কারেন্ট একাউন্ট করব তাই টিন নম্বর দরকার। গত কাল আয়কর মেলা থেকে তথ্য নিয়ে ফেরত এলাম কারন শুধু ঢাকাবাসীদের জন্য অফিসার্স ক্লাবে মেলা আয়োজন করা হয়েছে। নারায়নগঞ্জের অধিবাসী হওয়ার কারনে আমাকে লোকাল কর অফিস থেকে টিন নম্বর নেওয়ার জন্য বলা হল।
আজকে সকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ অফিসে চলে গেলাম এবং একজন মহিলার হাতে পরলাম।কেন টিন নম্বর দরকার, কি করি জানতে চেয়ে ১০০০ টাকা চাইল। আমি তাকে আয়কর মেলার কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে বললাম এর কোন ফিস নেই এবং বিনামূল্যে টিন নম্বর করতে চাই।
সে আমার কাগজপত্র দেখে অন্য ডিপার্টমেন্টে পাঠাল যেটা আমার কর সার্কেল। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার আসার উদ্দেশ্য জেনে খরচের কথা বলল। আমি অবশ্য সিদ্ধান্ত্য নিয়েছি যে ঘুষ দিয়ে টিন নম্বর নিব না, তা দিলে দিক.... না দিলে না দিক। উনি আমি কি করি জানতে চাইলে বেকার বলে অবহিত করলাম।
একথা শুনে উনি অনেকটা সহানূভুতিশীল হলেন এবং বললেন যে তিনিও একসময় ছাত্র ছিলেন। তিনি তার কাজটুকু করে দিলেন সাথেসাথেই এবং সংশ্লীষ্ট দপ্তরে পাঠালেন। ওখানেও অতি দ্রুতই কাজ হলো। অফিসের টাইপিস্ট না থাকায় ঘন্টা দেড়েক অপেক্ষা করতে হল। ঘন্টা খানেক পর যখন টাইপিস্ট প্রত্যয়ন পত্র লিখা শেষ করল তখন সেই ভদ্রলোকের কাছে আবার ফেরত গেলাম। তিনি সব দেখে সই করে দিয়ে তার স্যারের কাছে পাঠাল ফাইল সহ আমাকে । তার স্যার সহকারী কর কমিশনার আমাকে রাগত স্বরে বলল কেন এটা আমি নিয়ে এসেছি, আমার তো এটা আনার নিয়ম নাই। আরও বলল যে আমার কাগজ তৈরী করে দিয়েছে তাকে আসতে।
আমি আমার এলাকার কর্মকর্তার সাথে দেখা করে তার স্যারের কথা বললাম। তিনি তার পিয়নের সাথে এই বিষয়ে তার আলাপ করলে তা থেকে যা বুঝলাম যে
"আমার আবেদনে আমি ঘুষ দেইনি যার কারনে তিনি ওটা নিয়ে যাননি। তাছাড়া তিনি আমার ফাইল নিয়ে গেলে বড় স্যার ভাববেন আমি তাকে টাকা দিয়েছি এবং তিনি (বড় স্যার) তার শেয়ার চাইবেন। যেহেতু তিনি তার কর্তব্য অনুযায়ী তার কাজ করেছেন এবং ঘুষ নেননি সে জন্য তার স্যারের কাছে আমার ফাইল নিয়ে যাবেন না্।"
লোকটাকে আমি দোষ দিতে পারব না কারন সে তার দায়িত্ব ঠিকমতই পালন করেছে এবং যথেষ্ট হেল্পফুল।
কিছুক্ষন পর তার স্যার তাকে টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানাল আমি তাকে টাকা দিইনি..সুতরাং তার স্যারকে টাকা দেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। তার স্যার বিষয় টা নিয়ে কিছুটা আপসেট হয়ে আমাকে ডাকল। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে জানালাম কোন টাকা দেইনি.....ষ্টুডেন্ট মানুষ। তিনি আমার প্রত্যয়ন পত্রে সই করে বললেন কাউকে টাকা দিতে না।
আমি তথাস্তু বলে বিদায় নিলাম। ঘুস ছাড়াও সরকারী অফিসে যে কাজ হয় তার প্রমান পেলাম।
ধন্যবাদ খোকন ভুইয়া কে যিনি আমার কাজটা ঘুস ছাড়াই করে দিয়েছেন।
ধন্যবাদ সহকারী কর কমিশনার কে যিনি নিশ্চিত করেছেন কেউ যেন ঘুস না পায় (তাকে সহ)।
টিন নম্বর নিতে যা যা লাগবে:
২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
ন্যাশনাল আইডি কার্ড/পাসপোর্টের ফটোকপি ২ কপি (অরিজিনাল সহ)
ট্রেড লাইসেন্স (থাকলে)
পূরনকরা ফর্ম ২ কপি।
চার্জ : বিনামূল্যে করাতে পারবে ধৈর্য্য থাকলে।