একটু আগে একজনের কল এলো। সাংবাদিকতার কারণে অনেকজনের সাথে সম্পর্ক রাখতে হয়। কল করেই সে বলে যে ঘটনা প্রচন্ড খারাপ। পাকিস্তানী জঙ্গীরা আস্তে আস্তে বাংলাদেশে আসছে। গতকাল ঢাকায় জাতীয় মসজিদে হামলা হয় দুই পাকিস্তানীর নেতৃত্বে। এমনকি চট্টগ্রামে হামলা শুরুর সময় "পাকিস্তান জিন্দাবাদ" বলেই শুরু হয়ে চলতে থাকে। আর নোয়াখালীতে পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে বের হয় মিছিলকারীরা। যা দেখে সাধারণ জনতাই ধাওয়া দেয় তাদের। এসব শুনে পরিচিত কয়েকজনের সাথে ফোনে কথা বলে জানতে পারি, ঘটনা সত্যি এবং অনেক গভীরভাবেই পরিকল্পিত। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শহীদ মিনারে হামলা এবং বাঙ্গালীর জাতীয় পতাকা ছেঁড়া হয়। এরপর জানতে পারি বাইরের দেশ থেকে জামাত অতিরিক্ত সাহায্য চাইছে। এখন তারা আন্দোলনকারী সেজে পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে দেয়ারও ঘৃণ্য পরিকল্পনা করেছে।
এই সবকিছু হচ্ছে প্রবাসী জামাতের বিভিন্ন নেতাদের নির্দেশে। এমনকি সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যুদ্ধপরাধীদের বাঁচাতে।
এখনো পর্যন্ত কিন্তু কারো ফাঁসি হয়নি। বাচ্চু রাজাকারের দিলেও সে পলাতক। আর কাদের মোল্লার তো এখনো ফাঁসির দাবী চলছে। কিন্তু সাঈদীর রায় পেছানোই হচ্ছে।
এসবের মধ্যে এখন দেখি পাকিস্তানীদেরকেও এই দেশে আনা হচ্ছে! শিবিরের কাছে জমা হচ্ছে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র। খুব ভালোভাবেই প্রস্তুত হয়ে গেছে জামাত শিবিরের “সুইসাইড স্কোয়াড” এর কর্মীরা। সবকিছু মিলিয়ে এক নতুন করে আবার কিছু একটা করতে চলেছে জামাত শিবির। তার সাথে একাত্ম হচ্ছে অন্যান্য ইসলামী সমমনা দলগুলো। নেজামে ইসলামী পার্টিও এই বাংলাদেশ চায়নি। এখন তারাও এই ঘৃণ্য কাজে সামিল হয়েছে আবার। এখন তারা সকলকিছুর বিনিময়ে শাহবাগ আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে চায়, তারা নিঃশর্তে মুক্তি চায় সকল রাজাকারদের। এর সাথে সমর্থন করছে বিএনপি। এর মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসে সরাসরি রাজাকারদের ফাঁসি দিতে অনুরোধ করল।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জামাত-শিবির শনিবার মসজিদে আগুন দিয়েছে, মসজিদ থেকে ইট মেরেছে, মসজিদ থেকে ককটেল ছুঁড়েছে, মসজিদ থেকে জুতা তুলে উল্লাস করেছে, সাধারণ মুসুল্লিদের নামাজ পরতে দেয়নি, সাংবাদিক কর্মীদের উপর হামলা করেছে, পতাকা ছিঁড়েছে, শহীদ মিনার ভেঙ্গেছে - সুতরাং আমাদের মা বাংলাদেশ এখন নিরাপদ নেই।
২৪ফেব্রুয়ারী রবিবার জামাত শিবিরের নেতৃত্বে ইসলামী দলগুলোর ডাকা হরতালে এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মৌলবাদী জঙ্গি’দের সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। সব কেমন পরিকল্পিতভাবেই এগোচ্ছে। এমনকি এতোদিন কোনো খবর না থাকলেও ইদানীং ভারতের মিডিয়া এই আন্দোলনের খবর প্রচার করছে মোটামোটি ভালভাবেই। কিন্তু আলজাজিরা করছে জামাতের পক্ষে। সিএনএন ও বিবিসি তেমন কিছু প্রচারে নেই। ইদানীং বিভিন্ন ধর্মীয় পেইজও দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে অনেক বেশী পরিমাণে। আর সবখানে চলছে আপত্তিকর কথাবার্তা। এদিকে এতকিছু চলা সত্বেও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা এবং প্রশাসন এমন নীরব ভূমিকাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
এর মধ্যে পাকিস্তানী স্লোগান দেয়া, পাকিস্তানী পতাকা নিয়ে জঙ্গী হামলা, এমনকি পাকিস্তানী ২জন জঙ্গীর নেতৃত্বে জাতীয় মসজিদ থেকে গতকালের তান্ডব, সব কেমন জানি একটা ছকে বাঁধা খেলা। তার মানে শুধু দুই জন না, আরো অনেক পাকিস্তানী তালেবান জঙ্গী আমাদের বাংলাদেশে ঘাঁটি গড়তে শুরু করেছে। আর আমরা যারা এই আন্দোলনে নেমেছি আমরা অনেকেই জানিনা কি হবে। তবে আমাদের অগোচরে হয়ে যাচ্ছে অনেককিছুই যা আমরা অনেকে জানতেই পারছিনা।
গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। এখন প্রশ্ন, আবার কিসের নীল নকশা আঁকা হচ্ছে?
আবার আরেকটা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও বাঙ্গালী।
আমার মাটি আমার মা, পাকিস্তান হতে দেবো না।