৩য় পর্ব
কে.এল.সি.সি তো দেখা শেষ, বাসায় ফিরে নিশ্চই কাল গ্যান্টিং হাইল্যান্ড যাওয়ার কথা ভাবছেন?? উত্তম চিন্তা, কেএল শহরের কাছাকাছি ঘুরতে যাওয়ার বেস্ট প্লেস বলা যায়। সুউচ্ছ পাহাড়ের চূড়ায় (১৭৬০ মিঃ উচুতে) অবস্থিত ছোট্র একটা শহর বলা যায়, আসলে যেটা মূলত কয়েকটা রিসোর্ট আর হোটেল, থিম পার্ক, ক্যাসিনো এর ধারকমাত্র। গ্যান্টিং হাইল্যান্ড মূলত তৈরী করা হয়েছে পর্যটন শিল্প হিসেবে, তাই আপনি গ্যান্টিং হাইল্যান্ড পৈছাতে পারেন কোন রকম ঝক্কি ঝামেলা ছাড়াই। তারপরও আমি বলছি নতুন ভ্রমনকারীরা কিভাবে অল্প খরচে গ্যান্টিং হাইল্যান্ড ঘুরে আসতে পারেন।
প্রথমে সকাল-সকাল নাস্তা সেরে সোজা চলে যান এল.এর.টি ষ্টেশন, যেখানেই থাকুন এল.আর.টিতে চড়ে চলে আসুন কে.এল. সেন্ট্রাল ষ্টেশন। কারন গ্যান্টিং হাইল্যান্ড যাওয়ার বাস পাবেন এখান থেকেই (যদিও তিতিওয়ান্সা ও অন্যান্য বাস ষ্টেশন থেকেও বাস পাওয়া যায়, তথাপি নতুনদের জন্য কে.এল সেন্ট্রালই সবচেয়ে সহজ এবং কম ঝামেলাপূর্ণ।) এবার টিকিট কেটে সোজা উঠে পড়ুন গ্যান্টিং হাইল্যান্ড এর বাসে (৬.৬০-৭.৫০ রিংগিত), এক ঘন্টার কিছু বেশী সময় আকা-বাকা পাহাড়ী রাস্তায় ঘুরতে-ঘুরতে আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যাতে থাকুন গ্যান্টিং হাইল্যান্ড এর পথে, এরপর বাস এসে থামবে ক্যাবল কার ষ্টেশনে, যেটা গ্যান্টিং স্কাইওয়ে নামে পরিচিত। আস্তে আস্তে লাইন ধরে এগিয়ে গিয়ে ক্যাবল কারের টিকিট কেটে ফেলুন (১ ওয়ে টিকিট কাটলে ৪ রিংগিত, আর রিটার্ন টিকিট কাটলে ৭ রিংগিত), এবার আপনাকে দড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে টেনে উপরে ওঠান হবে, ৩.৩৮ কিঃমিঃ এই দড়ি বেয়ে আপনাকে ওপরে উঠতে ১০-১২ মিনিট সময় লাগতে পারে, এই সময়টাতে আপনি নানা রকমের জীব-জন্তু এবং হরেক রকমের গাছ-গাছালি দেখতে দেখতে উপরে উঠতে থাকুন।
একে বারে উপরে উঠে গেলে সেখানে আছে ইনডোর এবং আউটডোর পার্ক, ইনডোর পার্ক খোলা থাকে সকাল ৮ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত, আর আউটডোর পার্ক খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে রাতের ১০টা পর্যন্ত (ছুটির দিনে ৮টা -৮টা) এই পার্কগুলোতে আছে শুকনা আর ভেজা মিলিয়ে বেশ কয়েকটা রাইড (২০-২২টা), রাইডগুলোর উপর নির্ভর করে এর টিকিট ১০,১৫,২০ রিংগিত দাম হতে পারে।
এছাড়াই ফার্স্ট ওয়াল্ড প্লাজায় রয়েছে সুদৃশ্য শপিং মল, ইচ্ছা করলে টুকিটাকি কিনতেও পারেন (তবে দাম মাশাল্লাহ গ্যন্টিং এর মতই উচু),
রয়েছে ক্যসিনো, এই বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, হরেক রকমের খেলা আছে, এখানে প্রতিদিনই অনেকে রাজা-উজির বনছে, আবার অনেক রাজা-উজির মরছে, ঢুকতে চাইলে ঢুকতে পারেন, কোন টিকিট লাগেনা, ফ্রি এন্ট্রি, তবে আপনাকে অবশ্যই লংস্লিভ শার্ট পরা থাকতে হবে, আর স্যান্ডেল পরেতো ঢোকা যাবেই না বয়সও ২১ উর্ধ হওয়া চাই, এখানে মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, তবে সেটা লোকাল মুসলিমদের জন্য, ফরিনার এই আওতায় নাই।
তবে গ্যান্টিং হাইল্যান্ডএর আসল মজা পেতে হলে বেরিয়ে আসুন ফার্ষ্ট ওয়াল্ডের বাইরে, কনকনে ঠান্ডা, অনেকটা দার্জিলিং বা ভূটানে যেই ঠান্ডা, সেটা। অন্ত্যত এই জায়গার জন্য আপনাকে কষ্ট করে গরম কাপড় নিয়ে আসতে হবে। পূবদিকে পাথরের মত কিছু জায়গা রয়েছে, ওটার পাশে দাড়িয়ে আশপাশের এবং নিচের ভাল ভিউ দেখা যায়। আর ঐ পাথেরের উপর বসে একটা সিগারেট ধরালে আরো ভালো লাগবে (ব্যাক্তিগত মতামত)।
খাওয়া-দাওয়ার জন্য এখানে রয়েছে হরেক রকমের খাবার, মালয়ী, চাইনীজ, ওয়েষ্টার্ন খাবার। রূচী এবং সাধ্যমত খেয়ে নিন, খাওয়ার পর আবার ঘুরতে থাকুন, দেখতে থাকুন, ছবি তুলতে থাকুন
সামনে আসছে আরো..............
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:১৭