জুলহাজ-তনয়ের মার্ডার ভিডিও ইউটিউবে আপলোড হয়ে গেছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বাড়ির সদর দরজা, মেঝে রক্তে মাখামাখি। বোঝা যাচ্ছে মাত্রই কুপিয়ে খুনিরা পালিয়ে গেছে।
ভিতরে কেউ ঢুকতে চাইছে না। সিঁড়িতে এক মহিলা বারবার বলছেন, "আসেন ভাই, ধরেন, হয়তো এখনও বেঁচে আছে।"
যে হারামজাদাটা ভিডিও করায় ব্যস্ত, সে কিছুতেই ভিডিও শ্যুটের মতন মহৎ কর্ম বন্ধ করে ভিতরে গিয়ে মানুষ বাঁচানোর মতন তুচ্ছ কর্মে লিপ্ত হতে আগ্রহী নয়।
অবশেষে একটি যুবক হাতে সাদা তোয়ালে নিয়ে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো। এইবার ভিডিওম্যানও প্রবেশ করলেন। কিন্তু সাহায্য করতে নয় - ভিডিও করতে।
বলে রাখা ভাল - ইদানিং নানান দিক থেকে অভিযোগ আসছে, আমি এখন আর আগের মতন মাথা ঠান্ডা রাখতে পারছি না। আমার লেখায় নিয়মিত গালাগালির উপস্থিতি বেড়ে গেছে।
কথা হচ্ছে, মানুষকে মানুষ বললে গালি হয়না, কুকুরকে কুকুর বললেও গালি হয়না। ঠিক একই যুক্তিতে এই ভিডিও করনেওয়ালা হারামজাদাকে হারামজাদা বললেও গালি হবেনা। এই সমস্ত ছোটলোকগুলিকে পায়ের চপ্পল খুলে নগদে পেটানো উচিৎ। ফাজলামির লিমিট সম্পর্কে তাহলে একটা ধারনা পেত।
যাই হোক, তবুও এই ছাগলের ভিডিও থেকে একটা লাভ হয়েছে। সাদা তোয়ালে হাতে যে যুবকটিকে ঘরে প্রবেশ করতে দেখলাম - ভিডিও করা না হলে তাঁর কথা জানা হতো না। ভাল করে লক্ষ্য করুন - ছেলেটি পাঞ্জাবি পড়া, টাখনুর উপর পায়জামা পড়া, টুপি মাথায় গাল ভর্তি দাড়িওয়ালা মুসলমান!
জ্বী - এই যুবকটি দুইটি মুমূর্ষু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে গেছে। ছোটলোকের বাচ্চার মতন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করে নাই। তারচেয়েও ছোটলোকের মতন মানুষ কোপায় নাই। মাথায় আনে নাই যে কোপ খাওয়া যুবকদ্বয় কী হিন্দু ছিল - মুসলিম ছিল - সমকামী ছিল - নাকি অন্য কিছু ছিল। সে শুধু দেখেছে, সামনে দুইটা মানুষের দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে।
এই সমস্ত মানুষেরা ঢাকঢোল পেটায় না - নিরবে কর্ম করে যায়।
ধর্মের নামে একদল লোক খুন করে, আবার ধর্মের নামেই একদল লোক বাঁচাতে এগিয়ে আসে।
কে মহান হলো?
লাইসেন্স পরীক্ষায় ফেল করা একটি ড্রাইভার গাড়ি চালাতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করলো।
এবং এই ঘটনার পরে যারা মার্সিডিজ বা রোলস রয়েসের ঘাড়ে দোষ চাপায়, অতি দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে তারা আহাম্মক।
ধর্ম সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না নিয়ে - দুই চারটা বই পড়ে (সত্যিই - তারা মাত্র এক দুইটা বইয়ের রেফারেন্স দেয় - আমি যে নবীর আস্ত জীবনী উদাহরণ দিয়ে দিচ্ছি, কোনই মাথাব্যথা নেই) যারা নিজেদের বিরাট পন্ডিত মনে করে বসে, তারাতো "এক্সিডেন্ট" করে মানুষ মারবেই।
আমাদের দেশে লাইসেন্স না পেয়েই গাড়ি চালানো একটি অভ্যাস হয়ে গেছে।