সত্যি গুরু ? আমি বললাম ,হ্যাঁ,আই'ম সিরিআস,নড কিডিং।খুশীতে তার চোখমুখ ঝলমল করে উঠল:সাঁজের আলোর একফালি বর্ণচ্ছটা তার হাসিমাখা সহজ-সরল মুখখানায় অনাবিল পরশ বুলিয়ে যাচ্ছিল তাতে মনে হল দেবশিশুর হাসি...ভেতরের আমি হাতুড়ি পিটিয়ে আমাকে অবিরত বলে যাচ্ছে -এ হাসান কুফা নয় ,কুফা নয়,কুফা নয়।
পরেরদিন দুপুরে আমি গিয়ে টিকেট নিয়ে আসি।
চলবে.....।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৩:২৪