somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***এই SMS টি আপনার পরিচিত দশ জনকে পাঠান...../ এই চিঠিটি অমুকের স্বপ্নে প্রাপ্ত, ফটোকপি করে একশত জনকে বিলি করুন.....এগুলোর কোন ভিত্তি নেই!***

৩১ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
প্রথমত, প্রায়ই কিছু SMS এর কথা শুনতে পাই/দেখি যা সত্য/মিথ্যা মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় এরপর ৭/১০ জনকে পাঠতে বলা হয় আর এটাও বলা হয় যে এতে কিছুদিনের কিংবা দুইদিনের মধ্যে সে সুসংবাদ শুনবে কিংবা তার উন্নতি হবে। দ্বীন সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা না থাকার কারণে অনেকে আবেগ প্রবন হয়ে সরল বিশ্বাসে SMS গুলো পাঠিয়ে থাকেন।

দ্বিতীয়ত, প্রায়ই জুমা’র সালাত পড়ে বের হতে না হতেই হাতে নানান প্রকারের কাগজ এসে পড়ে। এরমধ্যে অমুক ব্যক্তি মদীনা শরীফ হতে স্বপ্ন দেখেছেন.....এরপর সেখানে কিছু কল্পনা প্রসূত আমল করার কথা লেখা থাকে এরপর বলা হয় ১০০ জনকে তা ফটোকপি করে দিলে উন্নতি হবে আর অবিশ্বাস করলে নানা ধরণের বিপদ হবে লেখা থাকে। সরল বিশ্বাসে অনেকেই এই কাজটি করে থাকেন কল্যাণ লাভের আশায়।

এক কথায় এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। আমাদের জীবনে কল্যাণ কিংবা অকল্যাণ কিছু ভুয়া/বানোয়াট SMS আর চিঠি ফটোকপি করে বিলি করার সাথে বিন্দু মাত্র সম্পৃক্ত নয়। বরং এগুলোতে বিশ্বাস করলে নিম্নোক্ত ভয়ংকর বিষয়গুলো সাব্যস্ত করা হয়ে থাকে যা স্পষ্টত কুফরি।

১. ভাগ্য গণনায় বিশ্বাস স্থাপন করা হয়, যা স্পষ্টত কুফরি। SMS আর চিঠি অন্যকে ছড়িয়ে দেয়ার ফলে ভাগ্যের উন্নতি হবে না দিলে খারাপ হবে এরকম নিশ্চিত জ্ঞান সেই ব্যক্তিকে কে দিয়েছে? আল্লাহ তা’আলা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন-
وَعِنْدَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لا يَعْلَمُهَا إِلا هُوَ
অর্থঃ আর তাঁর কাছে রয়েছে গায়েবের চাবিসমূহ, তিনি ছাড়া এ বিষয়ে কেউ জানে না। (সূরা আনআমঃ ৫৯)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এমন স্পষ্ট করে ভবিষ্যতের তথ্য ওহী ব্যতীত জানতেন না। কুরআনের বর্ণিত হয়েছে-
قُلْ لا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلا ضَرًّا إِلا مَا شَاءَ اللَّهُ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَا إِلا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
অর্থঃ বল, ‘আমি আমার নিজের কোন উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতা রাখি না, তবে আল্লাহ যা চান। আর আমি যদি গায়েব জানতাম তাহলে অধিক কল্যাণ লাভ করতাম এবং আমাকে কোন ক্ষতি স্পর্শ করত না। আমিতো একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা এমন কওমের জন্য, যারা বিশ্বাস করে’। (সূরা আরাফঃ ১৮৮)

২. ইসলাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশাতেই পরিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিদায় হজ্জের ভাষণের পরে নিম্নোক্ত আয়াতটি নাযিল হয়-
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإسْلامَ دِينًا
অর্থঃ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে। (সূরা মায়িদাঃ ০৩)

দীন পূর্ণ এবং নিয়ামত সম্পূর্ণ অর্থাৎ যাবতীয় কল্যাণ লাভের পথ, আল্লাহ তা’আলাকে সন্তুষ্ট করার পন্থা, ইবাদতের নিয়ম কানুন পরিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর আর কিছু নতুন করে বাড়ানোর নেই কিংবা কমানোর নেই।

SMS এবং চিঠিগুলোতে নতুন পদ্ধতীর ইবাদতের কথা লেখা থাকে যার ফলে কল্যাণ লাভ কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে জান্নাত লাভের কথা পর্যন্ত লেখা থাকে। কেউ যদি এইগুলোতে বিশ্বাস করে তাহলে তার মানে হবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট ঠিক মত দাওয়াত পৌছাননি! (নাউযুবিল্লাহ, আল্লাহ তা’আলার নিকট এরকম গোমরাহী আর মূর্খতা থেকে আশ্রয় চাইছি)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
“আমি তোমাদের যা কিছু করতে বলেছি সেই সব ব্যতীত আর কোন কিছুই তোমাদের জান্নাতের নিকটবর্তী করবে না, এবং যে সকল বিষয়ে সতর্ক করেছি সেগুলো ব্যতীত কোন কিছুই তোমাদের জাহান্নামের নিকটবর্তী করবে না”। (মুসনাদে আস শাফেয়ীই এবং অন্যান্য)
কাজেই এরপর নতুন আর কোন পদ্ধতী বের করার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন নেই।

ইনশাল্লাহ বিষয়টি আমাদের মুসলিম ভাই/বোনদের বোধগম্য হবে। আসুন আমারা নিজেরা সতর্ক হই আর অপরকে সতর্ক করি। আল্লাহ তা’আলা আমাদের হক কথা বুঝার তৌফিক দান করুন, আমীন।
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×