কলিকাতা হারবালের কথা আজ খুব মনে পড়ছে।
স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার জন্য।
আমরা বাঙালিরা না, অনেক দুর্বল। বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারিনা। সেটা যা ই হোক। আবেগ কিংবা অন্য কিছু। ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে কতরকম আন্দোলন, মানব বন্ধন হয় এরপর আর খবর থাকেনা। আমরা মনেই রাখিনা। ধরেই রাখতে পারিনা
বিশ্ব্জিৎ, তনু, রাজন, বাসে হাত কাটা রাজীব, সাগর রুনি, হোটেল রেইনট্রি ট্রাজেডি,পিলখানা হত্যাকাণ্ড, রানা প্লাজা ধ্বস সহ অসংখ্য ঘটনা বিগত কয়েক বছরে চোখে পড়েছে।
কয়েকদিন খুব তোলপাড় হয়, মিছিল, মানব বন্ধন, ফেসবুক স্ট্যাটাস অতঃপর আর কোন খোঁজ থাকেনা।। আদৌ আমরা খোঁজ রাখিনা তার ফলাফল কি হয়? বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের চারজন ফাঁসির দন্ড থেকে খালাস পেয়েছে, তনু হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার ও হয়নি, সাগর রুনি ঘটনারও আর কোনও ব্যাখ্যা হয়নি, পিলখানার চক্রান্তকারী কারা আজও আমরা জানিনা, রানা প্লাজার রানাও মুক্তি পেয়ে গেছে।।
সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা কারচুপির কেলেঙ্কারি, বড়পুকুরিয়ার ২৫৬ কোটি টাকার কয়লা গায়েব, জনতা ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ।। সব চাপা পড়ে গেল নিরীহ কলেজ শিক্ষার্থীদের বাস চাপা দিয়ে মৃত্যুর মাধ্যমে।।
অনেকেই এসব নিয়ে প্রতিবাদ করাটাকেও অন্যায় ভাবেন। তারা ভাবেন সরকারি একজন কর্মকর্তা, পুলশ, এমপি, মন্ত্রী এদের দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ স্বীকারই করলে সরকারের অপমান হবে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আরে ভাই একজন ব্যাক্তির অপকর্মকে সমর্থন দিয়ে আপনি বরং সরকারের শতটা ভাল কর্মের ফলাফলকে ম্লান করছেন।। কেউ অন্যায় করলে শাস্তি দিবে এতে আপনার সমস্যা কি। সব জায়গায় কেন অযথা রাজনীতির ভিতর টেনে নেন?
বরং আমি মনে করি এসব অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে সরকারকে কলংকমুক্ত হওয়া।
সবশেষে বলি, সাম্প্রতিক ইস্যু বাসচাপা দিয়ে শিক্ষার্থী হত্যার। আর এবিষয়ে বলদা মন্ত্রীর বলদা মন্তব্য। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি মন্ত্রীকে সমর্থন দিয়েও একদল লেখালেখি এবং বক্তব্য দিয়েছেন। মানে বিষয়টা এমন যে, একজন অন্যায় করেছে জেনেও তাকে সমর্থন করাটা আমার দায় হয়ে গেছে। অতঃপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশি হামলা।। সব মিলিয়ে দেশে এখন পরিবহনের সঠিক নিয়মনীতি এবং ড্রাইভারদের লাইসেন্স সহ সড়কপথে জনগনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার জন্য আন্দোলনে উত্তাল।
জানি দুদিন পর এটাও আর মনে থাকবে না। রাস্তায় লাইসেন্স বিহীন চালকও গাড়ি চালাবে, পাল্লা দিবে অন্য গাড়ির সাথে, নিরীহ পথচারীর উপর গাড়ি তুলে দিবে, প্রতিদিনই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুর্ঘটনা হবে, মানুষ মারা যাবে।।
তারপরও বলে যাই।। এই ইস্যুটা ধরে রাখুন। স্থায়িত্ব বাড়ান। সড়ক পরিবহনের একটা সুষ্ঠু নিয়মনীতি থাকা দরকার।। কারন আপনি রাজনৈতিকভাবে যে দলের লোক ই হোন না কেন, যে পেশার সাথে জড়িত হোন না কেন, গাড়িতে আপনাকে উঠতেই হবে। আর আপনি যে গাড়িতে আছেন সেটা যে দুর্ঘটনার স্বীকার হবেনা, এমন নিশ্চয়তা আপনি দিতে পারবেন না।।
নিজের অবস্থান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন সড়ক ও পরিবহন ব্যাবস্থার অনিয়মের বিরুদ্ধে। কারন যার হারায় সে বুঝে জ্বালা। নায়ক ইলিয়াস কান্ঞ্চন #নিরাপদ_সড়ক_চাই সড়ক চাই বলে এমনিতেই পাগল হন নি। কারন তিনি তার স্ত্রীকে হারিয়ে বুঝেছিলেন যে, দুর্ঘটনায় আপনজন হারানোর যন্ত্রনা কতটা প্রকট। তাই তিনি চাননি এভাবে আরও কেউ স্বজনহারা হোক। আমরাও চাই না। ভাল থাকুক প্রতিটি আপনজন, প্রতিটি প্রিয়মুখ।।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:২২