রাজধানী কে.এল এ ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছেন নিশ্চই, বাস সোজা নিয়ে যাবে আপনাকে কে.এল সেন্ট্রাল। সেখানেই ঢেলে দেবে আপনার ব্যাগ-পত্র সহ আপনাকে। যদিও এখানে বাংলাদেশের মত ট্যাক্সি-ট্যাক্সি করে লোকজন চিৎকার করেনা, কারন এখানে আছে ফিক্সড ট্যাক্সি বুথ, সেখানে আপনি সরাসরি পে করে টিকেট নিয়ে নিবেন, তারপর ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারকে টিকেট দিয়ে দিবেন, সে আপনাকে গন্ত্যব্যে পৌছে দেবে। তারপরও কিছু দালাল যে নেই, তা কিন্তু না, এরা কোন রেজিস্টারড কোম্পানির আন্ডারে না, নিজেদের ব্যাভ্হ্রত গাড়ী ট্যাক্সি হিসেবে চালায়, এদের কারো গাড়ীতে উঠেছেন তো....(কতৃপক্ষ দায়ী নয়)। যাই হোক টাকা গন্গার জলে ফেলে লাভ নেই, তাই ট্যাক্সিতেও ওঠার দরকার নেই আপাতত, ডানে-বায়ে তাকিয়ে দেখুন, লিফট আছে, লিফটে চড়ে ঢুকে পড়ুন সেন্ট্রালের ভিতর। এবার একটু সামনে এগোলেই পেয়ে যাবেন টিকেট কাউন্টার (ট্রনের)। এখানে অনেকগুলো টিকেট কাউন্টার আছে, কারন রয়েছে কয়েক রকমের ট্রেন সার্ভিস। মোনোরেইল (২ কোচ বিশেষ, বিশেষ করে স্টার হিল এবং বুকিত বিনটাং এরিয়ায় চলে), এল.আর.টি (৪-৫ টা পর্যন্ত কোচ হতে পারে, মোটামুটি এতে চড়ে পুরো কে.এল শহর চষে ফেলা যাবে, প্রায় গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় এর স্টেষন আছে), কে.টি.এম কম্যুটার (পুরো মালয়েশিয়া, এমনকি ব্যাংকক,সিংগাপোর পর্যন্ত চড়া যাবে), আপনি খুজে দেখুন এল.আর.টি এর টিকেট কোথায় পাওয়া যাবে, আর খুজে না পেলে গ্রাউন্ড ফ্লোরে ইনফো কাউন্টারে জিগেস করুন। এবার টিকেট কেটে নিন, "পাসার সেনি" (১.০০ রিংগিত), অথবা "মসজিদ জামেক" (১.৩০ রিংগিত)। দুটো স্টেষনই কাছাকাছি। এবার স্টেষন থেকে বেরিয়ে নেমে পড়ুন রাস্তায়, আর খুজতে থাকুন থাকার জায়গা, পাসার সেনি এলাকায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে মধ্যম মানের বাজেট হোটেল। মসজিদ জামেক এলাকাটা একটু ঘুরলে আশেপাশে পাবেন উন্নত মানের কিছু হোটেল, দুটো জায়গাতেই আপনি পাবেন কে.এল এর অন্যান্য জায়গা থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামের হোটেল। মোটামুটি ৫০ থেকে ১০০ রিংগিতের মধ্যে পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দসই হোটেল (এর চেয়ে কম দামের হোটেল ও আছে, তবে ওগুলোতে না যাওয়াই উত্তম, সর্ব নিম্ন ৪০ রিংগিতের নিচে হোটেলে না থাকাটাই ভালো, তবে কিছু-কিছু হোটেলে ১২ মাসই প্রমোশন থাকে, ২৮ অথবা ৩৮ রিংগিতে পেলে জলদি উঠে যাবেন)। এবার চেক ইন করে হাত মুখ ধুয়ে নিন, এটা শীতের দেশ নয়, গোসল করলেও করতে পারেন। এবার মোবাইলে আর শরীরে চার্জ আছে কিনা দেখে নিন, সাথে বাচ্চা-কাচ্চা থাকলে ওটা নিশ্চই নেই, তাই কিছুক্ষন রেস্ট করুন। এবার নিচে গিয়ে খাবারের সন্ধান করুন। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান, ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, মালেয় এবং মামাক(ইন্ডিয়ান মুসলিম), টমইয়াম (মূলত থাইল্যন্ডের বাবুর্চী, অনেক সময় মালয়ীরা পরিচালনা করে, খাবার হালাল)। আপনি দেখে নিন আপনার কাছাকাছি কোন রেস্টোরেন্ট আছে? মামাক অথবা মালেয় বা টমইয়াম সী-ফুডের রেস্টোরেন্ট ঢুকে যেতে পারেন।, মেন্যু দেখে ভাল-মন্দ কিছু খেয়ে নিন (খাবারের বিষয়ে পরে আলাদা করে পোষ্ট দেব)। ততক্ষনে হয়ত অনেক রাত হয়ে গেছে, আর না হলে আশ-পাশটা ভালো করে ঘুরে দেকে নিয়ে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কারন সকাল-সকাল উঠে ছুটতে হবে কে.এল.সি.সি দেখার জন্য।
কে.এল.সি.সি দেখার জন্য আপনাকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে, কারন কে.এল.সি.সি স্কাইব্রীজ দেখার জন্য টিকেট পাওয়া যাবে সকাল ৮ থেকে ৯ টার ভেতর। আপনি ঘুম থেকে উঠে পাসার সেনি অথবা মাসজিদ জামেক এল.এর.টি স্টেষনে চলে যান, পাসার সেনি হলে স্টেষনের পাশেই রয়েছে রেপিড কে.এল বাস হাব। চাইলে ট্রেন অথবা বাস যেকোনটাতে উঠতে পারেন। এল.আর.টি ১.৬০ রিংগিত অথবা বাসে ১ রিংগিত টিকেট কেটে চলে যান কে.এল.সি.সি। সেখানে আপনি লাইনে দাড়িয়ে সংগ্রহ করে নিন আপনার কে.এল.সি.সি স্কাইব্রীজ (দুটি টাওয়ার সংযুক্তকারী ব্রীজ, যেটি রয়েছে ৪১ এবং ৪২ তলায়) টিকেট। টিকেট পাবেন ফ্রী, টিকিটের জন্য কোন পে করতে হবেনা। সকাল ৮ টা থেকে লাইনে থাকা প্রথম ১০০০ জনকে টিকিট দেওয়া হয়, তাই সকাল সকাল পৌছাটা উত্তম (সোমবার বন্ধ,)। এবার দশ মিনিটের জন্য আপনাকে কে.এল.সি.সি এর স্কাইব্রীজ থেকে ঘুরিয়া আনা হবে, ঘোরা শেষ, আবার কে.এল.সি.সির আশপাশটা ঘুরে দেখুন, ছবি তুলুন, তারপর সুরিয়া শপিং মল (দুই টাওয়ারের মাঝে) ঘুরে দেখতে থাকুন আর দেখতে থাকুন.............. আর মজা লুটতে থাকুন
মজাই মজা....... সামনে আছে আরো মজা
আপডেট /মার্চ ২০১১ : বর্তমান সময়ে আপনি কেএল সিসির স্কাইব্রীজ পর্যন্ত যেতে চাইলে ১০ রিংগিতের টিকিট কেটে নিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১১ সকাল ৭:১৮