যার মুখ সবচেয়ে বেশী সুন্দর, প্রিয় ও চেনা, যিনি আমাকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসেন তিনিই আমার মা। আমার ভাল কাজে যিনি সবচেয়ে বেশী খুশী হন এবং মন্দ কাজে নিরাশ হন, তিনি আমার মা। ভূমিষ্ঠ হবার পর হতে আজ পর্যন্ত যার পরিশ্রম আর সেবা যত্নের ফলে আমরা বড় হয়েছি তিনিই আমার মা।
মায়ের কোন ক্লান্তি নেই। যন্ত্রের মত সব কাজ গুছিয়ে যান তিনি, আমি অবাক হয়ে দেখি। মাঝে মাঝে মাকে চিন্তিত মনে হয়, কখনও মায়ের চোখ দিয়ে অশ্র“ পড়তে দেখা যায় কিন্তু আমাদের দেখা মাত্রই নিজেকে সামলে নেন। মা আমাদের সকলের দুঃখের ভাগ নিতে রাজি আছেন, কিন্তু উনার দুঃখের ভাগ আমাদের কাউকে দিতে রাজি নন।
একবার আমার ভীষণ জ্বর হয়েছিল। পাঁচদিন আমি জ্বরে ভুগেছি। এ পাঁচদিনের ভেতর একটি মুহুর্তের জন্যও মা আমার পাশ থেকে যাননি। খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন মার ধারণা ছিল উনি চলে গেলে আমার যত্ন হবে না, রীতিমত ঔষধ খাওয়ানো হবেনা।
মনে কোন আঘাত আসলে বা চিন্তা আসলে যে মাত্র “মার” মুখটা দেখি তখন বুকটা জুড়িয়ে যায়। ব্যথা বেদনা ভুলে যাই।
মা হলেন আমাদের সংসারের কেন্দ্র বিন্দু। পারিবারিক সকল ভারসাম্য তাকেই সবসময় রক্ষা করতে হয়। সকল দায়দায়িত্ব তারই। কোন কারণে যদি ইউনি থেকে ফিরতে দেরি হয়, মা পথের দিকে তাকিয়ে থাকেন, চিন্তায় মগ্ন থাকেন। যখন ফিরে আসি তখন মা স্বস্তিবোধ করে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। পাখি যেমন গাছের কোটরে নিরাপদ আশ্রয় লাভ করে আমরাও তেমনি মায়ের কোলে মাথা রেখে নিরাপদ ও শান্তিময় আশ্রয় পাই।
স্নেহময়ী জননী প্রিয়তম সন্তানকে লালন পালনের জন্য যেরূপ ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করেন, তা ভাবলে অবাক হতে হয়, মানুষের ভালবাসার মধ্যে স্বার্থ নিহিত থাকে কিন্তু মা সন্তানকে যেভাবে ভালবাসেন তার মধ্যে কোন স্বার্থ নেই। এমন নিঃস্বার্থ ভালবাসা সত্যিই অতুলনীয়। আজ মাকে ছেড়ে দূরে আছি, মাকে যদি সবসময় কাছে রাখতে পারতাম...