ইদানীং ভারতের গণধর্ষণের খবর প্রায় প্রতিনিয়তই আসছে।
গণধর্ষণে ভারত একেবারে শীর্ষে চলে যাচ্ছে।
এই গণধর্ষণ প্রতিরোধে ভারতের জনগণ রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন করছে, প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এই গণধর্ষণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছে।
অথচ তাদের টিভি চ্যানেলগুলো যে সমস্ত সিরিয়াল, সিনেমা প্রচার করে, তাদের যে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে তা থেকে যে যৌন সুড়সুড়িমুলক সিনেমা নির্মাণ করা হয়, যৌন সুড়সুড়িমুলক গান তৈরি করা হয়, সেই বলিউডের নায়িকারা যে হারে দিন প্রতিদিন খোলা মেলা পোশাক পরে নিজেদের দেহ দেখিয়ে হাজার হাজার যুবককে যৌনতার দিকে সুড়সুড়ি দিচ্ছে তারই ফলাফল হচ্ছে এই ধর্ষণ।
তাদের বক্তা, সুশীল, সমাজ বিশেষজ্ঞরা এই ধর্ষণ রোধে যে সমস্ত সমাধান দিচ্ছে তা একেবারে ভিত্তিহীন, অকার্যকর এবং হাস্যকরও বটে।
তারা আসল সমাধান রেখে অন্ধকারে হাতরিয়ে মরছে।
এই ধর্ষণ রোধে সর্বপ্রথম যৌন সুড়সুড়িমুলক সর্ব প্রকার প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। সকল প্রকার অশ্লীল ছবি, পোস্টার, ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে।
ধর্ষণ রোধে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান দিতে পারেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, কেননা তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তিনিই ভাল জানেন তারা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই তিনি মানুষের সকল সমস্যারই সমাধান দিয়েছেন।
তাই ধর্ষণ রোধে আমাদেরকে যা করতে হবে-
১.নারীরা যখন কাজের জন্য বাইরে বের হবে তখন তারা সৃষ্টিকর্তার এই আদেশ মেনে চলবে-
"হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা আল আহযাবঃ ৫৯)
২. অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হবে না। নিজের কোন কাজের প্রয়োজন থাকলে ভাই, বাবা, স্বামী, ছেলে সন্তান বলবে করে দিতে। যদি তাদের দ্বারা সে কাজ করা সম্ভব না হয় তবে নিজে বের হবে অবশ্যই সুরা আল আহযাবঃ ৫৯ নং আদেশ মেনে।
৩. যখন বের হবে তখন সৃষ্টিকর্তার এই আদেশ মেনে চলবে-
"তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে সাজ সজ্জা করে প্রদর্শন করবে না। (সুরা আল আহযাবঃ ৩৩)
৪. বাহিরে কোন পর পুরুষের সাথে কথা বলতে প্রয়োজন হলে মিষ্টি ভাষায় কথা বলবে না, নারী সুলভ আচরন করবে না। কেননা যখন কোন মেয়ে কোন পুরুষের সাথে মিষ্টি ভাষায় কথা বলে তখন ঐ পুরুষ তাকে নিয়ে এক অন্য জগতে ভাবতে শুরু করে অথচ ঐ মেয়ে সেই পুরুষ সম্পর্কে কিছুই ভাবছে না। তাই মিষ্টি ভাবে বা আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলা যাবে না, সংযত কথা বলতে হবে, হাসাহাসি করা যাবে না, ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই কথা বলবে।
তখন সৃষ্টিকর্তার এই আদেশ মেনে চলবে-
"যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সুরা আল আহযাবঃ ৩২)
৫. পুরুষেরা যখন বাইরে বের হবে তখন তাদের চোখ কোন নারীর উপর পড়লে সৃষ্টিকর্তার এই আদেশ মেনে চলবে-
" ঈমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সুরা আন নুরঃ ৩০)
এখানে সৃষ্টিকর্তার বলেছেন নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন তাই কেউ যদি লোকচক্ষুর অন্তরালে কোন নারীর দিকে তাকায় তাহলে সে সকলকে ফাঁকি দিলেও সৃষ্টিকর্তাকে ফাঁকি দিতে পারবে না এজন্য তাকে পরকালে শাস্তি পেতে হবে।
৬. নারীরাও তাদের দৃষ্টি সংযত রাখবে। পর পুরুষদেরকে নিজের সৌন্দর্য্য দেখাবে না। যদি তারা পর পুরুষদেরকে নিজের সৌন্দর্য্য দেখায় তবে ঐ পুরুষ অবশ্যই তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাকে পেতে চাইবে ফলে ধর্ষণ হবে। তাই নারীরা সৃষ্টিকর্তার এই আদেশ মেনে চলবে-
"ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা আন নুরঃ ৩১)
৭. যারা সিনেমা, পোস্টার, বিজ্ঞাপনের নামে নারীদের খোলা মেলা পোশাক পরে নিজেদের দেহ দেখিয়ে হাজার হাজার যুবককে যৌনতার দিকে সুড়সুড়ি দিচ্ছে তারই ফলাফল হচ্ছে এই ধর্ষণ। তাই তারা এগুলো বন্ধ করবে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র আর টিভি সিরিয়ালগুলো দেখলে মনে হয় অবাধ মেলামেশা আর পরকীয়া হচ্ছে আধুনিকতা প্রকাশের অন্যতম উপায়। প্রায় প্রতিটি সিনেমা/সিরিয়ালে দেখা যায়, অবিবাহিতদের একাধিক বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড রয়েছে আর বিবাহিতদের রয়েছে বিয়ে-বহির্ভূত এক বা একাধিক সম্পর্ক। এবং সবচে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ব্যপারগুলোকে অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে পজিটিভ আকারে রিপ্রেজেন্ট করা হয়।
আর এরই ফলাফল স্বরূপ ভারতে দিন প্রতিদিন ধর্ষণের হার বেড়েই যাচ্ছে। বর্তমানে ভারতে AIDS বা HIV আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নাইজিরিয়ার পরই ভারতের স্থান। খবরে আরও বলা হয়, এইডসকে প্রতিহত করার একমাত্র উপায় শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো। স্কুল ও কলেজে এইডস শিক্ষা কর্মসূচি চালু করাও আবশ্যক।
এই চিন্তাধারা সম্পূর্ণ ভুল।
শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রত্যেকটি ব্যপারে বিশ্ব এগিয়ে গিয়েছে অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এবং প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একইভাবে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে এই ভয়াবহ রোগের বিস্তার। আর আপনি একই চ্যানেলে পরকীয়া আর ব্যভিচারকে প্রমোট করবেন আর বিজ্ঞাপন বিরতিতে AIDS-কে প্রতিহত করার ভাষণ দিবেন, বিজ্ঞাপন দিবেন এতে কি আদৌ কোন লাভ হবে?
এই রোগের পেছনের কারনগুলো ভেবে দেখলেই বুঝবেন, একমাত্র ইসলামী অনুশাসনই পারে এই মহামারী প্রতিরোধ করতে !!
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান সময়ের মুসলিমরাও এই টিভি, সিরিয়াল, সিনেমায় আসক্ত। এই ধরণের অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব।
টিভি ভর্তি যৌনতা? উহা তো সিনেমা !
কাগজভর্তি যৌনতা? উহা তো কবিতা!
ক্যাসেট ভর্তি যৌনতা? উহা তো সঙ্গীত!
বিলবোর্ড ভর্তি যৌনতা? উহা তো বিজ্ঞাপন!
রাস্তার মোড়ে যৌনতা? উহা তো পোষ্টার!
আর এর ফল:->> বাসে ধর্ষণ-বাসায় ধর্ষণ, রেলে ধর্ষণ- রেল স্টেশনে ধর্ষণ, খেলায় ধর্ষণ-মেলায় ধর্ষণ, মাঠে ধর্ষণ- পাঠশালায় ধর্ষণ, ক্ষেতে ধর্ষণ-খামারে ধর্ষণ, গাঁয়ে ধর্ষণ-শহরে ধর্ষণ, কিশোরী ধর্ষণ- তরুনী ধর্ষণ, মধ্যা ধর্ষণ- বৃদ্ধা ধর্ষণ, কোচিংয়ের নামে ধর্ষণ, পড়ানোর নামে ধর্ষণ, রাজনীতির নামে ধর্ষণ।
নেত্রী বানানোর নামে ধর্ষণ, মডেলিংয়ের নামে ধর্ষণ-অভিনয়ের নামে ধর্ষণ।
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ
" যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সুরা আন নুরঃ ১৯)
তাই ধর্ষণ রোধে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সৃষ্টিকর্তার আদেশ সমূহ মেনে চলতে হবে। তবেই ধর্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
এছাড়া বড় বড় সমাজবিদ, সমাজ সংস্কারক, চিন্তাবিদ যত সমাধানই নিয়ে আসুক না কেন কোন কাজ হবে না। সৃষ্টিকর্তাই তাদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী। মানব মস্তিষ্ক প্রসূত অভিমত কখনোই সৃষ্টিকর্তার দেয়া সমাধানের চেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারেনা।
কোন আইন যুক্তিসঙ্গত ????
মানব মস্তিষ্ক প্রসূত অভিমত দ্বারা তৈরী আইন-
যে আইনে ধর্ষণ তো নিষিদ্ধ। কিন্তু তার সাথে সাথে সেখানে মানুষের যৌন বাসনাকে জাগিয়ে বা ক্ষেপিয়ে তোলে এমন সকল কিছু যেমন মহিলাদের অর্ধ নগ্ন বেশে চলা ফেরা করা, যৌণ সুড়সুড়ি দেয় এমন প্রচারণা [পোষ্টার, বই, সিনেমা, নাটক, গান ইত্যাদি] আইনসিদ্ধ।
পক্ষান্তরে কুরআনে বর্ণীত সৃষ্টিকর্তার আইন-
যে আইনে ধর্ষণ ও ব্যাভিচার করা একেবারে নিষিদ্ধ। তাই এর সাথে সাথে ধর্ষণ ও ব্যাভিচারকে উৎসাহিত করতে পারে এমন [মহিলাদের অর্ধ নগ্ন বেশে চলা ফেরা করা, যৌণ সুড়সুড়ি দেয় এমন প্রচারণা পোষ্টার, বই, সিনেমা, নাটক, গান ইত্যাদি] সকল কিছুও নিষিদ্ধ।”
তাই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সৃষ্টিকর্তার আদেশ সমূহ মেনে চলে তাহলে ধর্ষণ অবশ্যই অবশ্যই বন্ধ হবে।
এর পরেও যদি কেউ দুর্ঘটনাক্রমে ধর্ষণ বা ব্যাভিচার করে ফেলে তবে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ইসলামে এর জন্য রয়েছে কঠর আইন।
ইসলামি শরিয়া ধর্ষণ ও ব্যভিচারের শাস্তি নির্ধারণ করেছে।
ইরশাদ করা হয়েছে: "ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্রত্যককে ১০০টি করে বেত্রাঘাত কর। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান এনে থাক তবে আল্লাহর এই শাস্তি কায়েমের ব্যাপারে তাদের প্রতি তোমাদের মনে যেন করুণার উদ্রেক না হয়। আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। [ সূরা আন-নূর: ২]
হাদিসে এসেছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা আমার কাছ থেকে নাও, তোমরা আমার কাছ থেকে নাও। আল্লাহ তাদের ব্যাপারে পথের দিশা দিয়েছেন। অবিবাহিত পুরুষ-নারী ব্যভিচার করলে একশত বেত্রাঘাত ও একবছরের জন্য দেশান্তরিত কর। আর বিবাহিত নারী-পুরুষ ব্যভিচার করলে একশত বেত্রাঘাত ও পাথর নিক্ষেপ করে করে মেরে ফেল। [মুসলিম: আলহুদুদ/৩১৯৯]
এ তো গেল দুনীয়ার শাস্তি, এবার পরকালীন শাস্তি সম্পর্কে শুনুন-
সহিহ বুখারিতে রাসুলুল্লাহর (সাঃ) স্বপ্নের বিবরণ সম্বলিত যে হাদীসটি হযরত সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে উল্লেখ রয়েছে এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; “জিবরাঈল ও মীকাঈল (আঃ) তাঁর কাছে এলেন এবং আমি তাঁদের সাথে পথ চলতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে আমরা বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। সে চুল্লির উপরি অংশ সংকীর্ণ ও নিম্নভাগ প্রশস্ত। ভেতরে বিরাট চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভেতরে দেখতে পেলাম উলংগ নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা আগুনের কুন্ডুলী আসছিল আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম; হে জিবরাঈল! এরা কারা ? তখন তিনি বললেনঃ এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ”।
মহান আল্লাহর বাণী; “জাহান্নামের সাতটি দরজা থাকবে”- এ আয়াতের তাফসীরে হযরত আতা (রহ) বলেন, “ এ সাতটি দরজার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, সবচেয়ে বেশি দুঃখে পরিপূর্ণ ও সবচেয়ে ভয়ংকর দরজা হবে যারা জেনে-শুনে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাদের দরজা”।
ইমাম মাকহুল দামেস্কী (রহ) বলেনঃ জাহান্নামবাসীদের নাকে একটা উৎকট দুর্গন্ধ ভেসে আসবে। তারা বলবে এমন দুর্গন্ধ আমরা ইতিপূর্বে আর কখনো অনুভব করিনি। তখন তাদেরকে বলা হবে, এ হচ্ছে ব্যভিচারীদের জননেন্দ্রিয় থেকে বেরিয়ে আসা দুর্গন্ধ।
তাফসীরের বিশিষ্ট ইমাম ইবনে যায়েদ (রহ) বলেন, ব্যভীচারীদের জননেন্দ্রিয়ের দুর্গন্ধ জাহান্নামবাসীর জন্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বয়ে আনবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “জাহান্নামে একটা হ্রদ আছে। এতে বহু সংখ্যক সাপের বসবাস। প্রতিটি সাপ উটের ঘাড়ের সমান মোটা। সে সাপগুলো নামায তরককারীদেরকে দংশন করবে। একবারের দংশনেই তার দেহে সত্তর বছর পর্যন্ত বিষক্রিয়া থাকবে। এরপর তার গোশত ঝরে পড়বে। এছাড়া জাহান্নামে আরো একটা হ্রদ রয়েছে ,যাকে ‘দুঃখের হ্রদ’ বলা হয়। এতেও বহু সাপ ও বিচ্ছুর বসবাস। প্রতিটা বিচ্ছু এক একটা খচ্চরের সমান। এর সত্তরটি হুল রয়েছে । প্রত্যেকটি হুল বিষে পরিপূর্ণ। সে বিচ্ছু ব্যভিচারীকে দংশন করে সমস্ত বিষ তার দেহে ঢেলে দিবে। এতে সে এক হাজার বছর পর্যন্ত বিষের যন্ত্রণা ভোগ করবে। এরপর তার গোশত খসে পড়ে তার জননেন্দ্রীয় থেকে পুঁজ, নোংরা তরল পদার্থ নির্গত হবে”।
আর মানব মস্তিষ্ক প্রসূত অভিমত দ্বারা তৈরী আইনে ধর্ষণের শাস্তি হচ্ছে ৩ মাস জেল, এর ফলে দেখা যায় কেউ ধর্ষণ করতে ভয় পায় না। ফলে ধর্ষণ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।
আর যদি নারী-পুরুষ পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যাভিচার করে তাহলে তো মানব রচিত আইনে কোন শাস্তিই নেই। এর ফলে ধর্ষণ এবং ব্যাভিচার দুটোই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
এখন আমি আপনাদের প্রশ্ন করতে চাই- কোন আইন বেশি কার্যকর?
সৃষ্টিকর্তার আইনে যদি নারী-পুরুষ পরস্পর সম্মতিক্রমে ব্যাভিচার করে তাহলে তাদের উভয়কে কষে একশত বেত্রাঘাত করা হবে আর ধর্ষণ করলে ধর্ষককে পাথর মেরে মেরে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে, তাও সকলের সামনে। সকলের সামনে প্রকাশ্যে যদি কেউ কাউকে এমন নির্মমভাবে মরতে দেখে তাহলে কি কেউ আর ঐ অপরাধ করার সাহস করবে?
আর মানব রচিত আইনে ধর্ষণের শাস্তি হচ্ছে ৩ মাস জেল সর্বোচ্চ ১ বছর।
এই আইনের ফলে ধর্ষণ কি বাড়ছে না কমছে?
তাই যদি ধর্ষণ বন্ধ করতে হয় তবে অবশ্যই নারী-পুরুষ সকলকে সৃষ্টিকর্তার আদেশ সমূহ মেনে চলে এবং এর পরেও কেউ ধর্ষণ করলে তাকে সৃষ্টিকর্তার বিধান অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। একমাত্র এটাই কার্যকরী উপায়।