গতকালের ঘটনা। বাংলাদেশ প্রতিদিন এ সম্পাদকীয় পাতায় তসলিমা নাসরিনের একটা লেখা বের হয়েছে, শিরোনাম পর্নোগ্রাফী। তাতে কী আছে তা নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। তো, হয়েছে কী? আমি মিরপুর থেকে গুলশান যাচ্ছি হিমাচল সিটিং বাসে, আমার দুই সারি সামনে একজন বেশ উচু করেই সংবাদপত্র থেকে জ্ঞান আহরন করছে। তা কৌতুহল থেকেই হোক আর শয়তানের শয়তানীতেই হোক-তাহাতে আমার চোখ পড়িল। আমি একটু আশেপাশে দেখলাম-দেখি উনি বিব্রত, আরেকপাশের লোক উকিঝুকি দিয়ে পড়বার চেষ্টায় রত। আর পিছনের সারি ভাবান্তরবিহীন। কিন্তু আমিতো ভাই ব্লগার মানুষ-আমার চিন্তার অন্ত নাই, দেশ ডুবে যাচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে যদি আমি বলি ভাই ভাজ করেন-সবাই ভাববে চোরের ভাব পুলিশ পুলিশ। সেই লজ্জায় আমি চুপ থাকলাম।পড়ুক না ভাই পেপার।
ঘটনা ২-
ভদ্রতার অন্যতম শিক্ষা হল-পাশে নারীযাত্রী বা বৃদ্ধ থাকলে তাকে সিট ছেড়ে দেওয়া। তা হিমাচলে আমাদের সবার সিট বরাদ্দ থাকে। তা কোন এক দুঃসময়ে এক মহিলা বাসে উঠলেন,এবং তার সিট নেই। দাড়াবি তো দাড়াবি একদম আমার পাশেই। শিক্ষানুযায়ী আমার সিট ছেড়ে দিয়ে ভদ্রতা করার কথা।আমি কী ভাবলাম জানেন-আরে ধুরু কেউ তো ছাড়ে না, পুরা বাসে একা আমি নাকি? আমি না হয় ছাড়লাম পাশের পুরুষ লোকের পাশে উনি তো বসতে বিব্রত হতে পারে। ভাবিতে ভাবিতে পরের স্টপেজ আসল-উনি নেমে যাওয়া যাত্রীর পাশে বসলেন।
উপরের গুলোতে না হয় আমি লজ্জিত-কিন্তু; ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে কাজ করার সুবাদে আমি জানি এখানে ডে কেয়ার নামে কেমোথেরাপির ব্যবস্থা আছে। যেখানে সকাল ৮টা থেকে ২ টা পর্যন্ত কেমো দেয়া হয়। সুলভ মুল্য এবং কিছু কিছু বিনামুল্যে পাওয়া যায় বলে এখানে দুরদুরান্ত থেকে ক্যান্সার রোগী আসেন। বস্তুত কেমোর ঔষধের দাম অনেক। কিন্তু দিনের বেলা শেষে রাতে এদের অবস্থান কোথায়? কয়জনের ঢাকায় আত্মীয় আছেন? কে দেবে এদের বাড়ী ভাড়া? প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ রোগীর এবং তার লোকের স্থান হয় হাসপাতালের নিচতলায় ফ্লোরে-সেটা যে কতটা অমানবিক রাতে ডিউটি করলেই তা আমার চোখে পড়ে। অথচ সহজেই এদের জন্য অস্থায়ী থাকার জায়গা করা সম্ভব। শুধুমাত্র ক্যান্সার রোগীদের জন্য, কাগজ দেখিয়ে এ ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিভিন্ন সময়ে বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সব অর্থ দেখি ক্যান্সার রিসার্চে ব্যয় হতে-দেশে তো রিসার্চ নামে জুয়াচুরি, অন্তত এদের জন্য কিছু করা যায় না? আমি লজ্জিত লজ্জিত লজ্জিত। আমি এদের দুই তলা উপরেই ঘুমাই। সুদর্শন কক্ষে, নরম বিছানায়।