আমার জন্মের রাতটা ছিলো একটা পূর্নিমার রাত। চারিদিকে নাকি অনেক চাঁদের আলো ছিলো। আমার বাবার কাছে খুবই সুন্দর গন্ধের একটা আতর ছিলো। ছিলো না ঠিক, ইচ্ছা করেই রেখেছিলো। ব্যাপারটা ছিলো এই রকম, সম্রাট বাবরের ঘরে যখন হুমায়ুন জন্ম নেয় তখন বাবরের কাছে তেমন কিছুই ছিলো না। তার হাতে ছিলো একটা সুগন্ধি আতর । হুমায়ুনের জন্মের পর বাবর সবাইকে সেই সুগন্ধিটা দেয়। তার ধারনা ছিলো হুমায়ুন ও এই রকম সবার মাঝে সুগন্ধ ছাড়াতে পারবে। পেরেছিলো অবশ্যই। আমার বাবার ধারনাটাও ঐ রকমই।
রাতের ১১ টার দিকে আমার মনে হইলো আমার জন্য একটা কেক থাকা দরকার ছিলো। কথা ও। কিন্তু ভাবসাবে ঐ রকম কিছু মনে হইলো না। ফেইসবুকে কিছুক্ষণ ছিলাম, বরোটা বাজার ১৫ -২০ মিনিট বাকি তখনো। ফ্রিজটা খুলে দেখলাম। সত্যিই এবার কোন কেক নাই। কিন্তু সবারই মনে আছে। মনেটা একটু খারাপ হইলো, কিন্তু ভাব ধরলাম এটা নরমাল কথা। ল্যাপটপ বন্ধ করে, ঘুমানোর জন্য রেডিও মোটামোটি। লাইট অফ করে দিবো। তাউস (সার্চডাব্লিউথ্রি) ফোন দিলো।জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকায়ে কথা বলতে বলতে পাচ তালার রাসেল ভাইয়া আসতে কইরা রুমে ডুকলো। বলে যে,চল উপরে চল। আমি ও কোন হাউ কাউ করলাম না। কথা বলতে বলতে খালি পায়েই সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলাম। ভাবসিলাম উনার বাসায় যাইতে বলসে। কয়, চল উপরে যাই। আমিও ফোনে কথা বলতেসি,কি বলসে খেয়াল করি নাই। উনার পিছে পিছে ছাদে উঠে গেলাম। ছাদে পা রখাতেই বিকট চিল্লাচিল্লি।পুরা বিল্ডিংয়ের সব পোলাপান, বাচ্চাকাচ্চা, ভাইয়া ভাবি সব উপস্থিত। আমি প্রথমে অন্ধকারে টাসকি খাইলে ও মোম বাতি জালানোর পর বুঝতে পারলাম এরা আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে এত চিল্লাচিল্লি। হালকা মোমের আলোতো ভাবসিলাম জন্মদিনটা রিল্যাক্স ভাবে চলে যাবে। পুরা উলটা। কেক খাওয়ার চেয়ে মাখামাখি বেশি হইসে। অনেক রাত পর্যন্ত ছিলাম, অনেক অনেক মজা করলাম।নতুন বাসায় আসার পর এটাই আমার প্রথম জন্মদিন। অপ্রত্যাশিত এই আনন্দটা আমি এত বেশী উপভোগ করেছে, আমার ধারনায় ছিলো না, আমার বন্ধুরা, আমার বোন, আমার বাবা মা, আমার আশেপাশের মানুষগুলো আমাকে এতটা ভালোবাসে। এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৩