জানিনা কেন যেন আমার খুব ভয় হয়। ঘরপোঁড়া গরু সিঁদুরের মেঘ দেখলে ভয় পাবেই এটাই স্বাভাবিক। এটাও ঠিক যে, দেশে সেই সময়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল জরুরী অবস্থা জারী করা ছাড়া সেই সময়ে অন্য কোন উপায় ছিলনা। ড. ফখরুদ্দিন আহমদ এর নের্তৃত্বাধীন বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেই দুর্নীতিবাজদের ব্যাপকভাবে যে ধড়পাকড় শুরু করলেন আমরা এতে খুবই আশান্বিত ছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন দেখলাম এটা শুধুমাত্র বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দূর্বল করার কৌশল হিসেবে করা হচ্ছে তখন খুব আশাহত হই। আবার গত বিএনপি সরকারের অংশীদার জামায়াত ইসলামী এর কোনো নেতাকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় আমাদের মনে নানা রকম সন্দেহের বীজ দেখা দেয়াটাই বোধহয় স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝখানে প্রায় ১ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সময় এসেছে দেশের জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার করার। কিন্তু এই বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারদের আদৌও মাথাব্যথা আছে বলে মনে হচ্ছেনা।
আবার আমাদের বর্তমান ক্ষমতাধর কতিপয় কর্তাব্যক্তির হম্বিতম্বি আমাদের মনে ভয়ের উদ্রেগ জাগ্রত করেছে। বিশেষ করে আমাদের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন সাহেবের কর্মকান্ড ও হুংকার তার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। শোনা যাচ্ছে তার সাথে ৭১’ এর ঘৃনিত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর দহরম-মহরম সম্পর্ক। জানিনা ব্যাপারটা সত্যি হলে আমাদের সামনে যে শুধুমাত্র ভীষন বিপদ তাই নয় বাংলাদেশের অস্তিত্বও মারাত্মক হুমকীর মুখে পড়বে। জানিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন সামন্য উপদেষ্টা হিসেবে মইনুল সাহেব এতো শক্তি পান কোথায়? হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ব্যাক আপ দিচ্ছে, আবার নাও হতে পারে। না হলেই ভালো।
জানিনা কি কারনে যেনো আমাদের মহামান্য আইন উপদেষ্টা ৭১’ এর স্বাধীনতা বিরোধী তথা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা শুনলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। সাবেক দুই প্রধান মন্ত্রী হাসিনা-খালেদা সহ মন্ত্রী-এমপিদের দূর্নীতির বিচার করতে পারেন কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে তার এত অনীহা কেন! ছোটো বেলায় বইতে পড়েছিলাম- কুইনিন জ্বর সারাবে বটে কিন্তু কুইনিন সারাবে কে। ব্যাপারটা কি সেদিকেই চলে যাচ্ছে নাকি?
আবার আমাদের বর্তমান সেনা শাসক মঈন ইউ আহমদ সাহেবকে দেখলে মনে হবে উনিই আমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। একজন সেনাশাসক/সেনাপতি হিসেবে উনি এতো দম্ভোক্তি দেখান কিভাবে? কোথা থেকে তিনি এতো জোর পান? তার ব্যাপারেও দুষ্টু লোকদের বলতে শোনা যাচ্ছে আমেরিকার সাথে তারও নাকি দহরম-মহরম সম্পর্ক।
জানিনা আমাদের দেশের ভবিষ্যত কি। ভাবতেও খুব ভয় হয়। যে মহান উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের এই দেশটাকে পাকিস্তানীদের হাত থেকে স্বাধীন করা হয়েছে তার এক কানাকড়ি অংশও আজোও পূরন হয়নি। স্বাধীনতার প্রায় ৩৭ বছর পার হয়ে গেলেও আমরা অর্থনীতির সেই একই বৃত্তে আটকে আছি। স্বাধীনতা আগে শোষন করত পশ্চিম পাকিস্তানীরা আর এখন আমাদের স্বজাতিরাই শোষণ করছে আমাদের একইভাবে। জানিনা শোষনের এই ঘোরাটোপ থেকে আদৌও আমরা উদ্ধার পাবো কিনা??
-----------------------------
পুনশ্চঃ নিচের ভিডিও ক্লিপটিতে দেখুন আমাদের মহামান্য আইন উপদেষ্টা স্বশরীরে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের অনুষ্ঠানে!
এই লিংকটিতে ক্লিক করুনঃ http://www.youtube.com/watch?v=Zc2djYrzjoY
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২৫