somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মসিদার কাটাচামচ

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মসিদাকে তোমরা চিনবে না। শজিমেকে বয়েজ হোস্টেলে যে না থেকেছে, আর ২তলার কবে আইবো আমার পালারে, যার শোনার সৌভাগ্য যার হয়নি, সে আবার কিভাবে চিনবে। আমারো সেখানে সৌভাগ্য হয়নি। হয়েছিল ইন্টার্ন হোস্টেলে এসে। পেল্লাই নাক, তার নিচে পেল্লাই ভুড়ি। আমি যখন হেলথকেয়ারের তোয়ালে দিয়ে শরীর ঢাকতে ঢাকতে গোছলে যাই, তখন মসি দা তাহার খিচুড়ি খাওয়া ভুড়ি খানা বের করে হেলথকেয়ারের টর্চলাইটের মত চকচক করিতে থাকেন।
তো একদিন আমি লুকায়ে লুকায়ে নুডলস খাচ্ছি, ওপ্রান্ত থেকে বানানো কিনা। নিজে বানালে তো অন্যকে সেধে সেধে খাওয়াতে পারিনা। আরো মজা করে খাবার জন্য, মসিদার কাছে চাইলুম-দা একটা কাটাচামচ হবে। মসিদা যেন বোমাতঙ্কের মত দূরে ছিটকে গেলেন। আমি মজা পেয়ে আরো কাছে গেলাম, কি হয়েছে মসিদা, ভয় পেলেন কেন?
যা যা এসব তুই বুঝবি না। আমি তখন উসকে দেবার জন্য বললাম, ভয় পেয়েছ কাটাচামচের কথা শুনে সেটা বল।
মসিদা তখন তার রাইস কুকার থেকে শেষ খিচুড়ির দলাটা থালায় গাম্বুস করে খেতে খেতে হাসলেন। এই যে কাটাচামচ, এই কাটাচামচের জোরেই আজকাল হাজার হাজার লোক বেচে আছে জানিস? আমি রসিকতা করে বললাম তাই নাকি?
না তো কি? তখন আমি বিখ্যাত অভিযাত্রিক লিউ এং এর সাথে। অনেক বাছাই করে তিনি আমাকে নিয়েছিলেন। আমি আবার অনেক ভাষা জানতাম কিনা। আর বিভিন্ন উপজাতিদের ভাষা জানা চাট্টিখানি ব্যাপার না।
আসল কথায় আসি। সেবার আমরা ৩০ জনের এক দল দুই ফুসফুস মহাদেশের প্রান্ত ধরে, হ্রদয় সরোবর এ চলছি। আমাদের উদ্দেশ্য ক্যারোটিড নদীর প্রান্ত ধরে যেখানে পন্স পর্বত আছে সেখানে নাকি অনেক হীরে পাওয়া যায়। চলছি দুর্গম নদী ধরে, যেমনি জোয়ার তেমনি ভাটা। উথাল ঢেউয়ে নৌকা এই ডুবে এই ভাসে। তার মাঝে ১০ দিন ধরে আমরা এওর্টা নদী, পার হয়ে কিনারায় পৌছেছি। গভীর রাত, দুই পাশে পাহাড়। কোথায় যাব, কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। হঠাত দুই পাশে ঢাকের গর্জন, আমিতো আগে থেকেই এদের ভাষা বুঝতাম। চট করে বুঝে ফেলি বিপদ সংকেত।
ঢাকের ভাষার আলাদা রীতি আছে। সেই সময় তো এখনকার মত এত টেলিফোন মোবাইল ফোন ছিল না, ঢাক দিয়েই যুদ্ধের আহবান, শত্রুর খোজ এক গোত্র থেকে আরে গোত্রে যেত। আসন্ন শত্রুকে সব গোত্র মিলে ঘিরে ফেলে কাবু করে ফেলত।
এদিকে আমরাও ক্যারোটিড এর এমন এক প্রান্তে এসে পৌছেছি, সামনে খালি উচু উচু মাটির ডিবি দিয়ে জংলীরা বাধ করে রেখেছে। দেখতে দেখতে ঢাকের গুম গুম বাড়তে বাড়তে জংলীরা আমাদের ঘিরে সব অস্ত্রশস্ত্র কেড়ে নিল। এখন কী করি। জংলীরা তো সিউর আমাদের কাচা গাজর দিয়ে রান্না করে সালুন বানিয়ে খাবে।
এ যাত্রায় মসি দার খিচুড়ি শেষ। হাসের বাকিটা সামনে নিয়ে-ভুড়িটা সামনে ফেলে দিয়ে বাকিটা বলার প্রস্তুতি নিলেন। আমি তো বেশ উৎসাহী- তা পরে কী হল দা?
কী আর হবে, আমাদের ধনে পাতা গাজর দিয়ে সালুন বানিয়ে ওরা তখন কাটাচামচ দিয়ে খাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমার আবার বিভিন্ন জিনিস খাবার শখ বেশি তো। আমি নিজেকে খাবার জন্য একটা কাটা চামচ চেয়ে নিলাম। ওরাও ভালো বুঝে আমায় দিল একটা কাটাচামচ। যেই না আমায় একটা কাটাচামচ দিল-ওমনি কাটা চামচ দিয়ে মাটির দলায় দিলাম একঘা। এই ঘা সেই ঘা না, এই ঘা মসিদার ঘা। ব্যস আর যায় কই-পানির স্রোতে সব ভেসে গেল। আমরাও ভেসে গেলাম।
ইশ হীরেগুলি বুঝি আর পাওয়া হয় নি? সে আর পাব কিভাবে-ম্যাপ টা ভেসে গেল না।
কিন্তু এর সাথে আজকের দিনে হাজার হাজার মানুষের বেচে থাকার কী সম্পর্ক?
কেন বুঝিস নি? আমিই তো কাটাচামচ দিয়ে সবগুলাকে ক্যারোটিড থেকে ঠেঙ্গিয়ে কাফে পাঠালাম। কাফ ভেইনে ব্লক দিলেও রয়ে সয়ে বাচা যায়, কিন্তু এখনো যদি ক্যারোটিডে সেই হারে ব্লক হত-বাচতি বল বাচতি।
আমার ওপ্রান্তের নুডলস টা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। আমি বললাম চলি মসি দা।
ওরে প্যালা কিছু নুডুস দিয়ে যা-কতক্ষন না খেয়ে আছি।

এখন ঘনাদা পড়তেছি ।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×