৫ই মের হেফাজত হত্যাকান্ড বিষয়ে নোংরামির আর কিছুই বাকি রাখলোনা সরকার। অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইয়াহি্যাগিরির ষোলোকলা পূর্ন করলো তারা। সরকারের এই কাজকর্মগুলোর ইন্টারপ্রিটেশন একটাই, "আমরা কিন্তু কলা খাইনাই!"
বাংলাদেশের পা-চাটা গেলমান স্বভাবের মিডিয়া আর গালভরা নাম-সিলসর্বস্ব হ্যানত্যান সংস্থা যা করার সাহসটাও রাখেনা, অধিকার সে কাজটা করছিলো। ৫ই মে হেফাজত ম্যাসাকারের নিহতের সংখ্যা বের করার কাজ। ১০ই জুন প্রকাশিত তাদের শেষ রিপোর্টে তখন পর্যন্ত ৬১ জন নিহতের তালিকা তারা করেছিলো। আমাদের মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সরকারের ঢোলে বাড়ি দিয়ে "তালিকা কই? তালিকা কই?" বলে ছাগলের তৃতীয় ছানার মতো লাফিয়েছে ঠিকই, কিন্তু অধিকারের এই রিপোর্টের খবর বড় করে প্রকাশ করার সাহস দেখায়নি।
সরকার থেকে অধিকারকে অনুরোধ করা হয়েছিলো ঐ ৬১ জনের তালিকা সরকারকে দিতে। অধিকার সরকারকে জানিয়েছে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে তারা সন্দিহান, এবং শুধু নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত কমিশনের কাছেই তারা এরকম লিস্ট হস্তান্তর করতে রাজি আছে। সাথে এও শর্ত ছিলো যে নিহতদের পরিবারকে কোনোরোকম হয়রানি করা যাবেনা। অধিকারের আশংকা ছিলো, সরকার হয়তো ঐ ৬১ জনের পরিবারের মুখ চেপে ধরার জন্য প্রশাসনিক অপচেষ্টা চালাতে পারে। অধিকারের সাধারন সম্পাদক আদিলুর রহমানের গ্রেফতার হওয়া, তাদের সেই আশংকাকেই জাস্টিফাই করে। একইষাথে এই ঘটনাটি এব্যাপারটাও প্রমাণ করে যে, কোনো এক ধরনের ভীতির শিকার হয়েই দেশের মুলধারা মিডিয়া এরকম একটা জঘন্য হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে এমন চুপ হয়ে আছে।
আমি আগেও বলেছি, এখনও বলি, একদিকে সব মাদ্রাসার উপর শোকজ নোটিশ দিয়ে আরেকদিকে "তালিকা কই? লিস্টি কই" বলে ফাত্রামি করে বেড়ানো যায়। তবে তাতে শুধু এটাই প্রমান হয় যে, কোনো মাদ্রাসাই শোকজের ভীতি মাথার উপর ঝুলানো অবস্থায় মৃতের সংখ্যা বা দাবী নিয়ে আসবেনা। নিহতদের আত্মীয়রা তো আরো বেশি ভয় পাবে! ফলে ৫ই মের হেফাজত হত্যাকান্ডের প্রকৃত নিহতের সংখ্যা সম্ভবত খুব নিকট ভবিষ্যতে আমরা জানতে পারবোনা।
তবে পাপ বাপরেও ছাড়েনা। এই যে জানতে না দেয়া, এটা যা ক্ষতি করবে, খুনী দলেরই ক্ষতি করবে। এই জানতে না দেয়ার সময়টকালটা জত দীর্ঘ হবে, মানুষের অবিশ্বাস আর সন্দেহ, বিরোধী পক্ষের হাজার হাজার মৃত্যুর অপপ্রচার -- এ সবকিছুই ঘাতকপক্ষকে হন্ট করে বেড়াবে।