প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক মালয়েশিয়া ভ্রমন করতে আসে, কেউ হয়ত বহুদিনের আকাংখিত স্বপ্নের টুইন টাওয়ার দেখতে, কেউ আসে নতুন বিয়ের ঝাল কাটাতে (হানিমুন), কেউ ভ্রমন নামক চুলকানীতে মলম লাগাতে, কেউ কেউ মুখ গম্ভীর করে বলে "মাইন্ড ফ্রেশ"। যাই হোক যে যাই বলুক, মূল কথা ভ্রমনতো করে। কিন্তু দুঃখ লাগে এক ব্যাগ টাকা খরচ করেও কেউ কেউ বাড়ী ফেরে মুখ কালো করে, অনেককেই বলতে শুনেছি, এত টাকা খরচ করলাম আসল জিনিসটাই দেখলাম না, সেই আসল জিনিষটা কি আমিও জানিনা, হয়ত যিনি বলছেন তিনি নিজেও জানেন না, জানবেন কি করে, টুইন টাওয়ার আর এদিক ওদিক হুস-হাস করে ছুটোছুটি ছাড়া কিছুইতো করননি, অথচ মালয়েশিয়ার ৯৫% সৌন্দর্যই অনেক পর্যটকের দেখা হয়ে উঠেনা
তাই ভাবলাম নিজের অভিগ্গতা থেকে কিছু যদি ব্লগারদের সাথে শেয়ার করি তো মন্দ কি? কারন অনেক ব্লগারকেই আমি মালয়েশিয়া ভ্রমন করতে শুনেছি, অনেকে আবার প্ল্যান করছেন ভ্রমণের। মুলত তাদের ভ্রমন যাতে সহজ এবং সাশ্রয়ী হয় সেদিক বিবেচনা করেই আমার এই চেষ্টা। এটাকে ভ্রমন টিপস হিসেবেও ধরে নিতে পারেন। আশা করি আমার এই ধারাবাহিক পর্ব পুরোটা পড়লে আপনার আর মালয়েশিয়া ভ্রমনের ঝাক্কি ঝামলে পোহাতে হবেনা, সাথে ট্র্যাভেল এজেন্সির মোটা অংকের কমিশনটাও বাচাতে পারবেন।
যেকোন ভ্রমেনর প্রথম পদক্ষেপ ভ্রমন-প্রস্তুতি, এবং বাজেট নির্ধারন। আর এগ্জেক্ট বাজেট মানে চুন-চুন হিসাব করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়, মোটামুটি কম-বেশী কত হতে পারে তা এমন :
ভ্রমনকারী যদি ১ জন হয় : ৩০-৩৫ হাজার টাকা (৫দিন থেকে ৭ দিন )
ভ্রমনকারী যদি ২ (দম্পতি) জন হয় : ৫০-৫৫ হাজার টাকা (বউয়ের যদি টুইন টাওয়ার কেনার ইচ্ছা না থাকে)
আর যদি আন্ডা-বাচ্ছা থাকে তবে সেটা বুঝে নিন নিজ থেকে। বাচ্ছার কান মলে, বা চোখ রান্গিয়ে কম খরচ করবেন, নাকি বাচ্চাকে কাধে তুলে হাটবেন সেটা আপনার বিবেচ্য। উপরিউক্ত খরচ প্লেন, থাকা-খাওয়া, ট্রানসপোর্টেশান খরচ। পুরো খরচটাই সম্ভাব্য। এর চেয়ে কম ও হতে পারে, আবার কিছু বেশীও হতে পারে। সেটা আপনার খরচের উপর নির্ভর করবে।
এবার প্রথমেই যা করতে হবে তা হচ্ছে ভিসা, মালয়েশিয়ার ভিসা পেতে অনেক দেশের তুলনায় অনেক সহজ। আপনাকে যা করতে হবে তা হল প্রথমে ভিসার জন্য যেসব রিকোয়ারমেন্ট দরকার, তা যোগাড় করা,
এসবের মধ্যে আপনার গত তিন মাসের ব্যাংক স্ট্যটমেন্ট, (স্টুডেন্ট হলে ব্যাংকে ৫০-৬০ হাজার টাকা রেখে একটা স্ট্যটমেন্ট নিয়ে নিন)। যাওয়া- আসার প্লেন টিকেট (বিলাসি না হলে এয়ার এশিয়ার টিকেট কাটতে পারেন, রিটার্ন টিকেট ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে, অনেক সময় প্রোমোশনাল প্রাইস পেলে ৬-৮ হাজার টাকায় ও পেতে পারেন,প্লেনের ভেতর ফ্রী কোন খাবার পাবেন না, যেটা পাবেন সেটা খেতে হলে এক্সট্রা পে করতে হবে। টাকা বাচাতে চাইলে গুড়-মুড়ি, আর একটা ড্রিংকস নিয়ে উঠতে পারেন , টিকিটের জন্য এয়ার এশিয়ার ওয়েব সাইটে নিয়মিত চোখ রাখতে পারেন, আর সাছ্যন্দে যেতে চাইলে সবচে ভাল সিংগাপোর এয়ারনাইন্স। এক্ষেত্রে বাজেট হবে দ্বীগুন।), পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজ ছবি। এসব এক করে ভিসা ফি ৩০০ টাকা সহ গুলশানস্থ মালয়েশিয়ান হাই কমিশনে সাবমিট করুন, সবকিছু ঠিক-ঠাক থাকলে ৩ (তিন কার্যকরী দিবস) দিন পর গিয়ে ভিসা নিয়ে আসুন।
সাথে থাকুন, মজা আছে সামনে..............