একদিন আগে, আমি আমার ফেসবুক ওয়ালে একটা পোস্ট দিই।
সম্প্রতি সৌদি ফেরত ৬৬ জন বাংলাদেশী গৃহকর্মীর সাথে হওয়া নির্মম যৌন নির্যাতনের প্রেক্ষিতে।
সৌদির অধিকাংশ ধনকুবের-ই মনে করে যে, তাদের বাসায় কাজ করতে আসা ভিনদেশী মেয়েরা হলো দাসী, এই দাসীর সাথে যথেচ্ছা ব্যবহার করা যাবে, এবং এদের সাথে যৌন মিলনেও কোন বাঁধা নেই। তাই তারা এই বিদেশ থেকে পেটের দায়ে কাজ করতে যাওয়া অসহায় মেয়েদের একবার পিতা, আরেকবার ছেলে মিলে ধর্ষণ করে। এবং ইসলামের লেবেল মেরে এটাকে তারা বৈধ করে নেয়।
যেহেতু দাসীদের সাথে যৌন মিলন করা ইসলামে বৈধ ছিলো, এই প্রেক্ষাপট ধরে তারাও কাজের মেয়েদের দাসী ভাবে আর তাদের সাথে মিলনে নেমে পরে, নির্মমতার চরম দৃষ্টান্ত।
আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছরই অনেক সংখ্যক মহিলা সৌদিতে কাজ করতে যায়, গৃহকর্মী হয়ে। কিন্তু এই মেয়েদের সাথে সৌদির কুলাঙাররা নির্মম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখায়। আর তারপর, পেটের দায়ে অসহায় হয়ে নিজের পরিবার পরিজন, এলাকা দেশ ছেড়ে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বিদেশে চলে যাওয়া মেয়েরা এমন নির্মমতার স্বীকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়, এবং ফিরে এসে যখন তাদের সেই করুণ কাহিনী বর্ণনা করে টিভিতে, পেপারে; তখন আমার দু চোখ বেয়ে পানি পরে। খুব কষ্ট লাগে।
আর এই অনুভূতির কথা ব্যক্ত করতে যখন আমার ফেসবুক ওয়ালে একটা পোস্ট দেই, সৌদিদের নিন্দা করে, দাসীর সাথে সেক্স করার বিষয়ে ব্যাঙ্গ করে, তখন আমি আমার ধর্মান্ধ ফেসবুক বন্ধুদের কাছে খারাপ মানুষ বলে গণ্য হই। তারা আমাকে ইসলাম বিদ্বেষী বলে গালাগালির পাহাড় ছুড়তে থাকে। এমন অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে থাকে, কমেন্ট করতে থাকে যে আমি খুব হতাশ হয়ে যাই।
এমনকি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত অপরিচিত অনেকে মিলে আমাকে মারার প্লান করতে থাকে, আমাকে হুমকি দিতে থাকে।
আধুনিক এই সভ্য সমাজে বসবাস করেও আমরা কতোটা নীচু মনা, সৌদিকে গালি দিলে আমাদের ধর্মে আঘাত লাগে, ইসলামের একটা বিষয় নিয়ে কথা বললে তাদের পছন্দ না হলে গালাগাল করে, মারার হুমকি দেয়।
আমরা আর তাহলে সভ্য হতে পারলাম কই। এ থেকে তো আইয়ামে জাহিলিয়াত মন্দ ছিলো না মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৮ সকাল ৭:৪৫