জানালার গ্রীলে মাথা ঠেকিয়ে বাইরের শহরের দিকে তাকিয়েছিল আবিদ। কিন্তু কান পেতে রেখেছিল দরজার দিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রাবাসটিতে সে ঠাই নিয়েছিল ৫বছর আগে। চারতলার এই রুমটিতে জাহিদ নামের জুনিয়র একটি ছেলেকে নিয়ে থাকে সে। কায়দা করে ছেলেটিকে দুদিনের জন্য অন্যত্র পাঠিয়েছে আবিদ।
সিড়ি বেয়ে উঠা প্রতিটি পায়ের শব্দ কান পেতে শুনে আবিদ। শব্দগুলো যত নিকটবর্তী হয় ততই হ্রদকম্পন বেড়ে যায় ওর। পায়ের শব্দগুলোর একটি থেমে যাবে তার দরজায়, এই শংকায় উদগ্রীব হয়ে থাকে ও। একজন খুনীর জন্য অপেক্ষা করাটা, সুখকর কোন অভিজ্ঞতা হতে পারেনা। যে খুনিটি গত কয়দিন আগে একটি কিশোর ছেলেকে হত্যা করেছে গুলি করে।
অথচ একসময় শিমুল নামের এই খুনিটি একসময় এই ছাত্রাবাসের তার প্রথমদিককার রূমমেট ছিল।
শিমুলকে প্রথম যখন আবিদ দেখে তখন গড়পঢ়তা গায়ের সহজ সরল ছেলে বলেই মনে হয়েছিল তার। আচরনে দৃষ্টিকটু পর্যায়ের কিছু ছিল না। পরে মিটিং মিছিলে আনাগোনা বেড়ে যায় ছেলেটির, রুমেও ফিরত রাত করে । খুব দ্রুতই বদলে যেতে শুরু করেছিল ছেলেটি । তবে তার এই রূপান্তর ছিল ক্রমশ খারাপ থেকে খারাপের দিকে। বছরদুই আগে শিমুল যখন তাকে ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গিয়েছিল তখন বড় বাচা বেচে গিয়েছিল আবিদ। নাহয় একদিন হয়ত বড় কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হত ওকে। নেহায়েত পড়াশুনার জন্যই আসা তার বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গতকাল হঠাত করেই শিমুল মোবাইলে কল করে জানায় ওর এখানে একটা দিন কাটাতে চায় সে। বিরাট কি একটা ঝামেলা হয়েছে নাকি।
এরিমধ্যে আবিদ জেনে গেছে শাহবাগে দোকানের একটি কর্মচারী ছেলেকে খুন করেছে শিমুল। আবিদ ওকে আসতে বারন করেছিল জাহিদের কথা বলে। কিন্তু শিমুল ছিল নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত রাজী হতে হয়েছিল ওকে।
জানালায় ভেসে আসা ঠান্ডা বাতাসে অনেকটা ঝিমুনির মত লেগে গিয়েছিল আবিদের, দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে চমকে উঠে ও। এলোমেলো পায়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে ও। মুখে খোচা খোচা দাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে শিমুল। চেহারায় শংকা এবং ক্লান্তি। এতক্ষন একজন খুনীর কঠিন এবং ভয়ংকর যে চেহারা ফুটিয়ে তুলেছিল সে মনের মধ্যে বদলে সে আবিস্কার করল একজন ভেংগে পড়া বিদ্ধস্ত মানুষকে।
ঘরে ঢুকেই এক গ্লাস পানি চাইল শিমুল।
কথায় এবং কাজে যথাসম্ভব সবকিছু স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছিল আবিদ।
কিছুটা ভয়ের অনুভুতি যে কাজ ক্রছে ওর মধ্যে কিছুতেই বুঝতে দিতে চায়না শিমুলকে।
“আবিদ ভাই বড় একটা ঝামেলায় পড়ে গেছি আমি কয়টা দিনের জন্য নিরাপদ একটা আশ্রয় দরকার আমার। পরথমে কথা শুরু করে শিমুল।
"আমার এখানে থাকাটা তোমার জন্য নিরাপদ নয়, আজকের রাতটা কাটিয়ে সকালে তোমাকে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে।"
নিজের অবস্থানটা পরিস্কার করে আবিদ।
নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে শিমুল। আবিদও কিছু বলেনা।
ক্রমেই গুমোট হয়ে উঠে ঘরের পরিবেশ। কিছু একটা করা বা বলার জন্য হাশফাশ করতে থাকে আবিদের মনটা। একসময় উঠে গিয়ে জানালার পাশে দাড়ায় ও। জানালায় দিয়ে তখনও একটু একটু শীতল বাতাস ভেসে আসে। জানালায় মুখ বাড়িয়ে দিয়ে সজীব সতেজ হওয়ার চেষ্টা করে ও। পাথর সময় ধীরে পার হয়ে যায়। জানালা থেকে ফিরে আসতে ইচ্ছে করেনা ওর, এমনকি ইচ্ছে করেনা ফিরে তাকাবার। ঘরে যে একজন মানুষ আছে তা ভুলে যেতে চায় ও।
হঠাত করেই ঘাড় কাত করে পেছন দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে আবিদ, বসে বসে ঘুমিয়ে পড়েছে শিমুল।
কাছে এসে বসে ও। শিশুদের মত নিষ্পাপ চেহারা নিয়ে ঘুমিয়ে আছে ও। বুকে চিরে দীর্ঘস্বাস বেরিয়ে আসে আবিদের।
আস্তে করে বাতি নিভিয়ে দিয়ে আবিদও ঘুমিয়ে পরে। কিন্তু ঘুম আসে না ওর। জানালা দিয়ে চোখ গলিয়ে দেয় বাইরের অন্ধকারের দিকে। একসময় ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসতে চায় ওর। কিন্তু কোন এক অজানা শংকায় চোখ খোলা রেখে শুয়ে থাকে ও।
"আবিদ ভাই আপনাকে বড় বিপদে ফেলে দিয়েছি তাই না।"
চমকে উঠে আবিদ, সে ভেবেছিল শিমুল ঘুমিয়ে পড়েছে। কোন উত্তর দেয় না সে।
"সত্যি বলতে কি আমি ছেলেটিকে খুন করতে চাইনি, রাগের মাথায় হঠাত করেই গুলি করে বসি। আমার এখনও বিস্বাস করতে পারছি না ছেলেটি মরে গেছে।"
রাতের অন্ধকারে শিমুলে কথাগুলো বাতাসে শিষ কেটে যায়, শব্দগুলো আবিদের মগজের শিরায় শিরায় অনুরিত হতে থাকে। ভয় চেপে বসতে থাকে তার মনে। একসময় ভয় রুপান্তরিত হয় আতংকে। উঠে বসে দ্রুত বাতি জালায় আবিদ।
"একটা সপ্তাহের জন্য আমাকে আপনাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া যায় না। এরিমধ্যে সবাই ব্যপারটা ভুলে যাবে। এমনিতে পুলিশেরও কোন আগ্রহ নেই কেসটিতে। পলিটিকাল মার্ডার হলে তোলপাড় হয়ে যেত।"
শিমুলের কথাগুলো আত্মস্থ করার চেষ্টা করে আবিদ, সহজ কথাগুলো বুঝতে সময় লাগে ওর।
"আবিদ ভাই আপনার মনে আছে আপনার সাথে পরিচয়ের প্রথম দিকে আপনি কয়টা দিনের জন্য আপনাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন আমায়"
"শিমুল প্লীজ আর কোন বড় ঝামেলায় জড়াতে চাই না আমি"
আবিদ নিজের অসন্তোষ আরে চেপে রাখতে পারেনা।
আবার দুজন চুপ মেরে যায়। একসময় ক্লান্তিতে গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়।
খুব সকালে দরজার কড়া নাড়ার শব্দে আবিদের চোখ খুলে প্রথমে।
ঘুমজড়িত চোখে দরজা খুলে সে। বিষন্ন চেহারা নিয়ে একজন বয়স্ক লোক দাড়িয়ে আছেন। দরজাটা আলতো করে ভিজিয়ে দেয় আবিদ। কথা সেরে নেয় নিচু স্বরে।
কিছুক্ষন পরে তড়িঘড়ি করে পোশাক বদলে বয়স্ক লোকটির সাথে বেরিয়ে পড়ে সে।
শিমুল এর কিছুই জানতে পারেনা, তখনও সে গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে।
আবিদের ফিরতে রাত হয়। এসেই পরিশ্রান্ত শরীর এলিয়ে দেয় বিছানায়। এরিমধ্যে কোথাও নড়েনি শিমুল। কিছুক্ষন পর উঠে বসে আবিদ, সাথে নিয়ে আসা খাবারের পোটলা থেকে খাবার বের করে খাবারের আয়োজনে লেগে যায়।
"সারাদিনে একটা দানাপিনাও পরেনি পেটে, তোমার কি অবস্থা?"
শিমুলের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে আবিদ।
আবিদের কন্ঠ শুনে কিছুটা চমকে উঠে শিমুল, কন্ঠে একধরনের কাঠিন্যের ছোয়া।
দ্বিধা না করে আবিদের সাথে খাবারে লেগে পরে শিমুল।
খাবারের পর আবার বিছানায় গা এলিয়ে দেয় আবিদ, শিমুল বসে থাকে।
"ছেলেটির নাম রহিম বাবার একমাত্র ছেলে ছিল।" আবিদ স্বগোক্তির মত করে বলে।
হতচকিত শিমুল কথাগুলোর মর্মার্থ উদ্ধার করতে কিছুটা সময় নেয়।
"বাবা শোকে পাথর আর মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন, এক্ষেত্রে সচরাচর যা হয়। এর উপর অতি দরিদ্র একটি পরিবার, রহিমের আয় যোগ করে কোনপ্রকারে চলে যেত পরিবারটির।"
রহিম নামের ছেলেটির কাহিনীটি নিশ্চয় এই শহরেরর অনেক মানুষের মুখে মুখে ফিরছে, ভাবতেই ভয়ের শিহরন জাগে শিমুলের মনে।
"পরিবারটিকে অসহায় অবস্থায় ঠেলে দিয়ে তুমি বড় অন্যায় কাজ করেছ।"
আবিদের দৃষ্টিতে এমন কিছু ছিল শিমুল চোখ সরিয়ে নেয়"
কিছু একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করে সে আবিদের মধ্যে, আগের চাইতে দ্বঢ়চেতা আর আত্মবিশ্বাসী মনে হয় আবিদকে।
আবার কোন কারনে খুবই ক্ষুব্ধ এবং অসন্তুষ্ট।
সারাদিন আপনার ব্যস্ততায় কেটেছে, এবার একটু বিশ্রাম নিন।" প্রসংগটিতে ইতি টানার জন্য বলে শিমুল।
"আসলেই তাই" অস্বাভাবিক গম্ভীর সুরে কথাগুলো বলে পাশ ফিরে শোয় আবিদ।"
"বাতি কি নিভিয়ে দেব?"
"দাও" ক্লান্তি আর ঘুম জড়ানোর কন্ঠে বলে আবিদ।
"আবিদ ভাই আমার এখানে থাকাটা বোধ হয় আর নিরাপদ নয়।"
কিছুটা বিরতি নিয়ে বলে শিমুল।
কিন্তু কোন উত্তর আসে না আবিদের কাছ থেকে, বেচারা তখন গভীর নিদ্রায়।
খুব সকালে উঠে আবিদ। ঘরের জানালা খুলে দিতেই এক ঝলক ভোরের সজীব সতেজ বাতাসে ঘরের গুমোট ভাবটা কেটে যেতে থাকে।
গতকাল সারাদিনের ধকলটা কাটিয়ে উঠলেও মাথাটা ভারী হয়ে আছে ওর। অনেক দ্বীধা দন্দের পর সিন্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে ফেলেছে ও। গতকালের ঘটনাক্রম তাকে এই সিন্ধান্তটা নিতে সহায়তা করেছে।
ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে শিমুলকে ডেকে তুলে আবিদ।
"আমাদের কে বেরুতে হবে এখনি।" আবিদ বলে।
"কোথায়?" সদ্য ঘুম থেকে জেগে উঠা হতচকিত শিমুল প্রশ্ন করে আবিদকে।
"নিরাপদ আশ্রয়ে" দুটো শব্দে ঠান্ডা গলায় জবাব দেয় আবিদ।
রাজধানী শহর ব্যস্ত হয়ে উঠার আগেই তাদের বাস শহরের সীমানা অতিক্রম করল। আশেপাশে তাকালেই দেখা যায় জীর্ণশীর্ন গায়ের কুটিরগুলি ঘিরে থাকা সবুজ গাছগাছালির অযত্নে বেড়ে উঠা,যা খুবই প্রাকৃতিক আর মনোহর। আবিদ বাসের জানালা দিয়ে সামান্য মাথাটা বের করে দিয়ে গায়ের দৃশ্যাবলী উপভোগ করছিল। গত্দুটিদিনে তার জীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। একটা মৃত্যু আর পরিচিত কিছু মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া পরিবর্তন তার চিন্তা ভাবনায় বড় একটা পরিবর্তন এনেছে।
"আবিদ ভাই আমরা যে আসছি গায়ের বাড়িতে খবর দিয়ে রেখেছেন ত?"
শিমুলের প্রশ্ন শুনে মাথাটা ভেতরের দিকে টেনে আনে আবিদ।
শান্ত সুরে বলে, "তোমাকে আমার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিনা শিমুল, অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি।"
"কোথায় জানতে পারিকি?" কিছুক্ষন থেমে থেকে প্রশ্ন করে শিমুল।
"গতকাল সকালবেলায় আমার কাছে বৃদ্ধ একজন লোক এসেছিলেন। দীর্ঘসময় আমাদের বাড়িতে খাটাখাটনি করেছেন। পাশের ইউনিয়নের লোক। যদিও এখন ওনার প্রচন্ড দু:সময় তারপরও রাজী হয়েছেন তোমাকে কয়টা দিনের জন্য আশ্রয় দিতে।
"কি সমস্যা ওনার"
গেলেই বঝতে পারবে।
টানা আট ঘন্টার বাস যাত্রা শেষে দুজন বাস থেকে নামল একধরনের জড়তা নিয়ে। তখনও গন্তব্যের যাত্রা শেষ হয়নি। শুরু হল লোকাল বাসের যাত্রা, জায়গায় জায়গায় থেমে থেমে এগোলো তাদের বাস। তবে দীর্ঘায়িত হল না এইবারের জার্নি। ঘন্টা দুই পরে তাদের বাসটি এসে যেখানটায় থামল তার সামনে দিয়ে বয়ে গেছে মাঝারি আকারের একটি নদী।
নদী পারাপারের নৌকায় চড়ল ওরা আট দশজন মানুষ। সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়েছে। সূর্যের আলোতে প্ররখরতা আর নেই,আছে একধরনের স্নিগ্ধতা। এই স্নিগ্ধতা ছুয়ে দিয়েছে গাছপালা, মাঠঘাট, নদীর বহমান জলরাশিকেও। বৈঠার ছপাত ছপাত শব্দটি আশেপাশের নিস্তবতাকে আরো প্রকট করে তুলেছে। মোহনীয় এই পরিবেশের আবেশ ছড়িয়ে পড়ে নৌকার মানুষগুলোর মাঝেও।
"আবিদভাই জানেন এমনি এক গোধুলি বেলায় আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম ঢাকার উদ্দ্যেশে। শহরের মায়াবী হাতছানি ভুলিয়ে দিয়েছিল আমার মাটির কাছাকাছি জীবনটাকে। ছেড়ে যেতে তাই খুব একটা কষ্ট হয়নি।"
আবিদ কিছু না বলে মাথা নিচু করে বসে রইল।
নৌকা থেকে নেমে দুজন পাশাপাশি হাটতে থাকল পায়ে চলা মেঠোপথ ধরে। একসময় পথ ছেড়ে ক্ষেতের আইল ধরে হাটল থাকল দুজন।
লাল টকটকে সূর্যটা তখন তাদের উল্টোপাশে আকাশে ডুবতে বসেছে। ডুবতে ডুবতে রক্তিম আলোতে রাংগিয়ে দিয়েছে ধানের ক্ষেত, গাছগাছালিসহ গায়ের বিস্তৃত ক্যানভাসটিকে। হঠাত করেই আবিদ শিমুলের একটা হাত নিজের দিকে টেনে এনে গাঢ় কন্ঠে বলে, "শিমুল তোমার জন্য খুব কষ্ট লাগছে আমার। এই দুইটা দিন আমি শুধু একটা খুনিকে দেখেছিলাম তোমার মাঝে। আজ এই জায়গাটিতে এসে মনে হল আমার প্রথম দেখা শিমুলকে যেন আবার খুজে পেয়েছি। "
কিছুই বুঝতে না পেরে শিমুল আবিদকে অনুসরন করে ধীর পায়ে হাটতে থাকে। এদিক সেদিক বসতভিটাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দুরেরগুলো সাঝের আধারে অস্পষ্ট হতে শুরু করেছে। একটা ভিটার খুব কাছাকাছি চলে আসে ওরা। চলতে চলতে থমকে দাড়ায় আবিদ। আবিদের দৃষ্টিকে অনুসরন করে শিমুলের চোখ গিয়ে থামে ভিটার একপাশে কন্চির বেড়াতে ঘেরা নতুন একটা কবরের দিকে।
আবিদ শিমুলের কানের কাছে আস্তে করে বলে "ওটা রহিমের কবর।"
হতচকিত শিমুল কিছু বোঝার আগেই আবিদ বলে "গতকাল সকাল বেলার বৃদ্ধ লোকটি ছিলেন রহিমের বাবা। রহিমের লাশটাকে গায়ের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থাদি করতে গিয়ে গতকাল সারাটি দিন ভদ্রলোকের সাথে খাটতে হয়েছে আমাকে।"
এবার শিমুলের দৃষ্টি ফেরে ভিটার দিকে, যেখানে অনেকগুলো মানুষ জটলা করে দাড়িয়ে আছে ওদের অপেক্ষায়। নিজের পরিনতির কথা ভাবতে গিয়ে শিউড়ে ওঠে ও, উদ্ভ্রান্তের মত তার চোখ খুজে ফেরে একটি মানুষকে যে মানুষটি তার হাতে খুন হওয়া নিষ্পাপ কিশোর রহিমের বাবা।