পরকীয়া নিয়ে লিখতে যেয়ে ভুমিকা বলার কিছু নাই । কারণ এর আগে ব্লগ এ অনেক বার এই নিয়ে পোস্ট এসেছে । আজকে জিনিস ব্লগ এ আপনাদের সাথে শেয়ার করব । তাই পরকীয়া নিয়ে লেখা ।
প্রথমেই শুরু করি একটা কাহিনি দিয়ে -
২ দিন আগে টিভি দেখছিলাম রাতে । তখন প্রায় ২ টার মত বাজে । চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে আসলাম ভারতীয় বাংলা চ্যানেল ইটিভি বাংলা তে । ওখানে একটা ছবি / নাটক । টেলিফিল্ম কিছু একটা হচ্ছিল । প্রথম থেকে দেখা হয় নাই । যতটুকু দেখেছি তাতে বুঝেছি - এক মেয়ে বিয়ে করেছে । বাচ্চা আছে । কিন্তু কেন জানি মেয়েটা সুখি না । হাসবেন্ড কে সে খুব ভালবাসে আর হাসবেন্ড ও তাই । কিন্তু হাসবেন্ড অনেক ব্যস্ত সময় পার করে তার অফিস আর কাজ নিয়ে ।
ফলে মেয়েটার চাওয়া পাওয়া একরকম মনের গহিনেই লুকিয়ে থাকে । মেয়ে যদি ঘুড়তে জেতে চায় তাহলে হাসবেন্ড কাজের দোহাই দিয়ে পার পেতে চায় । আবার মেয়েটা যদি তাকে একটা রঙ চঙ্গা জামা উপহার দিতে তার অফিস এ যায় তখন সে জামাটা দেখে হাসে আর বলে এই জামা পড়ে আমি অফিস এ আসব ? সে জামাটা তার শালাকে দিয়ে দিতে বলে । এতে মেয়েটার মন খারাপ হয় ।
পরে সে পূরনো ডাইরি থেকে তার ইউনিভার্সিটির এক ছেলে বন্ধুকে ফোন করে তার খোজখবর জানতে চায় । ছেলেটা তখন আর এক মেয়ের সাথে তার মনের আশাপুরণ করে সবে বসে আছে !!! এরকম ছেলেটা সব সময় করে । তার মেয়ে বন্ধুর অভাব নাই । কিন্তু কোথায় জানি একটা অপূণতা গ্রাস করতে থাকে । সে মেয়ে তার সাথে একদিন দেখা করতে চায় । মেয়েটা একদিন তার বাসায় আসে ।
অনেক কথা বলার পর ছেলেটা মেয়েটাকে প্রস্তাব দেয় তার সেই অপূণতা পুরণ করবার জন্য ।
একমাত্র মেয়েটাই পারে তার আশা পুরণ করতে । কারণ মেয়েটার বিয়ের আগ পর্যন্ত ছেলেটাই মেয়েটার সবকিছু ছিল । ছেলেটা একমাত্র শারিরিক মিলন ছাড়া মেয়েটার সাথে সবকিছু করেছে । কোন কিছু বাদ রাখে নাই । কিন্তু ওই একটা কারণে সে মেয়েটার কাছে সময় চায় । এটা করলে ছেলেটার জীবন এ গতি আসবে । ইউনিভার্সিটি তে থাকতে ছেলেটার কোন বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ না থাকাতে মেয়েটার উপায় ছিল না বিদায় বলে আসা ছাড়া ।
মেয়েটা ছেলের এই প্রস্তাবে রাজি হয় নাই । অনেক বুঝাচ্ছিল ছেলেটা সেই মেয়েকে । মেয়ে এটা মানতে পারছিল না ।
এতটুকু দেখে আমার আর রুচি হয় নাই দেখার ।
এই কাহিনি বলার কারণ হচ্ছে এভাবেই আমাদের সমাজে পরকীয়া চরম আকার ধারন করছে । এ যেন ঠেকানোর মতন না । কেনো এতো অধঃপতন আমাদের মধ্যে ?? কি করে আসলো এই সব নোংরা ব্যাপার সেপার ?? এর জন্য দায়ী কে ? আসলে আমি মনে করি মিডিয়া গুলোর ভুমিকা এখানে অনেক বেশি থাকে । এটা অনেকে মানতে চাইবেন না । কিন্তু এটাই এখন বাস্তবতা ।
কারণ আমাদের সমাজে এখন পারিবারিক বন্ধন আগের মত নেই বললেই চলে । আর এসব এখন ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে আমাদের কাছে । আর আমরা চুপচাপ দেখে যাচ্ছি আর হজম করে ফেলছি । কারও যেন কোন দায়িত্ত নেই !! একটা ছোট বাচ্চার কাছেও এসব পৌছে যাচ্ছে সহজেই । যা আগে এটা ভাবা যেত না । যখন টি ভি তা ছাড়া হয় তখন বাসার ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে কাজের মেয়ে অবধি সবাই আসে দেখতে । তখন তাদের সামনে এই সব পরকীয়া নামক ব্যাধিমাখা যদি ছবি বা নাটক চলতে থাকে তাহলে তাদের মধ্যে এর প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক ।
টি ভি শুধু কেন ?? পত্রিকা , রেডিও , ম্যাগাজিন সবখানেই এর অগাধ বিচরন । আর বাচ্চাকে কে মানা করবে এগুলা দেখার জন্য ? যারা মানা করবে তারাই হয়তো এসব এর কেয়ার করছেন না । আর এরকম ভাবেই বাচ্চারা আস্তে আস্তে বড় হয় তখন তারা এই পথে চলে জেতেই চাইবে । কারণ কথায় আছে নিষিধ্ সবকিছুর প্রতি মানুষের আগ্রহ সবসময় থাকে । এটাও হয়ত আমাদের ভাবা উচিত যেই পরিবার এ মা আর বাবা পরকীয়াতে লিপ্ত সেখানে তার সন্তানের শিক্ষা কতটুকু হতে পারে ??
আর ভারতীয় এসব চ্যানেলে রগরগা অনুষ্ঠান দেখে আমরা যতটুকু না শিক্ষনীয় কিছু শিখছি তার থেকে শিখছি কি করে এসব ব্যাধি সমাজে বিস্তার ল্াভ করাতে হয় । শুধু পরকীয়া কেন ?? এখানে বলা যায় - ফ্রী সেক্স এর কথাও । উপরে উল্লেখিত কাহিনিটা ফ্রী সেক্স ছাড়া আর কি হতে পারে ?? আপনারাই বলুন ।
দিন যত গড়াচ্ছে ততই আমাদের বোধশক্তি লোপ পাচ্ছে । আমরা নিজেদের কে একটা শক্ত ভিতের উপর দাড়া করাতে পারছি না । এরকম সামাজিক অবক্ষয় তাও আবার এত ভহাবহ আকার ধারন করে !!! এভাবে আর কতদিন আমাদের সামনেই চলতে থাকবে ???