বহুল আলোচিত বিটি বেগুন নিয়ে সম্প্রতি GreenMagzএর সাথে কথা বলেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগের প্রভাষক মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া। কথোপকথনটি প্রকাশিত হল-
GreenMagz:সম্প্রতি পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল বায়োসেফটি কমিটির সভায় বিটি (Bacillus Thuringiensis) বেগুনের বাণিজ্যিক চাষের অনুমোদন দেওয়া হল এবং আজ জিএমও বিটি বেগুন বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবেন কৃষি মন্ত্রী। একজন কৃষিবিদ এবং কৃষি সচেতন নাগরিক হিসেবে এ ব্যপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :আসলে বিটি বেগুন তৈরির ফলে ফলন বাড়বে না। শুধুমাত্র ক্ষতিটা কমবে।ধরুন প্রতি একক জমিতে আমরা যদি বেগুন চাষ করে ১০ কেজি ফলন পাই ।এই ফ্রুট অ্যান্ড শুট বোরার(Fruit and Shoot Borer) রোগের কারনে আমরা ফলন পাবো প্রায় ৫-৬ কেজি ।কৃষক তো ক্ষতির মুখে পড়বে। এই বিটি বেগুন চাষ করে আমরা ক্ষতির পরিমান কমাতে পারব ঠিকই। কিন্তু যেটা বলা হচ্ছে বিটি বেগুন চাষে কীটনাশকের ব্যবহার কমবে, এটি ঠিক নয় । এটি আসলে এই প্রযুক্তিটি চালিয়ে দেয়ার অভিঘাত মাত্র।
GreenMagz:বিটি বেগুন প্রযুক্তির বিশেষত্ব কি? প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আমাদের জানাবেন কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :Bt প্রযুক্তি টি মুলত মাটিতে বসবাস করে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া যেটাকে আমরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজুক্তির মাধ্যমে যেকোনো হস্ট প্লান্টে কাঙ্খিত ব্যাকটেরিয়ার জিন প্রবেশ করিয়ে এর মাধ্যম একটা রেসিস্টেনট প্লান্ট তৈরি করা ।যেকোনো ফসলকে যদি আমরা জেনেটিকালি মডিফাইড (জিএম) করতে চাই তাহলে একই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় যেগুলো পরবর্তীতে রোগ এবং পতঙ্গ বিরোধী একটি ভুমিকা রাখে।
GreenMagz: বলা হচ্ছে Bt অথবা Bacillus thuringiensis ব্যাকটেরিয়া যে ক্রিস্টাল প্রোটিন “Cry1Ac” ব্যবহৃত হয় সেটি শুধুমাত্র পোকামাকড়ের জন্য বিষাক্ত, মানুষের জন্যে না, এ সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?
( কেননা ক্রিস্টাল প্রোটিন “Cry1Ac” ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন ক্ষরণের জন্য ক্ষারীয় পরিবেশের প্রয়োজন কিন্তু মানুষের অন্ত্রে অম্লীয় পরিবেশ বিদ্যমান। আর যদি কোনভাবে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন নিজেই মানুষের অন্ত্রে প্রবেশ করে তাহলেও ভয়ের কিছু নাই কারন মানুষের অন্ত্রে ডেল্টা -এন্ডোটক্সিন গ্রহন করার কোন গ্রাহক (receptor) নেই। অর্থাৎ এই বিটি টক্সিন যে মানুষ সহ অন্য স্তন্যপায়ীর জন্য ক্ষতিকর নয়! এ ব্যাপারে কি বলবেন? (Cry1Ab যকৃতের ক্ষতি করে , Cry1Ac না ).
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :এখানে আসলে টারগেট একটা মাত্র ক্ষতিকর পেস্ট brinjal fruit and Shoot borer ।এখন বিষয় হল দেখুন বাংলাদেশে সরাসরি কঞ্জিউমেবল একটা জিমও ফসলের চাষ শুরু করে দেয়া হল ।বিশ্বের কোন দেশ কিন্তু সরাসরি খায় এমন কোন জিমও ফসল নেই ।এখন যদি বলেন সয়াবিন তো অনেক দিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে । বিটি শস্য সয়াবিন খাচ্ছি ।এতে কিন্তু এমন কোন বিটি টক্সিন ব্যবহার করা হয় নাই এবং এটি পরীক্ষিত ।এখন মানুষের কোন ক্ষতি হবে কিনা দেখুন এটি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোন গবেষণা নেই যেটির ভিত্তিতে আপনি বলতে পারবেন যে হ্যা মানুষের ক্ষতি হবে কি হবেনা ।তাই আমার প্রশ্ন হল দীর্ঘ মেয়াদী গবেষণা ব্যাতীত ফসল কেন বাজারে ছাড়া হচ্ছে ?
GreenMagz:বলা হয় বিটি বেগুন খেলে উপকারী সব পোকামাকড় মারা যাবে না শুধুমাত্র ৪ টি বর্গের পোকা মারা যাবে।কিন্তু যদি কীটনাশক ব্যবহার করা হত তাহলে নির্বিশেষে সব পোকা মারা যেত।তাহলে সেক্ষেত্রে আমাদের একে স্বাগত জানানো উচিৎ নয় কি ?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :দেখুন বেগুনের ফ্রুট অ্যান্ড শুট বোরার ছাড়াও আরও ৮ টির মত রোগ রয়েছে যারা বেগুনের ফলন ৯০% পর্যন্ত কমাতে পারে। এছাড়া উল্লেখিত ৪ টি জাত কিন্ত রোগ সহিষ্ণু এবং রোগ এবং পতঙ্গ প্রতিরোধী ।এখন যদি বিটি ব্যবহার বাদেও প্রচলিত কৃষিপদ্ধতি যেমন ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে এসব বালাই গুলো দমন সম্ভব তবে কেন আমরা বিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করব।
GreenMagz:বিটি বেগুনে পুষ্টিগত বা স্বাস্থ্যগত কোনো ঝুঁকি নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা। দেশী-বিদেশী পরীক্ষাগারে এ বেগুন পরীক্ষা করা হয়েছে বলে তারা জানান। তাতে কৃষি ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি।আর বলা হয় জিএম খাদ্যের কারনে স্বাস্থ্যগত ক্ষতির রিপোর্ট পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয় নি। এ ব্যাপারে আপনার মত কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :বিষয়টি হল মানুষকে তো এখনও খাওয়ানো হয় নি ।তাছাড়া অন্যান্য প্রানীদেহে কতদিন পরীক্ষা করা হয়েছে? এবং তাঁর ফলাফল জনগনের সামনে উপস্থাপন করেছেন কিনা। এই প্রযুক্তি নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে কোন মুক্ত আলোচনা ,যুক্তি খণ্ডন ,জাতীয় পর্যায়ে কোন ডিবেট হয়েছে কিনা । এরকম গবেষণা ছাড়া তারা যতই বলুক এটা আসলে প্রযুক্তিকে বৈধতা দেওয়ার জন্য জোর দিয়ে বলা হচ্ছে। প্রাণীদেহে এর প্রভাব অবশ্যই খারাপ ।এটা প্রমানিত এবং প্রাণীদেহে যে এটা খারাপ না এটা তারা দেখাতে পারবেন না ।দীর্ঘমেয়াদী, আমি আগেই বলেছি স্বল্প মেয়াদী গবেষণায় এটি বলা যাবেনা। আর যে ক্ষতিটা হবে এই অল্প কিছু ক্ষতি দিয়ে পুরো বাস্তুসংস্থানের চিত্র কি আপনি পাবেন না ।বাংলাদেশের চারটি স্থানে তারা এটা করেছে। সেখানে নেট হাউস দিয়ে করেছে কিন্তু এর মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র কিন্তু পাবেন না । বিষয়টি হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী কোন গবেষণা নেই । মাহিকো যেটা করেছে তারা মাত্র ৯০ দিনের একটা গবেষণা করেছে ইদুর, খরগোশ , মাছ, হাস-মুরগিতে তারা লক্ষণ দেখেছে ।কিন্তু দেখুন কোথায় ১০ বছর কোথায় তিনমাস। Horizontal gene transfer এমন একটি জিনগত পরিবর্তন জন্য ৭ থেকে ১০ বছর এর পূর্বে এর লক্ষণ প্রকাশ পায় না।এখন আপনি বলছেন মানুষের কোন ক্ষতি হবে কিনা ?এটা আমরা কিভাবে বুঝব গবেষণাপত্র না থাকলে। Horizontal gene Transfer er বিষয়টি এখনও অন্ধকারে।বাংলাদেশে জীববৈচিত্রে পরিপূর্ণ এবং বেগুন কিন্তু বাংলাদেশেরই আদিম আবাস ।এসব দীর্ঘ মেয়াদী গবেষণাবিহীন জিম ফসল কেন আমরা চালু করব এটা জনস্বাস্থের জন্য হুমকিও হতে পারে।
GreenMagz:বারি’র মতে বিটি বেগুন প্রচলিত দেশী জাতের বেগুনের কোনো ক্ষতি করবে না। দেশী জাতের বেগুন থেকেই তৈরি করা যাবে বীজ। এ কারণে হাইব্রিড বীজের মতো কোম্পানিনির্ভর হতে হবে না। এ ব্যাপারে আপনার মত কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :মন্সান্টো যে বিটি ক্রপ করে ।তারা কিন্তু মহারাষ্ট্রকে পুরনো একটি প্রযুক্তি দিয়েছ ।এখন বহুজাতিক বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি সব সময় উন্নয়নশীল দেশ সনাক্ত করে এইসব নতুন ও বিতর্কিত পণ্যের বাজারজাত করার জন্য।আমরা সরাসরি তো কাজটি করিনি ।ধার করে প্রথম মন্সান্টো থেকে মাহিকো ।মাহিকো , BARI, USAID, East West seed এর অংশীদারিত্বমূলক সহযোগিতায় কিছু কাজের ফিল্ড ব্যবহিত হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে কিন্তু বেশিরভাগ কাজই ভারতে হয়েছে পেটেন্টের ব্যাপারে যদিও বাংলাদেশ একটু লিবারেল এই বিষয়ে আমরা তর্কে না যেয়ে যদি বলি আমাদের দেশীয় ফসলই যদি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয় আমরা কেন বিতর্কিত প্রযুক্তির মাধ্যমে বেগুনের দেশি জাতের বীজ বিনষ্ট করব।
GreenMagz:বলা হয় জিএম উদ্ভিদ বীজের নিরাপত্তা বিঘ্ন করবে না কেননা এটি বারির প্রযুক্তি , মানসানটোর কোন প্রযুক্তি না। মানসানটোর যে পেটেন্টের কথা বলা হচ্ছে সেটি “বিটি জিনের” পেটেন্ট, বিটি বেগুনের না। এ ব্যাপারে কি বলবেন? (অবশ্য প্রোডাক্টের সত্ত্ব কাদের থাকবে সেটা কোন পক্ষ থেকেই জানা যায় নি ।)
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :মুলত USAID এর অর্থায়নে এটি করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের ইস্ট ওয়েস্ট সীড কোম্পানি, BRRI, মাহিকো থেকে এটি নিয়ে এসেছে ।আরেকটি বিষয় হল সত্ত্ব কিন্তু বহুজাতিক কোম্পানি এর কাছে থাকবে ।কোন কারনে যদি তারা বলে যে বিটি জিন করতে খরচ বেশি হচ্ছে তাই বীজের দাম বেড়ে যায় এটাকে তবে কিভাবে সরকার ম্যানেজ করবে যদি বেশি দামেই কিনতে হয়?
GreenMagz:BARI-র মহাপরিচালক বলেছেন, কৃষককে বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে এই বীজ কিনতে হবে না। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (BADC)-এর মাধ্যমে সারাদেশের কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।এ ব্যাপারে কি বলবেন?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :দেখুন বিষয় হল BARI কিন্তু বাংলাদেশের সম্পূর্ণ চাহিদার মাত্র ৫ ভাগ বীজ সরবরাহ করতে পারে । সেক্ষেত্রে এসব তথ্য দেয়া মানে তো মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ।
GreenMagz:BARI-র মতে বিটি বেগুন আমাদের দেশী জাতের বীজকে কলুষিত করবে না এবং কৃষকের বীজ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। এ ব্যাপারে কি বলবেন?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :এক্ষেত্রে তারা জীববৈচিত্রগত আইনও (biosafety)তারা ভঙ্গ করেছে ।কারন দেখুন তারা যখন নেট হাউস ব্যবহার করেছে এইটার কোন শেডের ব্যবস্থা ছিলনা। বেগুনের পরাগরেনু কিন্তু ৬০ থেকে ৭০ কিমি যেতে পারে । সে ক্ষেত্রে নন বিটি বেগুন গুলোর জেনেটিক মেকআপে কোন পরিবর্তন হয় কিনা এরুপ কোন গবেষণা কিন্তু তারা করেন নি। আমাদের অন্যান্য সলানেসি (Solanaceae) পরিবারের একি সবজি গুলোতে যেমন টমেটো কিংবা আলু এদের পরাগরেনুতে যদি মিক্স হয় তাহলে কোন পরিবর্তন আসবে কিনা এরকম কোন গবেষণাপত্র নেই। কাজেই জীববৈচিত্রই বলেন আর বীজ সুরক্ষাই বলেন তা কতটুকু হুমকির মুখে পড়বে তা গবেষণা ছাড়া মানুষের সামনে উপস্থাপন করা কতটা যৌক্তিক? এছাড়া BRRI যে গবেষণা করেছিল তা back test 3 পর্যন্ত করা হয়েছিল ।কিন্তু নিয়মানুযায়ী এটি back test 6 পর্যন্ত করতে হয়।
GreenMagz:“খাদ্য নিরাপত্তা” বা Food Security এর কথা যদি আমরা ভাবি সেদিক থেকে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কেননা আমাদের ক্রম বর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের যোগান দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনার মতে সমাধানের উপায় কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :খাদ্য উৎপাদন অথবা খাদ্য নিরাপত্তা এর কথা যদি চিন্তা করেন কিংবা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে আমাদের পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে ।বিজ্ঞানীরা চিন্তিত কিভাবে বেশি পরিমান খাদ্য উৎপাদন করব এই গুলো নিয়ে । কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে কি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে ।এখানে তো সরাসরি ইন্সেক্ট টক্সিন ব্যবহার করা হয়েছে ।এখন জৈব প্রযুক্তি বিভিন্ন কারনে ব্যবহার করা হয় ।কিছু জিন ব্যবহার করা হয় পতঙ্গ এবং রোগ প্রতিরোধী ভুমিকার জন্য,কিছু ফলন বাড়ানোর জন্য।এখন জিমও এর বিরোধী আমরা নই ।সাড়া বিশ্বে জিমও চলছে ।কিন্তু খাওয়ার জন্য কিন্তু বাংলাদেশেই প্রথম । এটি কিন্তু বিশ্বে কোথাও খাওয়া হয় না । ইন্ডিয়া ফিলিপাইনে এটা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । ফিলিপাইনে বলা হয়েছে যে এটি মানব স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর এটি গবেষণায় প্রমানিত। অতি সম্প্রতি নেপালেও জিএমও শস্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
GreenMagz:বাংলাদেশে দেশীয় জাতের যে বেগুন রয়েছে তার মাধ্যমে কি আমাদের ক্রম বর্ধমান চাহিদা মেটানো সম্ভব? আর উৎপাদন বাড়াতে বিটি বেগুন বা জিএম প্রযুক্তির দরকার আছে কি?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া : দেশীয় জাতের যে বেগুন দিয়ে চাহিদা মেটানো অবশ্যই সম্ভব বিটি বেগুন দরকার নেই।
GreenMagz:Integrated Pest Management বা আইপিএম পদ্ধতির বর্তমান অবস্থা কি? এর মাধ্যমে কি বেগুনের ফল ও ডগা ছিদ্রকারী (Brinjal Fruit and Shoot borer) পোকাকে দমন করা কি সম্ভব এবং তা কতটা কার্যকর?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :কেন IPM এ যাচ্ছি আপনাকে সেটা বুঝতে হবে ।আই পি এম বলা হচ্ছে যতখানি সম্ভব কেমিকেলের ব্যবহার কমানো । IPM কিন্তু যথেষ্ট ভাল কাজ করছে ।কৃষক তা কিন্তু এটিকে ভালভাবে গ্রহন করেছে ।IPM এর ক্ষেত্রে প্রণোদনাও দেয়া হচ্ছে ।যেমন ফেরমোন ফাঁদ , বেরিয়ার , লাইট ট্রাপ , বরডার ফাঁদ ইত্যাদি।এমন একটি পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা ছেড়ে কেন বিতর্কিত জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা বীজ ব্যবহার করব যার ক্ষতি সম্পর্কে দীর্ঘ মেয়াদী কোন গবেষণা নেই।
GreenMagz:সার্বিক দিক বিবেচনা করে যদি আপনার কাছে কোন সমাধানের কথা জানতে চাওয়া হয় , তবে আপনি কি বলবেন ?
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া :আমি বলতে চাই পরিবেশ ও কৃষি মন্ত্রনালয়ের আরও উদ্যোগী হওয়া উচিৎ এবং গবেষণার ফলাফল গুলো মানুষ কে দেখান উচিত । এখন দুঃখের বিষয় হল বাংলাদেশে সরকার যদি কোন প্রকল্প হাতে নেয় তবে এটার বিরুদ্ধে কিছু কথা বললেই বলা হয় তা সরকার বিরোধী । বেগুনের ব্যবহারের যথার্থতার সাথে এর কোন সম্পর্কই নেই । এখন আপনি যদি এই বিষয়টিকে অনুসরন করেন যে প্রযুক্তিটই আসলে কি ? সরকারের পক্ষ থেকে যদি নিরাপদ বলা হয় অথচ মানুষ তো এটাকে খাবে ।এটাতো হেলাফেলার বিষয় নয় এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এখন মুক্ত আলোচনা , সেমিনার আয়োজন করা উচিত যেখানে পক্ষে বিপক্ষে যারা আছেন তারা যথার্থ প্রমান ও গবেষণাপত্র যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করবে। যেখান থেকে একটি ফলাফল বেরিয়ে আসবে এক্ষেত্রে কৃষি ও পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতামত নেয়া যেতে পারে ।ফলাফল জনগনের সামনে উপস্থাপনের জন্য মিডিয়ার ভুমিকা এইখানে গুরুত্বপূর্ণ । বাংলাদেশের পত্রপত্রিকাতে রাজনৈতিক খবর গুলোই বেশি প্রচারিত হয় ।পরিবেশ সহ জিমও ফসল এর মত বিষয় গুলো অপ্রকাশিতই থেকে যায় ।এক্ষেত্রে পরিবেশ বাদি ও পরিবেশ বিজ্ঞানী , কৃষিবিদ ,নীতি প্রনয়নকারি অগ্রগণ্য ব্যক্তিদের একটি প্লাটফরমে একত্রিত করাটাই জরুরী । এ বিষয়ে সকলেই ভাববেন আশা রাখি ।
GreenMagz: সবশেষে বিটি বেগুন নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
**********************************************
বিঃ দ্র ঃ সাক্ষাৎকারটি গত ২২ জানুয়ারি পরিবেশ বিষয়ক অনলাইল ম্যাগাজিন গ্রিন ম্যাগজ এ প্রকাশিত হয়।
মূল লেখার লিঙ্ক