এখনও পুরোপুরি কেটে যায়নি। এখনও বেশ খানিকটা বাকী আছে ঈদের। কিন্তু প্রচণ্ড বিরক্ত নিয়ে ওয়েট করছি দিনটা কখন শেষ হবে?....
সকালে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরেছি। গোসল করেছি, নামাজ পড়েছি...কিন্তু সবকিছুতেই মেজাজা হাপা...কারণ একটাই মানুষতো যন্ত্র না। তাই একটি রাত মোটেও না ঘুমিয়ে সে কীভাবে স্বাভাবিক থাকে?.... নিদ্রাহীনতার বিষময় জ্বালা সারাদিন ভোগ করেও শেষ হয়নি। ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে প্রচণ্ড ঘুমে ঢলতে ঢলতে ইমাম সাহেব-খতিবকে আচ্ছামতো গালাগাল করেছি নি:শব্দে।... বাসায় ফিরে রাগটা আরও এক মাত্রা বাড়িয়ে ঝারলাম বউর ওপর। তার অপরাধ? সে চুলায় রান্না রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। রাতে তারও ঘুম হয়নি। না, চাঁনরাতে যে আনন্দে মানুষ ঘুমায় না তার ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটেনি। তার কেটেছে ভয়াবহ এক আতঙ্কে! একেতো নতুন বাসা, তারওপর পুরো বড়িটাতে মাত্র দুটো ফ্যামিলি আর দারোয়ান। তবে এসবে সে খুব একটা ভয় পাওয়ার সুযোগ পায়নি। সে ছিল অন্য এক আতঙ্কে।....
বাবু ওর গলার চেইনটা নিজের গলায় দেয় শখ করে। এরপর কখন সেটা খুলে ফেলে দেয়, কোথায় ফেলে দেয় তার কিছুই সে জানে না। গায়ে ছিল যে শার্টটা... সেটাও বেসিনে ধুয়ে পরিষ্কার করেছে ছেলে নিজেই। তার মানে চেইনটা বেসিনে পরে গেছে! প্রায় ১৫হাজার টাকা মূল্যের একখানা অলঙ্কার এভাবে হারিয়ে যাবে কেউ কি তা মেনে নিতে পারে?...সারারাত সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য সকলস্থানে তল্লাশি চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ভেঙে পরে...শেষে মান্নত করে....এবং যে মোড়াটা এতবার পরীক্ষা করা হলো তাতেই পাওয়া গেল চেইন টা?....আনন্দে মনটা ভরে গেছে...কিন্তু ততক্ষণে রাত শেষ।
আমি অফিস থেকে বাসায় ফিরে যখন উল্টো রাগারাগি শুরু করলাম নিজের যন্ত্রণা কমাতে তখন তার কীইবা করার ছিল আর?...
বাসায় যাদের আসার কথা ছিল, যাদের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল- সব ক্যানসেল! কিন্তু এমনতো হওয়ার কথা ছিল না!...
মঙ্গলবার আমার নাইট, বুধবার ঈদ সেদিন আমার ছুটি, পরদিনও আমার ছুটি...আশা করেছিলাম দারুণ একটা সুযোগ বুঝি পেলাম! কিন্তু না, এক সহকর্মীর চক্রান্তে আমার সে স্বপ্ন ছারখার হয়ে গেল উল্টো যোগ হলো নাইটের পরদিন ফের ডিউটি....আর তারই ঝাল সামলাতে হিমশিম খেতে খেতে কোনওরকম কষ্টে-সৃষ্টে দিনটি অতিবাহিত হলো....হে আল্লাহ যারা আমার জীবন থেকে এমন একটি দিন চক্রান্ত করে কেড়ে নিল তুমি তাদের কাছ থেকে এরকম ১২টি দিন কেড়ে নিও....