হুট করেই বিয়েটা ঠিক হয়ে গেল। কী করবো বল, পাত্রী পক্ষ এমন চেপে ধরলো যে, আর না করতে পারলাম না। আমি তো নিজেকে ছোটই ভাবি। ছাত্র থেকে পাত্র যে কেমনে হই?” অবাক হবেন না। এটা আমার কথা না-আমার বন্ধুর কথা। আমার এই সুসময় আসতে দেরী আছে। এখন ব্লগার বলেই বলেন, টকশোখোর বলেই বলেন। আমাদের আবার জ্ঞান বেশি না একটু-তাই যেকোন বিষয়ে দুই এক কথা না বললে হয় না।কিন্তু কয়দিন আর চাপা মারবো। তাই চুপি সারে চুরি করলাম লেকচার, লেকচার অব ফাউন্ডেশন ট্রেনিং ফর পাত্রস।
(//ভেবেছিলাম ঈদের পরে আমার নারী ইন্টার্ন
বান্ধবী গন কোমরে আচল বেধে বিয়ে করতে নামবে, কিন্তু তারাই দেখি বেশি ক্যারিয়ার সিরিয়াস। পক্ষান্তরে সকল জারিজুরি বাদ দিয়ে পুরুষ ইন্টার্নরা নামিতেছে বিবাহ যুদ্ধে-যেই যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত,দয়া থাকলো তোদের জন্য)
তা আসুন দেখে নেই –সেই গেস্টাপো লেকচারঃ
বিবাহিত পুরুষ আর ভেড়ার মধ্যে তফাত একটাই, সে ইচ্ছায় ঘাস খায়, আর আপনি জোর করে খান। তা বিয়ের আগে থেকেই নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করুন। যাতে আপনি খুব দ্রুত বৌয়ের আচলের খোজ পানঃ
১। দায়িত্বশীল হোনঃ কাঙ্খিত বর মানেই দায়িত্বশীল বর। পাত্র হিসেবে নিজেকে দায়িত্বশীল করতে তাই আজই বাজারের ব্যগ হাতে রাস্তায় নেমে যান। দোকানদার, মাছের বাজারে আপনার চেহারা সেলিব্রেটি ফেসে পরিনত করুন। বাজার যাবার আগে, কিছুক্ষন রেডিওতে আরজে দের শুনতে পারেন। তাতে সকাল সকাল বৌয়ের নাস্তা হজমি বক্তব্য আপনার সহজপাচ্য হবে।
বেশি বেশি আত্মীয় স্বজনদের জন্য সদাই করুন। তাতে ভবিষ্যতে শালা শালী শশুর শাশুড়ীদের জন্য সদাই করতে বুক কাপবেনা। তাদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে পারবেন। মাঝে মাঝে নিজের আরামের বিছানা ছেড়ে মাটিতে শুবার অভ্যাস করতে পারেন। অনেক কাজে দিবে। বেশি বেশি সভা সেমিনারে যান, ঘন ঘন কেক কাটুন, বেলুন ফাটান।
শপিং মলের এসির সাথে পরিচিত হোন। নামে এসি থাকলেও ফর্দের চোটে আপনি যাতে না ঘামেন, তাই আগে থেকেই অভ্যাস থাকা ভালো। সদাই পাতির জন্য দশবার ফর্দে তাকানোর অভ্যাস শপিংমলে দশবার আকাশে তাকানোর অভ্যাসে পরিনত করুন। আপনার উনার ওয়ারড্রোবের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে।
২। ঝগড়া করা শিখুনঃ ঝগড়াবিহীন সংসার জীবন আর বেড়ালের জীবন এক। তাই ম্যারমারা জীবনে জিলাপির প্যাচ আনতে ঝগড়া শিখুন। বোনের ভয়ে, বন্ধুর ভয়ে তো আর আপনি সিরিয়াল দেখতে পারবেন না, তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে রাতের টকশো দেখুন। বেশি শুনুন, মাঝে মাঝে ফোন দিন। গ্লাস ভাঙ্গা বা ফুলের টব ভাঙ্গার শব্দ রিংটোন হিসেবে দিতে পারেন। পরে না হয় বাচ্চার কান্নার শব্দ দিয়েন। তবে ভুলেও ঝগড়াতে জয়ী হবার মনোভাব পোষন করবেন না।
এ প্রসঙ্গে গতকাল ই একটা কৌতুক শুনলাম। কৌতুক টা এরকম, যে লটারীর টিকিট আর বৌয়ের সাথে ঝগড়া-কোনটা ভালো? উত্তর হল, লটারীর টিকিট, কেননা তাতে তাও তো একটু জয়ের সম্ভাবনা থাকে, বৌয়ের সাথে ঝগড়াতে তাও থাকে না।
৩। গুরুত্বপুর্ন তারিখ মনে রাখুনঃ ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস , তেমনি তারিখ মিস তো খাওয়া মিস। ভালো করে বৌয়ের রান্না খেতে চান তো-তারিখ ভুললে চলবে না। ভুললে আবার ঝাটার বাড়ি দিতে ভুলবে না। তাই মুবাইল ফুবাইল যাতেই পারুন রিমাইন্ডার দিয়ে দিবস, ভার্সারী যা কিছু আছে লোড করে রাখুন। সমস্যা হল-তাতেও আবার বৌয়েরা আজকাল নারাজ হচ্ছে। আমরা নাকি তারিখ জানতাম না, জানতো হল ক্যালেন্ডার। তাই নতুন পদ্ধতি ট্রাই করতে পারেন। বছরের শুরুতে কোন এক রেডিওর আরজে কে মেসেজ দিয়ে সব দিবসের ফর্দ জানিয়ে দিন। যদি কোন দিন শুনেন রাত বারোটার পর আপনার বউ ফোনে কাউকে গান শুনাচ্ছে-বুঝে যাবেন, আজ নিশ্চয়ই কোন দিবস।
আরেকটা উলটা কাজ করতে পারেন। ফ্রিজে বড় বড় করে সব দিবস লেখে বিচ্ছিরি অবস্থা করতে পারেন। দেখবেন দিবস টিবস আপনাকে আর মনে করতে হচ্ছে না। পাশের বাড়ীর ভাবিই যথেষ্ট। পরীক্ষিত সত্য।
শেষ।
আর চুরি করতে পারিনি। তবে ভাই মনের কথা বলি-অত কষ্ট বাদ দেন। দেখা শুরু করুন বৌয়ের সাথে হিন্দী, বাঙ্গলার বিখ্যাত সিরিয়াল। বৌ কাদবে রাইয়ের জন্য-আপনি কাদবেন কিশোরের জন্য। সাথে সাথে আপনার সংসারে বাজবে-জীবন মানেই জী বাংলা। আহা কী আনন্দ।