ঢাকা শহরের সবগুলো প্রবেশদ্বারে দ্রুত বিবাহ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত। অবিবাহিত গ্রাম্য যুবকেরা শহরে ঢোকার পূর্বেই তাহাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক। অন্যথায় তাদের আবাসন সঙ্কটে পরিতে হইবে। যে সব যুবকেরা ইতিমধ্যেই ঢাকা শহরে অবস্থান করিতেছেন, তাহারা বাড়ীওয়ালাদের চাপের মাত্রা ইতিমধ্যেই টের পাইয়াছেন। বিশেষ করে কিছুদিন আগে শ্যাওড়াপাড়ায় জোড়া খুনের ঘটনার পর থেকে হাজারো ব্যাচেলর বাড়ি ছাড়ার নোটিশ পাইয়াছেন। আজ ২ দিন যাবত আমরা ৪ নবীন বাসা খুজিতে শ্যামলী এলাকায় ঘুরিতেছিলাম , বিশেষ এক অভিজ্ঞতা হইলো-
গতকাল একটি বাসায় TO-LET দেখিয়া আগাইয়া গেলাম, দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করিলাম, "ভাই কয় তলায় ভাড়া হবে?"
সে যেমন বসিয়া ছিল তেমনি বসিয়া রইল।
আমি আবারো জিগাইলাম "ভাই কয় তলায় ভাড়া হবে?"
সে বলিল, ভাড়া হইবো না।
আমি বলিলাম, তাহলে ভাই TO-LET ঝুলাইয়া রাখছেন ক্যান?
সে বলিল, এইটা ফ্যামিলি বাসা, ব্যাচেলর হইব না।
আমারা সকলেই নীরবে বাহির হইয়া আসিলাম। তারপর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করিতে লাগিলাম হে খোদা আমাদের তাড়াতাড়ি বিবাহের ব্যবস্থা করিয়া দাও।
অবাক হইলাম যখন ১০-১২ টি বাড়ি থেকে একই বক্তব্য শুনতে হইলো। সন্ধ্যার দিকে আমাদের মাথা ব্যপক উত্তপ্ত, এই সময় আরো একটি বাড়ির সন্ধান পাইলাম। কথা হল এক বাড়িওয়ালী আন্টির সাথে। যথারীতি সেও বলিল ব্যাচেলর ভাড়া হবে না।
আমি বলিয়া উঠিলাম, ক্যান ভাড়া হইবে না?
সে বলিল, ব্যচেলররা খুনাখুনি করে, শ্যাওড়াপাড়ার কাহিনী জানো না?
আমি বলিলাম, একজন দুইজন দিয়া বিবেচনা হয় না।
সে বলিল, হয়। হাড়ির ভাত সিদ্ধ হইছে কিনা, একটা ভাত টিপলেই বুঝা যায়।
আমি বলিলাম ঠিক আছে আন্টি, আমি ফ্যামিলি বাসা নিব।
সে বলল, তোমরা ফ্যামিলি পাইবা কই?
আমার পাশ থেকে মাথা গরম দোস্ত বলিয়া উঠিল, আমারা কি মাটি ফাইটা বাহির হইছি??
আমারা সকলেই টাস্কিত হইলাম। এবং দ্রুত গতিতে ঐ স্থান ত্যাগ করিলাম। ঐদিনের কার্যক্রমও স্থগিত করিলাম।
আজ আবার নতুন উদ্যমে শুরু করিলাম। শুরুতেই দারোয়ানদের জন্য কোকের একটি বোতল কিনিয়া লইলাম। এই কোকের বোতল দারোয়ানের মন গলাইয়া বাড়ীওয়ালা পর্যন্ত যাইবার পথ সুগম করিয়াছিল, তবে বাড়ীওয়ালার মন গলাইতে পারিলাম না।
সর্বশেষ রাত ৮ টার দিকে এক বিনয়ী বাড়িওয়ালীর সন্ধান পাইলাম, বুকের মধ্যে পুঁটিমাছ ফাল দিয়া উঠিল। বাড়িওয়ালী আন্টি আমাদের বিনয়ের সাথে তার বাসায় প্রবেশ করিতে বলিল। আমারা আরো খানিকটা পুলকিত হইলাম। অতঃপর সে আমাদের বসাইয়া তাহার জীবন ইতিহাস বলিতে লাগিল, আমারা শুনিতে লাগিলাম। মাঝে মাঝে জি আন্টি! জি আন্টি!! বলিয়া তাহাকে সাপোর্ট করিতে লাগিলাম। সে আমাদের কাছে তাহার শৈশব- কৈশোর বর্ণনা করিতে লাগিল। অবাক হইলাম যখন সে তাহার প্রথম সন্তান জন্ম দেয়ার ইতিহাস বলিতে লাগিলেন। টানা ৩০-৩৫ মিনিট তাহার বাক্য হজম করিবার পর তাহার টেবিলে মস্তিষ্ক চিকিৎসার টেবলেট দেখিলাম।
তখন ব্যপারটা পরিষ্কার হইলো। আমারা কিঞ্চিৎ মানসিক রোগীর পাল্লায় পড়িয়াছি। তখন আমাদের ভিক্ষা চাইনা, কুত্তা সামলাও অবস্থা। ঘণ্টা খানেক পর তাহার হাত হইতে মুক্তি পাইলাম। এই হল আমার দুই দিনের বাসা খোজার অভিজ্ঞতা।
প্রস্তাবনাঃ
→ সংসদ ভবনের পাশে কয়েক একর জায়গা নিয়ে ব্যচেলর পল্লী গঠন করা হোক।
→ অথবা রাজধানীরে প্রবেশের পূর্বে বিবাহ বাধ্যতামূলক করা হোক।
→ আসুন সবাই নতুন নতুন প্রস্তাবনা যোগ করি।
সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ হয়েছে, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।