কে এই রাজাকারের দালাল ড. পিয়াস করিম?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার ঢাকার শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দেয়া ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পিয়াস করিমের বাবা ও নানা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী। তারা ছিলেন জেলা শান্তি কমিটির নেতা। শুধু তাই নয় মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম ও নানা জহিরুল হক লিল মিয়ার বাড়িতে গ্রেনেড চার্জ করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের পর ড. পিয়াস করিমের বাবা অ্যাডভোকেট এম কে করিমকে দালালির অপরাধে দালালি আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি অনেকদিন কুমিল্লা কারাগারে বন্দি ছিলেন।
ড. পিয়াস করিম কুমিল্লা শহরের জজকোর্ট রোডের অ্যাডভোকেট এম এ করিমের ছেলে। তার বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা শান্তি কমিটির নেতা ছিলেন। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতি করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি হোমনার রামপুরে। পিয়াস করিমের বাবা এম এ করিম বিয়ে করেন আরেক মুসলিম লীগ নেতা জহিরুল হক লিল মিয়ার মেয়ে বাচ্চুকে।
জহিরুল হক লিল মিয়া এর আগে আওয়ামী মুসলীম লীগের সভাপতি ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি অংশ নেন। ছিলেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় জহিরুল হক লিল মিয়া মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার জজকোর্টের উত্তর পাশে জহিরুল হক লিল মিয়ার বাড়ি এবং জজকোর্ট রোডের এম এ করিমের বাড়িতে গ্রেনেড চার্জ করেছিলেন। আর এ গ্রেনেড চার্জে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল কবির বীর প্রতীক, বাহার উদ্দিন রেজা বীর প্রতীক ও মুক্তিযোদ্ধা খোকন।
বাহার উদ্দিন রেজা বীর প্রতীকের কাছ থেকে জানা গেছে, মেলাঘর থেকে কমান্ডার হায়দারের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা জহিরুল হক লিল মিয়া এবং এম এ করিমের বাসায় গ্রেনেড হামলা করা হয়। তাদের বাড়িতে পাকিস্তানি বাহিনীর যাতায়াত ছিলো। তিনি জানিয়েছেন, কী পর্যায়ে গেলে একজন কমান্ডার তাদের বাড়িতে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা বুঝে নিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলে দালাল আইনে গ্রেফতার হন ড. পিয়াস করিমের বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম। তিনি অনেকদিন কুমিল্লা কারাগারে ছিলেন।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পর বাবাকে বাঁচাতে পিয়াস করিম কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগে নাম লেখান। যদিও জেলা ছাত্রলীগে তার কোনো পদবি ছিল না। সে সময়ের জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুস্তম আলী তার ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পিয়াস করিম কুমিল্লা মর্ডান স্কুল, কুমিল্লা জিলা স্কুল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়াশুনার পর আমেরিকায় চলে যান।
স্বাধীনবাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অ্যাডভোকেট রুস্তম আলীর কাছ থেকে জানা গেছে, পিয়াস করিম তার বাবাকে বাঁচাতে ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছিলেন কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত সাথে থাকেননি। তিনি জানান, পিয়াস করিম নকশালের রাজনীতির সাথেও যুক্ত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ড. পিয়াস করিম শুক্রবার রাতে এক টক শোতে শাহবাগের আন্দোলনকে অবৈধ আখ্যা দেন। এখবর শাহবাগে ছড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাকে রাজাকারের দালাল আখ্যা দিয়ে বয়কটের ঘোষণা দেয়া হয়।
লেখক: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও সম্পাদক, দৈনিক কুমিল্লার কাগজ,
সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা প্রেসক্লাব
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সত্যি বলছি, চাইবো না
সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখস্থান.....
শেখস্থান.....
বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন