শহীদ রুমী স্কোয়াডের অনশনের ৬২ ঘন্টা পার হল । এই ৬২ ঘন্টার মধ্যে আমরা অনেক অনেক বাধার সম্মুখিন হয়েছি ,হচ্ছি। আমাদের নিয়ে চালানো হচ্ছে নানা রকম অপপ্রচার , আমাদের অনশন মুল্যহীন , আমরা নিজেদের দল দার করানোর জন্য এমন অনশন করছি , আমাদের ভেতর রয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনীর ছেলে ,আমাদের খবর এখনো কোন নিউজে হেডলাইন হয়ে আসে নাই ইত্যাদি ইত্যাদি ।
আমাদের অনশনকে প্রত্যাহার করার জন্যও বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে । কিন্তু আমাদের দলের রুমীরা নির্ভিক । তারা সকল বাধাকে উপেক্ষা করে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছে ।
অহিংসভাবে সর্বোচ্চ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ১৭ জন রুমী । গত ২৬শে মার্চ ছিল জামায়াত -শিবিরের রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করার আল্টিমেটামের শেষ দিন । ২৫শে মার্চ সকাল বেলাতেই আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখে ছিলাম যদি ২৬ তারিখে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে আশানুরূপ কর্মসূচী না আসে আমরা নিজেরাই নিজেদের মৃত্যু হাতে তুলে নিব ।
মাথার উপরে সূর্যের প্রখর রোদ , ভ্যাপসা গরম , ভলান্টিয়ারের সঙ্কট , তার উপর সাংবাদিক দের সাথে কথা বলা । সবই করছি আমরা নিজেরা ।
দেশের প্রতি যত টুকু ভালোবাসা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করতে গিয়েছিল একাত্তরে ;যার পুরস্কার হিসেবে ছিল কেবল স্বাধীনতা । আজকে আমাদের রুমীরাও দেশের প্রতি সেই তীব্র ভালোবাসা অনুভব করে নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে , ভার্চুয়াল ভালোবাসাকে পিছনে ফেলে এসে , ভবিষ্যতের চিন্তা না করে , নিতসার্থ ভাবে আমরণ অণশণে বসেছেন ।
দীর্ঘ তিন মাস যাবত গণজাগরন মঞ্চের প্রতিটি ডাকে আমরা এক থেকেছি এখনো আছি । খেয়ে না খেয়ে আমরা গত ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে আমরা সংগ্রাম করে আসছি , শ্লোগান দিয়ে আসছি , বিভিন্ন স্থানে জনমত গড়তে অনেক অনেক ছুটে বেরিয়েছি । তাই আমাদের শরীরের অবস্থা কেমন তা যে কেউ আন্দাজ করতে পারেন । সেই ভেঙ্গে পরা শরীর নিয়েই ২৭ তারিখ রাত সারে ১০ টা থেকে আবার অনশন শুরু করে দেয় রুমী স্কোয়াডের সাত তরুণ যোদ্ধা ।
আমরা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দুয়ারে এগিয়ে যাচ্ছি । জানিনা আমাদের দাবী কবে মেনে নিবে সরকার পক্ষের লোকেরা । এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে সরকার পক্ষের কোন প্রতিনিধি আসে নাই দেখা করতে । কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে অনড় । আমাদের কাবু করতে পারবে না কোন অশুভ শক্তি । ভেঙ্গে পরা শরীর নিয়ে অনশনে বসে যেতে আমরা পিছপা হইনি । তেমনি ভাবে এখন যেমন আমাদের অনশনকারীরা হাসপাতালের বেডে জায়গা করে নিচ্ছেন তাতেও আমরা ভয় পাচ্ছি না ।
"কোন দেশই জীবিত যোদ্ধা চায় না " শহীদ রুমী'র এই কথা মাথায় রেখেই আমরা এই যুদ্ধে নেমেছি ।
আমাদের ভেতর কয়েকজনের অবস্থা খুব বেগতিক । মানিক সুত্রধর ইতোমধ্যে বার্ডেম হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন । বাকি ছেলে গুলোও ইতিমধ্যে নেতিয়ে পরেছে ।
আমাদের শরীরের শক্তি ধীরে ধীরে কমে আসছে আর মনের শক্তি কেবল বেরেই চলেছে । আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছে অনেক অনেক সাধারণ মানুষ আর অনেক অনেক সংগঠন । আজ রাত ১২টা থেকে কাল রাত ১২টা পর্যন্ত ২৮টি সংগঠন একত্রিত ভাবে আমাদের সাথে অনশনে যোগদেবেন বলে কথা দিয়েছেন ।