রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে । আপনার প্রিয় চরিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখে নিন আপনি কোন শ্রেণীর কনজ্যুমার বা ভোক্তা ।
গল্পটি খুবই সিম্পল । গল্পে বর্ণিত প্রত্যেকটি চরিত্র মনযোগ দিয়ে খেয়াল করবেন ।
বাবা তার সিদ্ধান্তে অটল । মেয়ের ভবিষ্যতের প্রশ্নে প্রয়োজনে আরো কঠোর হবার হুমকি দিলেন । তার মতে এইরকম পাত্র ফিরিয়ে দেয়া বোকামি । আর যে দিনকাল পড়েছে, উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয় ।
মেয়ে লামিয়া কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নেবে না । জিসান ছাড়া আর কাউকে সে বিয়ে করবে না । কিন্তু লামিয়া বুঝে গেছে বাবাকে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব নয় । তাই লামিয়া কাউকে কিছু না বলে এক কাপড়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসে ।
বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমেই প্রেমিক জিসানকে ফোন দেয় । জিসান জানায় সে জিম করছে । লামিয়া একটা রিক্সা নিয়ে জিমনেসিয়ামে চলে আসে । সব শুনে জিসান খুব অবাক হয়! তারপর জানিয়ে দেয় বিয়ে করার জন্য এই মূহুর্তে সে প্রস্তত নয়, লামিয়া যেন বাসায় ফিরে যায় ।
জিসানের ব্যবহারে লামিয়া খুব কষ্ট পায় । কিন্তু এই অবস্থায় কি করা যায় তা ভেবে পায় না । ভাবতে ভাবতে লামিয়ার মনে হলো বেঁচে থেকে কি হবে? তাই সে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় । উঁচু পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহ্যার করে সে জিসানের উপর রাগ মেটাতে চায় ।
লামিয়া পাহাড়ের দিকে যেতে থাকে । শহর ছাড়িয়ে একটা ঘন জঙ্গল আছে । সেই জঙ্গল শেষ হয়েছে একটা নদীর কাছে । নদীটি পেরিয়ে তবেই পাহাড়ে উঠতে হয় ।
গা ছমছম করা বিস্তৃত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে লামিয়া একা হেটে চলেছে । যেতে যেতে পথে হঠাৎ তার সামনে একটা বাঘ এসে দাঁড়ায় এবং তাকে খেতে উদ্ধত হয় । লামিয়া তখন বাঘের কাছে কাকুতি মিনতি করে, তার দুঃখের কথা শুনে বাঘ মামা যেন তাকে খায় ।
লামিয়া তার বাবার জোড় করে বিয়ে দেয়া, তার প্রেমিকের ফিরিয়ে দেয়া এবং আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পাহাড়ে যাওয়ার ঘটনা বাঘমামা কে জানায় । মানব তরুনীর দুঃখের কথা শুনে বাঘমামা'র মন গলে যায় এবং না খেয়ে তাকে ছেড়ে দেয় ।
লামিয়া দ্রুত হেটে জঙ্গল পার হয়ে নদীর কাছে পৌছায় । সেখানে অপেক্ষমান খেয়া নৌকার মাঝি কে সে সব খুলে বলে এবং তাকে নদী পার করে দিতে অনুরোধ জানায় । সব শুনে মাঝি তার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে । তবে মাঝি এটাও জানায় টাকা ছাড়া সে নদী পার করে দিতে পারবে না । কিন্তু লামিয়ার সাথে কোন টাকাপয়সা ছিল না । অগত্যা লামিয়া প্রিয় দুটো দুল খুলে মাঝিকে দেয় এবং মাঝি তাকে নদীর ওপারে নিয়ে যায় ।
নদী পার হয়ে লামিয়া দ্রুত পাহাড়ে উঠতে থাকে এবং সবচেয়ে উঁচু জায়গাটিকে আত্মহত্যার জন্য নির্বাচন করে । সেখানে দাঁড়িয়ে সে হাত দুটো বুকের উপর আনে এবং চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে থাকে । তারপর দুহাত প্রসারিত করে নিচে ঝাঁপ দিতে যায় । কিন্তু শেষ মূহুর্তে হঠাৎ পেছন থেকে একজন এসে তার হাত ধরে ফেলে, লামিয়া আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হয় ।
বাঁচিয়ে দেয়া মানুষটিকে দেখে লামিয়া অবাক হয়! সে যে তার ছোট বেলার প্রিয় বন্ধু ইনান! ইনান কে লামিয়া তার দুঃখের কথা খুলে বলে । সব শুনে ইনানও খুব দুঃখ পায় এবং জানায়, লামিয়ার সম্মতি থাকলে সে সারাজীবন লামিয়ার পাশে থাকতে চায় ।
..........................................................................
গল্প এখানেই শেষ । এই গল্পে অনেকগুলো চরিত্রের সাথে আপনাদের পরিচয় হয়েছে । এদের মাঝে কোন চরিত্রটি আপনার বেশি ভালো লেগেছে তা মন্তব্যের ঘরে জানাবেন । উল্লেখ্য, প্রতিটা চরিত্রের আচরণের পেছনে কিছু লজিক ছিল, তাই আপনার প্রিয় চরিত্রেটির সাথে আপনার আত্মপরিচয় লুকিয়ে থাকতে পারে ।
আপনার প্রিয় চরিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখে নিন আপনি কোন শ্রেণীর কনজ্যুমার বা ভোক্তা,
বাবাঃ রেশনাল বা বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন ভোক্তা ।
প্রেমিকা বা লামিয়াঃ ইমোশনাল বা আবেগী ভোক্তা ।
প্রেমিক বা জিসানঃ প্র্যাকটিকেল বা বাস্তববোধ সম্পন্ন ভোক্তা ।
বাঘমামাঃ হিউমেরিটিয়ান বা দয়ালু, মানবিক ভোক্তা ।
নৌকার মাঝিঃ প্রোফেশনাল/ক্যাপিটালিস্ট- পূঁজিবাদি ভোক্তা ।
বন্ধু বা ইনানঃ লজিক্যাল বা যৌক্তিক ভোক্তা ।
মন্তব্যের ঘরে আপনার প্রিয় চরিত্রের নাম লিখে দিন । একদিন পরে উপরের .......... ঘরে জানিয়ে দিব কোন চরিত্র কি পরিচয় বহন করে ।
(হিউম্যান বিহেভিয়রঃ স্ট্রেটেজিক ম্যানেজমেন্ট)