প্লিজ শেখ মুজিবকে শান্তিতে ঘুমোতে দিন!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বাঙ্গালি জাতিরজনক! অনেকেই তাকে বাঙ্গালি জাতিরজনক মানতে নারাজ! কেন? তা বলার আগে আপনাদের একটা যুক্তি দেখাই সে বাঙ্গালি জাতিরজনক।
“”প্রত্যেক জাতিরই একজন জনক থাকে,পাকিস্তান, ভারত,সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, ইরান,ইউএসএ সহ অসংখ্য উদাহরণ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এটা মানতে নারাজ সেটা হলো তারা ইসলামের প্রসঙ্গটানে ‘ইব্রাহীম (আ) মুসলিম জাতিরজনক। তাই বঙ্গবন্ধুকে জাতিরজনক বললে ইমান থাকবে না’ তাদের যুক্তিটাও সঠিক। তারা কিন্তু বলে না বাঙ্গালি জাতিরজনক বললে ইমান থাকবেনা। ঘোমরটা এখানেই। শেখ মুজিব বাঙ্গালি জাতিরজনক, সে মুসলিম আর মুসলিম জাতিরজনক ইব্রাহীম (আ) এখানে কারো দ্বিমত আছে? যদি থাকে, যে শেখ মুজিবকে বাঙ্গালি জাতিরজনকও বলা যাবেনা ইমান থাকবেনা, আসলে তারই ইমান নাই,তাই এমন মিথ্যা সে বলতে পারে,সে ধর্মটাকে এখানে ব্যবহার করতেছে,শুধু ব্যক্তিগতভাবে তাকে পছন্দ না তাই।
ধরুন, আপনার দাদা চৌধুরী পরিবারের প্রধান,সব সিদ্ধান্ত সে নেয়,আপনারা বাপ-চাচারা আবার ৭/৮ জন। তাদের পরিবারের ভিতরকার সিদ্ধান্ত আবার তারাই নেয়। এখন আপনার বাবাও কিন্তু পরিবারের প্রধান আর সেটা হলো চৌধুরী পরিবারের ক্ষুদ্র অংশ আপনার পরিবারের। এখন যদি বলা হয় আপনার বাবা আপনার পরিবারে প্রধান,তাহলে কি আপনার দাদাকে অসম্মান করা হবে? হবে না। যদি দাবী করা হয় চৌধুরী পরিবারের প্রধান তাহলে অসম্মান করা হবে।
আরও সহজ ভাবে,ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তার থাকে ৯ জন মেম্বার। ৯ মেম্বার ৯ ওয়ার্ডের প্রধান।
এখন ইউনিয়নকে মুসলিম জাতি মনে করেন,চেয়ারম্যান হলেন ইব্রাহীম (আ) বাকি ৯ ওয়ার্ড হলো বিভিন্ন দেশ,তাদের প্রতিনিধি তথা মেম্বার বঙ্গবন্ধু, জিন্নাহ, নেহরু,সৌদ,মাহতির মুহাম্মদ সহ অন্যরা। ক্লিয়ার? যদি এখানেও প্যাচ ধরেন।
আমাদের নেতা মুহাম্মদ (সা), এ বিষয়ে কারো দ্বিমত আছে? নাই। তাহলে মিছিল করেন কেন?
“”তোমার নেতা আমার নেতা,অমুক ভাই,তমুক ভাই””
ইমান আছে?
বাঙ্গালি তথা বাংলাদেশের জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু। এদেশে শুধু মুসলিম না হিন্দু,খ্রিষ্টান সহ অনেক ধর্মের লোক আছে। সো এখানে ধর্মের দোহাই দিয়ে ভুল বুঝানো মানে,ধর্মকে নিজের মত করে ব্যবহার করে একটা সুযোগ নেয়া।
অন্যান্য দেশের জাতিরজনক নিয়ে এত বিতর্ক নেই,সবাই যার যার জাতিরজনকে সম্মান করে। আমরা কেন করি না? কেন তাকে নিয়ে এত এত সত্যমিথ্যা আর বিতর্ক তৈরি হচ্ছে?
“”এর মুলে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের কিছু চাটুকার নেতার কারনে””
ইসলাম বলে
“”অন্য ধর্মকে গালি দিও না, তাহলে তারাও তোমার ধর্মকে গালি দিবে””
বিএনপি সহ বাংলাদেশের সকল দলের লোকেরা এক কথায় স্বীকার করেন শেখ মুজিব একজন ভালো লোক এবং নেতা হিসাবেও ভালো ছিলেন। খালেদেজিয়া সংসদে ইভেন এখনো যদি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয় সেখানে শুরুতে শহীদ জিয়ার নামের সাথে শেখ মুজিবকেও শ্রদ্ধা সহকারে স্মরণ করেন। তারেক রহমান একবার গভীর রাতে ঢাকা ফেরার পথে,বঙ্গবন্ধুর কবর যিয়ারত করে আসেন। ঘটনার সাল ২০০১ মেবি। বাংলাদেশ প্রতিদিনে কয়েকবছর আগে ছবি সহ তা প্রকাশ পায়।
তাহলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এত বিতর্ক কেন। আমি শেখ হাসিনার প্রায় প্রতিটা সভায় দেখলাম জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা রটান তার বদনাম যতটা সম্ভব করেন।
২০০৯ এ ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামীলীগ সরকার প্রমাণ করার চেষ্টা করলো বঙ্গবন্ধকে খুন করার পিছনে দায়ী মেজর জিয়া। এতে করে আওয়ামী নেতারা কিছুটা চাঙ্গা,বিএনপি হটাতে।
বিএনপিও বসে নেই,তারাও প্রমাণ করে দিতে চাইলো জিয়া হত্যার সাথে শেখ হাসিনা জড়িত,জিয়া হত্যার দিন শেখ হাসিনা কেন ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন প্রশ্ন রেখে। এবার চাঙ্গা বিএনপি নেতা কর্মীরা।
বঙ্গবন্ধু মানুষকে খুব সহজে বিশ্বাস করতেন। কেউ তেল মারলে সেটাও। আর ফলাফল তার কাছের এবং ঘনিষ্ঠ লোকদের হাতেই তিনি নিহত। বাপকা বেটি শেখ হাসিনা তিনিও বাবার আদর্শ ধরে রেখেছেন। সেই সময়ের বঙ্গবন্ধুর গামছাখানা যে এগিয়ে দিয়েছিল,আজ সে কোন না কোনভাবে মন্ত্রী।
আওয়ামী নেতারাও বুঝেগেল,বড় হতে হলে কি করতে হবে? শেখ হাসিনার কাছে আসতে হলে কি করতে হবে? তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নকে সামনে নিয়ে আসলো। বঙ্গবন্ধুকে এত এত স্বপ্ন দেখাতে থাকলো যে, যে পরিমানের স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে,তা দেখতে হলে শেখ মুজিবকে সারাজীবন ঘুমের মাঝেই জেগে থাকতে হতো!
স্বপ্ন নিয়ে তাদের চাটুকারিতা এমন এক পর্যায়ে চলেগেছে যে,তখনকার এক মন্ত্রী বাংলালিংকের 3G উদ্ভোদন করতে যেয়ে বললেন
“”3G বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল”” থ্রীজি ত পরের কথা বঙ্গবন্ধু মোবাইলফোনের নাম শুনেছেন? তাহলে এই অতিরঞ্জিত কথাবার্তা কেন? সব শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য।
এর বাস্তব প্রমাণ, হায় মুজিব,হায় মুজিব মাতম এবং ছবি বিকৃতির নামে ইওএনওর বিরুদ্ধে মামলা।
বাংলাদেশে সব সময়ই দলাদলি চলে। জনগণ কেমন যেন যুদ্ধ যুদ্ধ একটা ভাব নিয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকে। যে কোন দাবিদাওয়ায় শ্লোগান “”জ্বালোরে জ্বালো,আগুন জ্বালো”” আপনি একটা কাজ করবেন তার প্রশংসা বা সমালোচনা নির্ভর করে আপনি কোন দলের তার উপর। এখানে নিরপেক্ষ থাকাটা একটা অভিশাপ।
খুব ছোটবেলায় যখন আব্বু আম্মুর কাছে বা বইয়ে মুক্তিযদ্ধের গল্প পড়তাম। বিশেষ করে বীরশ্রেষ্ঠদের সেই দুরন্ত অভিযানের গল্প যখন পড়তাম তখন আমারও ইচ্ছে হত,আমিও মুক্তিযুদ্ধ করব। আমিও শহীদ হবো দেশের জন্য। তখন মনে হতো যুদ্ধ বুঝি তখনো চলছে।
সেই তখন থেকে আজ পর্যন্ত স্বপ্নে ৩ বার যুদ্ধেগিয়েছি যার সবগুলাই আমেরিকার বিরুদ্ধে,৩ বারই মারাগেছি। দেশ স্বাধীন করতে পারি নাই। এটা নিছক একটা বালকের কল্পনা মাত্র।
“” মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি””
গানটা শুনে কেমন যেন মনে হতো,কবিতা,নতুন গান আরও আরও কি কি করার জন্য যুদ্ধ করি। চিন্তা করলাম আমি ত গান কবিতা লিখি কই যুদ্ধ ত করি না।
বড় হয়ে বুঝলাম আসলেই আমরা যুদ্ধেলিপ্ত আছি এখনো।
জাতিকে দু-ভাগে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। মসজিদ কমিটি,স্কুল কমিটি থেকে এমন কোন জায়গা আছে কি যেখানে আওয়ামী বনাম বিএনপি যুদ্ধ হয় না? এর যুদ্ধ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে কেন জানি বেশি হয়। স্কুল ক্যাপ্টেন নির্বাচনেও আওয়ামী বিএনপি। আমাদের বাচ্চারা কি শিখবে? অসুস্থ এক প্রতিযোগিতা, বিভক্তি নিয়ে দেশ এগুচ্ছে।
আওয়ামীলীগ যদি আজ পাকিস্তানকে সমর্থন দিত,বন্ধু রাষ্ট্র বলত তাহলে অন্যদের কাছে ভারত হতো খুব কাছের বন্ধু। বর্তমানে যার উলটা চলছে। সব খানেই দল।
শেখ মুজিব পাট শীল্পে জোর দিয়েছিলেন,মেজর জিয়া তৈরি পোষাক শিল্প এদেশে নিয়ে আসেন। ফলাফল বিএনপির আমলে পাট শিল্প শেষ নতুন বাজার ধরতে পারে নাই। আওয়ামীলীগ আসলে পোষাক শিল্পে ঝামেলা বেশি হয়। জিডিপিতে যদি অবদান কম থাকত,এই শিল্পও গেছিলো,এখন যা আছে, অস্থিরতা নিয়ে।
রাজনীতি করা হয় দেশেরটানে,দেশের মানুষের জন্য কিছু করব সেই কথা চিন্তা করে। আমি একদল করি বলেই যে অন্যদলের সমর্থকরা আমার কাছে শত্রু হয়েযাবে তা ত হওয়ার কথা না। পাশাপাশি থেকে যে যার বিশ্বাসের জায়গা থেকে কি রাজনীতি করতে পারে না? অন্যদের গীবত বাদ দিয়ে নিজেরা কি করতে পারলাম না,নিজেরা কি করতে চেয়েছি,ফিউচারে কি করব,বর্তমানে কি করছি? এসব নিয়ে কি কথা বলা যায় না? নিউজ দেখা এবং নেতাদের ভাষণ শুনা গীবত শুনা একই কথা!
এই গীবত যে বেশি করতে পারে সে ততবেশি হিট নেতা। ওবায়েদুল কাদের,আন্দালিব পার্থ,পলক,গোলাম মাওয়াল রনি, আরও কিছু তরুন নেতা ছিলেন যারা গীবত খুব একটা করতেন না। এখন করেন,কারন দল প্রধানকে খুশি রাখতে,মিডিয়ায় নিউজ হতে,দল চাঙ্গা রাখতে বলতে হয়। সবাই দোষ দিতে, ধরতে ব্যস্ত। এই দোষ দেয়াটা এমন পর্যায় চলে গিয়েছিল যে “”রানা প্লাজার ধ্বস বিএনপি জামাতের ঘাড়ে দেয়ার জন্য নাড়াচাড়া তত্ত্ব পর্যন্ত দিয়েছিল আমাদের দেশের এক মন্ত্রী ”’
এই গীবত,দোষ ধরাধরি নিয়ে এতটাই চাটুকারিতা চলে যে নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে কালিমা লেপন করতে করতে মিথ রচনা করে। আর যার থেকেই দেশের মহান মহান নেতারা আজ বিতর্কিত, অপমানিত, অবহেলিত,অসম্মানিত। একদলের কাছে সম্মানিত হলে তাদের বিরোধী দলের কাছে চরম ঘৃণার পাত্র।
বঙ্গবন্ধু, জিয়াকে নিয়ে তেমনি কাদা ছোড়াছুঁড়ি চলছে। অথচ দুজনেই দেশের জন্য কাজ করেছেন,দেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে দলমত সবার মনের সম্মানের জায়গায় বসাতে চাইলে আওয়ামীলীগকেই এগিয়ে আসতে হবে। জিয়ার চরিত্র হনন বন্ধ হলে শেখ মুজিব নিয়ে কটুক্তি অনেক অনেক কমেযাবে। কিভাবে?
“”আপনার বাবা একজন দরবেশ,তিনি কোন পাপ করেন নাই এবং তার বিরুদ্ধে দোষ ধরার মত কিছুই নাই। আরেকজনের বাবা মাফিয়া ডন। আপনি প্রতিটা জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন মাফিয়ার দোষত্রুটি, একবার,দুবার, চারবারের সময় হলেও কিন্তু মাফিয়ার সন্তান আপনার দরবেশ বাবার ১০০ টা দোষ বের করে দিবে। তার মানে ওর বাবাকে গালি দিয়েছেন, সেও আপনার বাবাকে গালি দিচ্ছে””
“”মানুষের গুনের থেকে নেগেটিভ দিক তুলে ধরা অনেক সহজ। আমি আপনার সামনে দিয়ে হেটে গেলে আপনি আমার গুন সম্পর্কে ধারনা না পেলেও দোষ ধরতে পারবেন, ছেলেটা,এভাবে হাটে,এদিকে তাকায়,তাকায় না,কত শত দোষ…….””
আওয়ামীলীগ, বিএনপির নেতারা এই গালাগাল করে আমাদের দুই মহান নেতার চরিত্র হননে ব্যস্ত। যে যতবেশি চাটুকারিতা করবে,দলে তার গ্রহণযোগ্যতা বেশি। আর এদের দেখাদেখি গ্রামে,পাড়া,মহল্লায় সাধারণ সমর্থকরাও এদের সাথে যুক্ত হয় নোংরা খেলায়।
আওয়ামীলীগ নেতারা বঙ্গবন্ধুকে আর কত গালি খাওয়াবেন বিপক্ষীয় লোকদের। অনেক ত হলো, এবার লোকটাকে শান্তিতে ঘুমোতে দিন। তাকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর নামে মিথ্যা না বলে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সবার আগে জিয়ার নামে কুৎসা রটানো বন্ধ করতে হবে। না হয় সম্ভব না।
সবাই যে সবার কাছেই জনপ্রিয় হবে,সবার কাছেই ভালো হবে তা ত না। ভালো মন্দ সবার মাঝেই আছে,দুইয়ে মিলেই মানুষ।
“”বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহামানব বলা হয় মোহাম্মদ (সা) কে। তাকে নিয়েও সমালোচনা হয়, অথচ তার চরিত্রে কোন খুত ছিল না। “”
“”ইসলাম ধর্ম প্রচারক আর ইহুদী, খ্রিষ্টান প্রচারকদের নিয়ে ঝামেলা খুবই কম হয়। ইহুদী খ্রিষ্টানরা যদি আমাদের নবীকে অপমানকর কিছু বলে আমরা শুধু প্রতিবাদ করি কিন্তু তাদের ধর্মপ্রচারক নিয়ে কথা বলি না। কারন আমরা যদি তাদের ধর্মপ্রচারকে গালি দেই তবে আমাদের ধর্মেরই আরেক নবীকে গালি দেয়া হয় তাই গঠনমূলক ভাবে মিথ্যার প্রতিবাদ করি।
কিন্তু হিন্দুদের ক্ষেত্রে কিন্তু এটা আবার ভিন্ন। হিন্দু ধর্মের কোন কুলাঙ্গার যদি কিছু করে,তবে এ ধর্মের কিছু কুলাঙ্গারও তাদের মত করে প্রতিবাদ করে। ফলাফল দুই ধর্মের প্রচারককেই অবমাননা করা হয়,যা কখনই কাম্য নয়।””
ভাসানী,মুজিব,জিয়া,সহ ছয় নেতাকে নিয়ে যদি সব দল সমানভাবে শ্রদ্ধা করে,জাতিরজনক নিয়ে বিতর্ক থাকবেনা। আইন করে জাতিরজনক নির্বাচন করা লাগেবে না! সবাই সম্মান করবে এই মহান নেতাদের।
একটা গল্প দিয়েই লিখাটা শেষ করি…
“”বউ শাশুড়ির মাঝে প্রচণ্ড ঝগড়া লেগেই আছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। বউ এর কাছে বদনাম করলে, শাশুড়ি আরও দুজনের কাছে বউয়ের বদনাম করে।
বউ এবার সিদ্ধান্ত নিলো শাশুড়িকে মেরেফেলবে,তাই সে এক কবিরাজের কাছে গেল। কবিরাজ সব শুনে তাকে এক বক্স বিষ আর একটা তাবিজ দিয়েছে। আর বলেদিল
‘ এই তাবিজ তোমার জিহ্বার নিচে দিয়ে রাখবে আর বিষ প্রতিদিন অল্প অল্প করে শাশুড়িকে খাওয়াবে। সে ধীরে ধীরে তিন মাসের ভিতর মারাযাবে। আর তুমিই যে তাকে মারছ সেটা যাতে কেউ টের না পায় তাই তার সাথে ভালো ব্যবহার করবে।’
বউ বাসায় এসে তাই করতে থাকলো। শাশুড়ি বউকে খোঁচা মেরে কথা বল্লেও বউ বলতে পারেন না,কারন বউয়ের জিহ্বার নিচে তাবিজ,সে সব মুখ বুঝে সহ্য করতে লাগলো আর মনে মনে বলতে লাগলো
‘আর ত তিন মাস,মরেই ত যাবে। থাক, যা খুশি বল পাত্তা দিচ্ছি না’ সে বিষ বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে লাগলো আর রাতদিন শাশুড়ি সেবা করতে থাকলো,যাতে কেউ না বুঝে সে ই বিষ খাওয়াইছে।
কয়েকদিন যাওয়ার পর এদিকে শাশুড়ি চিন্তা করলো
‘আহারে মেয়েটাকে এত কথা বলি আর সে কোন কথা না বলে দিনরাত আমার সেবা করে,নাহ ওর সাথে এমন ব্যবহার করা যাবে না’
এক মাস যাওয়ার পর বউ দেখলো শাশুড়ির মরার কোন লক্ষণ নাই,উলটো মোটা তাজা হচ্ছে।সে আবার গেল কবিরাজের কাছে। কবিরাজ এবার বিষের পাওয়ার বাড়িয়ে দিল। বউও শাশুড়ির যত্ন বাড়িয়ে দিল।
২ মাস পার হলে বউ দেখলো তার শাশুড়িও তার যত্ন নিচ্ছে নিজের মেয়ের মত করে। আর তাদের ভিতর আর সেই আগের ঝামেলা নাই। আরও পনের দিন পর সে অনুভব করলো তাকে যদি হারাই তবে আমি আমার মাকেই হারাবো। তার ভিতরে অস্থিরতা শুরু হয়েগেল। সে এবার তার শাশুড়িকে বাচানোর জন্য গেল সেই কবিরাজের কাছে।
কবিরাজ জানালো সম্ভব না,কয়েকদিন পরেই মারাযাবে। সে কবিরাজের কাছে অনেক কান্নাকাটি করলো। সে তার ভুল বুঝলো এখন সে তার শাশুড়িকে ছাড়া থাকতেই পারবেনা। সে যেন তার শাশুড়িকে বাচানোর জন্য কিছু করে।
কবিরাজ এবার মুচকি হাসলেন,জানালেন
‘তোমার শাশুড়ি আপাদত বিষের জন্য মরছে না,কারন ওটা বিষ ছিল না,ভিটামিন জাতীয় খাবার ছিল। আর মুখে তাবিজ দেয়া হয়েছিল,যাতে শাশুড়ি কিছু বল্লেও সে যেন চুপ থাকে,কথা কম বলে। আর সেই কথা কম বালার কারনেই তারা আজ চোখেরবিষ থেকে দুজনের মা-মেয়ে হয়েগেল।””
গল্পটা শুধু আওয়ামীলীগ, বিএনপির জন্য না। আমাদের সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।