১.
হয়ত আমার এক টুকরার সাথে তোমার প্রেমই হবে। অথবা প্রেম, প্রেম অথবা কিছুই না। দুর্গবিলাসী বন্দিনী বিদ্যুত্ শিখার মত জ্বলে জ্বলে তারপর হয়ে যাবে ইতিহাস। তুমি জানবে এই টুকরোটা অহির মত দুর্জেয়! ওদিকে রহস্য ভাংতে ভাংতে তুমি যদি জাতিস্মর...
দূর্গপ্রাচীর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আমি পার হয়ে যাব যমুনা!
২.
ধরো যদি ঘুম ভাঙতে দেরী হয়, যদি জেগে দেখো বেলা নেই আর!
আমার ঘুম ভেঙে ভয় করে,খুব ভয় করে; ঘন জঙ্গলে গহনে গভীরে একাকি একটি আঙ্গুর বাগান, ধরো ঘুম ভেঙে দেখি আর পথ নেই।
তুমি যুদ্ধ করনি! এসে ফিরে গেছো। বিগ্রহের মূর্তি ভাঙলো, ফুল গড়ালো মাটি থেকে পাটিতে। যদি দেখো হৃদয় অন্ধকার করে আর কেউ নেই বসে!
যদি ঘুম ভেঙে দেখো স্বপ্ন সমূলে উপড়ে ফেলেছে খরগোশে...
৩.
এই ব্রহ্মান্ডে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে আমি। একটি আমি দুইটি আমি। কোনো আমি কাঁদে ভীষন ব্যাকুল হয়ে কাঁদে। তুমি প্রশ্ন করলে সে বলে আমি কেউ না!
সকল আমির সাথেই তোমার দেখা হয় কেবল এই আমিটাই কখনো তোমাকে পায়না!
এইসব সবুজপ্রবন পাতারা বৃহত্ আয়নাঘরে জমা হতে থাকে। অবহেলার বিনিময় প্রাপ্তি কেবল মোটা দাগের অবহেলায় হতে পারে। তুমি কঠিন শিক্ষক। এইসব সবুজপ্রবন পাতাকে পিষে লাগিয়ে রাখো ক্ষতে! অথচ গোপনে গোপনে এই ক্ষতই হতে পারতো খয়েরী গোলাপ..
৪.
সকল গন্ধের অনুভব নীল জঙ্ঘায় বেচে দেই পাখি! উড়ছিস গাইছিস নাইছিস তারপর আত্মাহুতি লহু জঙ্গলে! ঘুরে ঘুরে আয়-
তোর নীলি মাছ নাই ভাল নাই...
৫.
তোমার চিঠির অপেক্ষা আর নেই প্রতিতী! হাওয়া বদল আলোর মুখে নকশাকাটা মাছরাঙাটা মোটা বইয়ের পাতার ভেতর ডিগবাজী খায়। তোমার লেখা চিঠি গুলো ঘুঙুর নাচায়...
৬.
তুমি কি করে জানো ? কি করে এতসব উপেক্ষাকে নাম দিয়ে দাও কবিতা! সারা বসন্তে ফুল ফুটলো। তুমি অপেক্ষাকে করে তুললে শৈল্পিক। আমি স্নান সেরে হলাম ফুলের নিয়তি!
৭.
আমি তোমার চোখ দেখিনি, বলিনি শান্ত রহস্যাধিক জলের কিস্তি কি কান্ডটাই না করে!
তবু তোমার ঝড়ের ক্লান্তি -
বৃক্ষবান হৃদয়ের কথা জনে জনে জেনে গেল!
৮.
বাইরে মেঘ ডাকছে! মেঘ! পাতাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় জড়ো হয় ফুল। নিমফুল গন্ধি জনপদ ছেড়ে ঝড় যায়। ঝড় বয়ে যায় তোর রঙের কৌটায়...
৯.
পুরনো সিন্দুক খুলতেই গোলাপে ভরে যায় ঘর। কি রহস্য তার!
কি রহস্য চাঁদের আলোর, কি রহস্য ডানার-
বসন্তিনী বাকি ছিলো অনেক কিছু জানার!
১০.
এই শহরে চুমুর সংসার, উঠছে নামছে নাক কাটা ঘুড়ি। কি লজ্জা কি লজ্জা এখনো মেঘে বৃষ্টি হয়! বৈশাখী ঘাঘরা পরে নাচে শালবাগানের দুপুর। কে যায় পথে নামলেই পাতারা হাসে, দূর থেকে ছুড়ে দিলে হাওয়া;
জ্বর আসে, খুব জ্বর আসে গা কাঁপিয়ে!
১১.
দুচোখ কতদূর যায় তাকে নিয়ে যাও পথে। পথে আঁকতে আঁকতে যাও তোমার চোখের ছাপ। যাচ্ছো নিয়তি? যাও আমি ইতিহাস হয়ে আছি!
১২.
সুবোধ বালকের মত শান্তি চেয়েছে জানলায়। কাঠের পাল্লা খুলে বাতাস চেখেছে। কি স্বাদ এতটা দুঃখ কে মিশালো কর্পুরে! হরিদ্বার ভেঙে পবন ছুটে আসে। রকে বসে থাকা বখাটের মত টিটকিরি ছোঁড়ে, পাঁজরে পাঁজর গুঁড়ো করে দেব ছাই!
বাসে ট্রামে চেপে ছুঁই ছুঁই করে শান্তিরা চলে যায়।
১৩.
তার রঙিন জীবন একখানা রুমালের মত উড়ছে। জলের গভীরে সোনার দুলের মত ডুবতে থাকে অন্ধকার। তার রঙিন জীবন ছুঁড়ে দেয়া চাদরের মত ঘিরে রাখছে সুরুজ। এখন ঘাসের উপর দিয়ে নীলুর দুঃখ হেঁটে যায়।
১৪.
আমাকে বিদ্ধ করেছে
একইরকম দুটি হাতকে ভাবো
কয়লা বুকে চেপে রেখে বহুদিন ভাবো তার হিরকজন্ম কতবেশি উত্তাপে আরো বেশিবার আরো আরো কিছু বেশি নিঃশ্বাসে থেমে গেছে...
আমি বলেছিলাম এসোনা। আমি বলেছিলাম ফিরে যাও। আমি বলেছিলাম একই রকম দুটি হাত পরিত্যাক্ত নৌকার মত জলে স্থির, অথচ স্থির জলে নৌকা স্বভাবতই দোলে, নদী যেন কথা বলে কত তার রোদে ভয়।
ভাল লাগেনা। আর ভাললাগেনা তোমার এই অহেতুক হাসি। অহেতুক ডাক। মাহী ও মাহী আমার...
শব্দ হয়।
তখনই টুপ করে জলে ডুবে যায় খুব দুষ্টু বালকের হাতে ঢিল হয়ে।
১৫.
এই রেলপথ আমার চেনা।এই নিঃশ্বাস ট্রেনে চেপে দূর থেকে দূরে চলে যায়। জানো নাকি মৃত্যুর পর আমার ঈশ্বর গান করে, আমাকে নিয়ে খেলে নতুন খেলা! মঞ্চে আলোকসজ্জা আলোতে আলোতে চাররঙা নীল। আমি কি অবসাদ গ্রন্থ, বিবাদপ্রবণ বর্ণমিতি? নিঃশ্বাসে কেন তবে আসি আসি গন্ধ..
চেনা পথ ধরে কেন আজন্ম যায় অচেনা পথিক!
১৬.
আমিতো জানিই তোমাকে! কলঙ্কে তেমনই লেপ্টে নিয়ে এক শীত কে কোলের উপর, বসে রইলে। রহসে বিড়াল টা 'আমি' আমি বলে ডাকলো। কয়েকটি অলীক মুহুর্তে তারপর! তারপর নক্ষত্রপ্রসূত আমাদের পরিচয়। বিচ্ছিন্ন সূত্রাবলী...
১৭.
তোমার আশ্চর্য্য মিথ্যেগুলো ঘুঙুর হয়ে নৃত্যে
বাজছে আর বাজছে....
সাত পুরুষের ভাগ্যজোড়া আমি নর্তকীর পায়ে;
তোমার মিথ্যে গলছে এখন চুমুক দেয়া চায়ে !