আমি সব সময় যে বাসে করে স্কুলে যাই, (স্বকল্প) সেটার প্রথম তিন সারীর ৯ টা সীটের উপর লেখা আছে শিশু/মহিলা/প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরোক্ষিত আসন। তো সাধারনত এই নিয়মটা মানা হয় না। তো আমি ও এক দিন এই রকম সংরোক্ষিত সীটে বসে ছিলাম। এক মহিলা এবং তার মেয়ে উঠলো। তো আমার কাছে আমার মায়ের বয়সী একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে বিষয়টা খারাপ লাগলো। আমি উঠে গিয়ে উনাকে বসতে দিলাম। আমার পাশের লোকটার ও একটা রিএ্যকশন থাকা দরকার যে, মহিলার জন্য সংরোক্ষিত সীটে বিন্দাস বসে বসে চলে যাচ্ছে আর অন্য এক জন মহিলা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আমি ভদ্রলোক কে বললাম আঙ্কেল এটা তো মনে হয় শিশু/মহিলা/প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরোক্ষিত আসন, তো এটা আপনাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত না? আমার কথায় কোন পাত্তাই দিলো না। কিছুক্ষন পর একটু বয়স্ক একজন উঠে মেয়েটাকে বসার জায়গা করে দিলো।
নারীকে তার প্রাপ্য দিলে দেশ ও দশের সুফল মেলে। এই সামান্য প্রাপ্যটা আমরা দিতে পারি না আর কিভাবে দেশের উন্নয়ন উন্নতি আশা করি। আমি একজন একটা লোককে বললাম যে নিয়মটা কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছে, এটা তো মানা উচিত আপনার। আশেপাশের দশটা মানুষ যদি দুই তিনটা ঝাড়ি দিতো ঠিকই এই ছোট খাটো নিয়ম গুলো মানা শুরু করতো মানুষ। আর এই সব ছোট খাটো নিয়ম মানতে মানতেই দেশের প্রতি দেশের নাগরিকে একটা আনুগত্য চলে আসতো। আর ঐ মেয়েটা ও তো একবার ও বলল না, যে দেখেন ঐখানে স্পস্ট লেখা আছে এগুলো সংরোক্ষিত আসন। এভাবে চুপ করে থাকলে নারীরা তো আর প্রাপ্য পাবে না। দেশ চালাচ্ছে নারীরা আর কাজের লোক, ক্ষুদ্র ঋণ, রাস্তাঘাটে প্রত্যকেটা জায়গায় নারী কি তার প্রাপ্য পায়? নারী অধিকার নিয়ে খালি বড় বড় বিজ্ঞাপন দিলে কি নারী তার প্রাপ্য পাবে? আমার মনে হয়, ঐ বাসে সবাই যদি ঐ দিন একটু করে ও কথা বললো তাইলে ঐ নিয়মটা ভংগ করার সাহস পেত না ঐ লোক গুলো। বাংলাদেশের মানুষ কথা বলতে এত ভয় পায় কেন? কথা বললে কি জরিমানা করবে নাকি কেউ? স্বাধীন নাগরিক না আমরা? যত দিন না আমাদের ভিতর থেকে এই জিনিষ গুলো উঠে আসবে তত দিন দেশ ও দশ সুফল পাবে না। এই ছোট ছোট নিয়ম গুলো মানতে মানতে আয়করের মত বড় বড় নিয়ম মানতে শিখবে। আওয়াজ কেউ তুলতে চায় না...! কিন্তু কথা তো বলতে হবে। অন্যায় কিছু দেখলে আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে অন্যায়কারীরা সহস পাবে না তো।
এটা তো কালকের পোস্ট, আজকেও আমি একি ভাবে এক লোককে বললাম যে এটা তো ভাইয়া সংরোক্ষিত আসন....! তো লোকটা কথা কানে না লাগানোর একটা ভাব নিলো। সাথে সাথে যে মেয়েটা দাড়ায়ে ছিলো তীব্র প্রতিবাদ।
- আপনি কেন ঐ সীট গুলাতে বসবেন? আপনি না শিশু না প্রতিবন্ধি?
- এই সব নিয়ম এখন আর নাই। এখন নারী পুরুষ সমান সব।
-দেখেন ভাই, আপনাকে কে বলসে নারী পুরুষ সমান? নারী পুরুষ যদি সমান অধিকার দিয়ে সৃষ্টি করতো তাহলে দুই লিংগের মানুষ সৃষ্টি করতো না আল্লাহ। সব হয় ছেলে বা সব হয় মেয়ে হইতো। এত কথা বইলেন না...আপনি দয়া করে সীট ছেড়ে দেন।
(এই রকমই ছিলো প্রায়)
তারপর নিয়ম অনু্যায়ী লোকটা ছেড়ে দিলো। এই তো নারীকে তার প্রাপ্যটা আদায় করে নিতে হবে....সবক্ষেত্রে..! ঠিক কিনা ?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১৬