somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামায পড়া ব্যতীত কি রোযা রাখা যায়?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরুতেই মহান আল্লাহর প্রশংশা ঘোষণা করছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বান্দাহ ও রাসূল। মহান আল্লাহ যদি কাউকে কল্যাণ দান করতে চান তাহলে কেউ বাধা দিতে পারে না এবং মহান আল্লাহ যদি কাউকে শাস্তি দিতে চান তাহলে কেউ তাকে বাঁচাতে পারে না। সকল ভুল ভ্রান্তির জন্য মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রর্থনা করছি। আমীন।

এই লেখাটি মূল লেখার বঙ্গানুবাদ। রমাদান মাসে বিষয়টি মুসলমান ভাই-বোনদের জানা উচিত তাই বোঝার সুবিধার্থে মূল ইংরেজী থেকে বঙ্গানুবাদ করলাম, যদিও আমি বঙ্গানুবাদে অতটা পারদর্শী নই।
মূল লেখাটি পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য।

যে নামায পড়ে না তার কোন ভাল কাজই মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না, হোক সেটা যাকাত, রোযা, হজ্জ্ব অথবা অন্যকোন ইবাদত।

আল-বুখারী (৫২০) বুরাইদাহ কর্তৃক বর্ণিত: আল্লাহর রাসূল (স) বলেছেন: “যে ব্যক্তি আছর নামায পড়লো না, তার ভালকাজ গুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে।”

“তার ভালকাজ গুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে” দ্বারা বুঝাচ্ছে বৈধ বলে বিবেচিত হবে না এবং এই ভাল কাজগুলো দ্বারা সে লাভবান হবে না। এই হাদীস দ্বারা বুঝাচ্ছে, যে ব্যক্তি নামায পড়ে না তার কোন ভাল কাজই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং যে নামায পড়বে না সে তার ভাল কাজের বিনিময়ে কোন সওয়াব পাবে না এবং তার ভাল কাজগুলো মহান আল্লাহর নিকট গ্রহনযোগ্য হবে না।

এই হাদীস থেকে আমরা দুই ধরণের মানুষের বিষয়ে অবগত হচ্ছি তারা হলো: যারা একেবারেই নামায পড়ে না ও তাদের সমস্ত ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে এবং যারা কোন এক নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ওয়াক্তের নামায পরিত্যাগ করে যার ফলে ঐদিনের সকল ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হয়। সুতরাং ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হয় যে একেবারেই নামায পড়ে না তার জন্য এবং যে কোন এক নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ওয়াক্তের নামায পড়ে না তার জন্যও।

শায়েখ ইবনে উসাইমিন কে যারা নামায পড়ে না কিন্তু রোযা রাখে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল (ফাতওয়া আল-সিয়াম পৃষ্ঠা নং-৮৭)।

তিনি উত্তরে বলেছিলেন:
যে ব্যক্তি নামায পড়ে না কিন্তু রোযা রাখে তার রোযাই হবে না এবং গ্রহনযোগ্য হবে না কারণ যে নামায পড়ে না সে কাফির এবং একজন অবিশ্বাসী; এই বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন:
“অবশ্য তারা যদি তওবা করে ( শিরকী কার্যকলাপ পরিত্যাগ করে এবং ইসলামী একত্ববাদের দিকে ফিরে আসে), নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই। আর আমি বিধান সমূহ জ্ঞানী লোকদের জন্য সবিস্তারে বর্ণনা করে থাকি”। (সূরা আত-তওবা:১১)

এবং মহানবী (স) বলেছেন: “একজন মানুষ এবং শিরকের মধ্যে কুফর প্রকাশিত হয় তার নামায ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে” মুসলিম কর্তৃক বণিত,৮২। এবং তিনি (স) বলেছেন: “আমাদের দলভুক্ত হতে নামায তাদের আলাদা করে দেয় যারা নামায ছেড়ে দেয়, যারাই নামায ছেড়ে দিবে তারাই কাফির”। আত-তিরমিযী কর্তৃক বর্ণিত,২৬১; আলবানী কর্তৃক সহিহ হাদীস রূপে বর্ণিত।

অধিকাংশ সাহাবীই এই বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবন শাকীক (র) যিনি একজন বিখ্যাত তাবেঈন ছিলেন, বলেছেন: রাসূল (স) এর সাহবীরা নামায ব্যতীত অন্য কোন ইবাদত ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাউকে কাফির বলেননি। এর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, যদি কেউ নামায ব্যতীত রোযা রাখে তাহলে তা বাতিল বলে বিবেচিত হবে এবং গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এই রোযা কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে তার কোন কাজেই আসবে না। আমরা নামায পরিত্যাগকারীকে বলতে চাই: আগে নামায পড়ুন তারপর রোযা রাখুন, কারণ আপনি যদি রোযা রাখেন কিন্তু নামায না পড়েন তাহলে আপনার রোযা বাতিল বলে বিবেচিত হবে, কারণ কোন কাফির ব্যক্তির ইবাদত মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।

স্ট্যান্ডিং কমিটিকে (১০/১৪০) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: যদি কেউ শুধুমাত্র রমাদান মাসে রোযা এবং নামায পড়ার ইচ্ছা পোষণ করে এবং রমাদান মাস চলে যাওয়া মাত্র নামায ছেড়ে দেয় তাহলে কি তার রোযা গ্রহণযোগ্য হবে?

উত্তরে তারা বলেছিলেন:
নামায হচ্ছে ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে একটি এবং কালেমার সাক্ষ্য দেওয়ার পর নামায হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি হচ্ছে ফরজে আইন (অবশ্য কর্তব্য ইবাদত) এবং নামায পড়া অবশ্যকর্তব্য জেনেও যে নামায পড়বে না, অথবা অসতর্কতা ও অলসতার কারণে নামাজ পড়া ছেড়ে দিবে তাহলে সে একজন কাফির। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য যারা শুধুমাত্র রমাদান মাসে রোযা ও নামায পড়বে যার মানে হলো আল্লাহর সাথে প্রতারণা করা এবং এটি খুবই দূর্ভাগ্যজনক যে যারা শুধু রমাদান মাসেই আল্লাহকে স্মরণ করে থাকে। তাদের রোযা গ্রহণযোগ্য হবে না যদি তারা রমাদান মাস ব্যতীত অন্য সময় নামায না পড়ে, অধিকন্তু তাদের এই কার্যকলাপ বড় কুফরী(কুফরী আকবর) বলে বিবেচিত হবে যদিও তারা স্বীকার করে নামায পড়া অত্যাবশকীয়, এটাই হচ্ছে দুই দল ইসলামিক স্কলারদের মতামত।



৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×