somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“ভাগ্যিস ছেলে হয়ে জন্মাইনি, তাহলে তো একটা মেয়েকে বিয়ে করতে হত!”

২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজু ভার্সিটিতে পড়ে, হলে থাকে। বাসা থেকে প্রতিমাসে টাকা আনে, আবার টিউশনিও করে। একটা গার্লফ্রেন্ডও আছে, নাম সেতু। টিউশনির টাকা কোথায় যায় সে জানে না। তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে সেতুই সবসময় ওর পকেট খালি করে। আসলে রাজু জানেই না টাকাগুলো কোথায় যায়।
সেতু রাজুর ৩ বছরের জুনিয়র। ক্যাম্পাসে আসার আগে থেকেই তাদের এ্যাফেয়ার।
রাজুর দীর্ঘদিনের রুটিন এটাই-
৮টা-৯টার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠা, সকালে খেয়ে তারপর ব্রাশ ও গোসল করা। তারপর সচারচর ক্লাসে যাওয়া, ক্লাস থেকে ফিরতে ফিরতে ১টা-২টা।
সচারচর ডাইনিংয়ে খায়, তারপর একটা ঘুম। ঘুম থেকে ৪টা-৪.৩০টার দিকে উঠে টিউশনিতে যায়।
ফিরতে ফিরতে ৮টা-৯টা, কখনও ১০টা।
তারপর গোসল করে টেবিল চেয়ার সঙ্গী করে, হোমওয়ার্ক থাকলে করে, নাহয় পড়াশুনা, নাহয় টুকিটাকি কাজকর্ম। এর ফাঁকে টুকটাক ফেসবুকিং তো আছেই।

রাজুদের রুমে প্রতিদিন পত্রিকা নেওয়া হয়। কখনও কখনও সকালেই কিছুক্ষণ পত্রিকা পড়ে নিলেও মূলত রাতেই একটু সময় নিয়ে সম্পাদকীয় পাতা পড়ে।

কিছুদিন যাবত, মূলত সেতু ক্যাম্পাসে ভর্তির পর থেকেই রাজুর রুটিনে পরিবর্তন হয়েছে। সেতু খালার বাড়ি থেকে ক্লাস করে। তাই এখন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকালের কাজগুলো তারাতারি করে সম্পন্ন করে সেতুকে রিসিভ করতে যায়।
তারপর, তাকে নিয়ে নাস্তা করে তার ক্লাসে রেখে নিজের ক্লাসে যেতে হয়। ক্লাসের মাঝে কয়েকবার ফোনকল বা মেসেজ চালাচালি না করলে আবার সেতু মন খারাপ করে। তাই সেই কাজটাও মনে রেখে রেখে করতে হয়।
তারপর তাকে নিয়ে প্রায়শই দুপুরে খাওয়া হয়। খাওয়ার বিল যে শুধু রাজুই দেয় তা নয়, মাঝে মাঝে সেতুও দেয়।
সপ্তাহের চার থেকে পাঁচ দিন তারা দুপুরে খাওয়ার পর কোথাও বসে, ক্যাম্পাসের এখানে সেখানে আড্ডা দেয়।
পাঁচটার দিকে টিউশনির সময় হলে সেতুকে তার খালার বাড়ির সামনে রেখে সে টিউশনিতে যায়।
এখানে বলে রাখা ভাল, রাজু টিউশনিতে যাওয়ার সময় কখনও রিকশায় ওঠে না, তাতে তার প্রায় পাঁচ কিলোর বেশি হাঁটতে হয়। এখানে অবশ্য রিকশা ভাড়াটাও একটা ফ্যাক্ট, তাতে ৪০ টাকা বাঁচানো হয়।
ফেরার সময়টা আগের মতই।
তারপর তাকে আবার সেতুর সাথে ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় আধাঘণ্টাখানেক কথা বলতে হয়।
এরপর টেবিলে বসতে বসতে রাত ১১.৩০টা।
কিন্তু সে আর কোনো কাজও করতে পারে না, ক্লান্তি তাকে ঘিরে ধরে, চোখ বন্ধ হয়ে যেতে চায়।
কি করবে বেচারা, বিকেলের ঘুমও তো হারাম হয়েছে।
উত্তর খুঁজে পায় না, কি হচ্ছে তার! কেনো সে এত ক্লান্ত?
প্রায় প্রতিদিন ডেটিং, দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলা, নানান জনের উপকার করে বেড়ানো ইত্যাদিরও কোনো অর্থ খুঁজে পায় না সে।
এভাবেই দিন চলতে থাকে, রাজু শারীরিক মানসিক দুই ভাবেই ভেঙে পড়তে থাকে।
সে ভাবে, সারাদিন তার সাথে সেতুও তো থাকে, সে কেমনে ভাল থাকছে?
সে কীভাবে এত ঝামেলার পরও আমাকে এভাবে সবসময় কাছে রাখতে চাচ্ছে?

অনেক ভাবতে থাকে সে, সেতু কীভাবে এত এনার্জি পায়?

অবশেষে, সে আবিষ্কার করে, যখন সে টিউশনিতে যায়, তখন সেতু কি করে, সেতু ফ্রেশ হয়ে ফলমূল খেয়ে রিমোটটা নিয়ে বিছানায় যায়, হিন্দি সিরিয়াল নাহয় ইংলিশ মুভি দেখে, আর ফেসবুকিং করে। মাঝে মাঝে রাজুকে মিসডকল দেয়!
রাজু যখন টিউশনিতে বকবক করে, সেতু তখন টিভি দেখে!
রাজু যখন টিউশনি শেষে হাঁটে, সেতু তখনও টিভিই দেখে!

এভাবে এনার্জি সঞ্চয় করে আর পরদিন সকাল থেকে আবার রাজুকে পিষ্ট করে।

ইউরেকা ইউরেকা ইউরেকা......!

মাইয়্যা মানুষ এত এনার্জি পায় কই.........???
ঐ যে, খাওয়া, টিভি দেখা আর ঘুম!

ডিপার্টমেন্টে মাইয়্যাগুলা এতো ফাস্ট-সেকেন্ড হয় কেমনে...???
ঐ যে, খাওয়া টিভি দেখা আর ঘুম!

ইউরেকা ইউরেকা ইউরেকা......!

তখন আমেরিকার এক অভিনেত্রী (আবার পড়ুন, অভিনেত্রী) ব্রোকি বার্ক এর একটা বিখ্যাত লাইন মনে পড়ে রাজুর-

“ভাগ্যিস ছেলে হয়ে জন্মাইনি, তাহলে তো একটা মেয়েকে বিয়ে করতে হত!” :v :v
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানব সভ্যতা চিরতরে ধ্বংস হবে কি করে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬



সে এক বড় অদ্ভুত বিষয়।
চিন্তা করে দেখুন এত দিনের চেনা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশাল বিশাল ইমারত ভেঙ্গে যাবে, গুড়িয়ে যাবে। মানুষ গুহা থেকে বেরিয়ে আজকের আধুনিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×