বেশ কয়েকদিন ধরে ব্লগে জামায়াত নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক লেখাই হয়েছে। তারপরও এই স্বাধীনতা বিরোধী মানুষগুলোকে নিয়ে দু-একটা কথা খুব বলতে ইচ্ছা করছে তারই প্রেক্ষিতে এই পোষ্ট।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ‘জামায়াত’ একটি অত্যন্ত ঘৃনিত শব্দ। ১৯৭১ সালে এদের ভূমিকার কথা কখনোই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। ‘জামায়াত’ ও ‘শিবির’ এই দুটো শব্দ শুনলেও ঘৃনায় শরীর রি রি করে উঠে। এই মানুষরুপী হায়েনার দল ৭১ এ এহেন হীন কাজ ছিলনা যা করে নাই। হানাদার বাহিনীর পা’চাটা এই নরপশুর দল তাদের পাকিস্তানী প্রভূদের সন্তুষ্ট রাখতে নিজ জাতির সাথে বেঈমানী করতে পিছপা হয়নি। উপরন্তু লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, লক্ষাধিক মা-বোনকে পাকিস্তানীদের হাতে তুলে দেয়া, বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করতেও এরা এতটুকু কার্পন্যবোধ করেনি। এরা পশুর চেয়েও অধম। এরা ক্ষমার অযোগ্য।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এরা বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতার সু্যোগ আর জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় আবার দেশে প্রত্যক্ষ রাজনীতি করার সুযোগ পায়। ধীরে ধীরে এরা কখনো বিএনপি কখনো বা আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিনত হয়। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক নেতাদের দূর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক ধড়পাকড় শুরু হয়। বিভিন্ন বড় বড় দলের দলীয় প্রধান সহ বড় মাপের নেতাদের ধরা হলেও কোন অদৃশ্য ইংগিতের কারনে জামায়াতের নেতারা দূর্নীতি করেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন তা সত্যিই বিস্ময়ের ব্যাপার। পত্র-পত্রিকায় এদের বহু দূর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হবার পরও এদের কিছুই হয়নি!
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকে জামায়াত নেতা আলী আহসান মূহাম্মদ মুজাহিদ বলেন দেশে নাকি কোন কালেই স্বাধীনতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধী বলে কিছু ছিলনা!! তাহলে মুজাহিদ গংদের ৭১’ এ ভূমিকা কি ছিল? তারা কি মুক্তিযোদ্ধা ছিল? এখন কিছু না বললেও আমি নিশ্চিত আর কয়েক বছর পরই তারা বলবে- রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীই ছিল সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা আর যারা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল তারা ছিল প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী। তারা সবই পারে। তারা নির্বাচনে মানুষকে ভোট দেবার বিনিময়ে বেহেশতের টিকিট দিয়ে দিতে পারে! এদের চরিত্র সত্যিই বোঝা খুবই মুশকিল। এরা ধর্মের নামে রাজনীতি করে দেশের ধর্মভীরু লোকের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে।
এই নরপিশাচদের কোন ভাবেই ক্ষমা করা সম্ভব নয়। যারা দেশের সাথে, দেশের মানুষের সাথে বেঈমানি করে তাদের কখনোই ক্ষমা করা যায়না। উপরন্তু এরা ক্ষমা চাওয়াতো দুরের কথা উল্টো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের উস্কানীমূলক কথা বলে আসছে। এই নরাধমদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ৭১ এর জন্য এদের বিচার করতেই হবে।
আমি খুবই আশাবাদী সামনে খুব বেশী দিন নেই যখন সকল দেশপ্রেমিক বাঙ্গালীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নরপিশাচদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিবে। তখন এই ঘৃন্যকীটরা পালানোর কোন পথই খুঁজে পাবেনা।
আজ ২৮ অক্টোবর জামায়াতের দলীয় শোক দিবস। কারন গতবছরের এই দিনে ১৪ দলের সাথে সংঘর্ষে তাদের কয়েকজন কর্মী নিহত হয়। ব্যাপারটা সত্যি দুঃখ জনক। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছি- আর বেশী দিন নেই যখন সকল দেশপ্রমিক জনতা এক হয়ে জামায়াতসহ সকল মৌলবাদী ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলগুলোকে সমূলে উৎখাত করে অসাম্পদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:২৪