somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমজনতার "৭১ ঘণ্টার অনশন" সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তর

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রশ্নঃ আপনারা কে এবং কারা ?

উত্তরঃ আমরা আপনার মতই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাটে, ফুটপাতে আপনার পাশেই আমরা হাঁটাহাঁটি করি,বাসে কিনবা ট্রেনে আপনার পাশের সিটেই বসে থাকি আমরা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার সহপাঠী কিনবা অফিস আদালতে আপনার সহকর্মী আমরা। দেশের বিভিন্ন সমস্যাতে আপনার মতই আমরাও উদ্বিগ্ন হই, আবার বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলায় ভালো করলে আমরাই উল্লাস করি আপনার মত। এই আমরাই আবার, রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন সহিংসতার কারনে লাশে পরিণত হই। আমরা “আমজনতা”, এবং নিঃসন্দেহে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ।

প্রশ্নঃ এই আন্দোলনে আপনাদের উদ্দেশ্য কি ?

উত্তরঃ আমরা চাই গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সঠিকভাবে গণতন্ত্র চর্চা হোক। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক উপায়েই সমাধান করুক দেশের বিভিন্ন সমস্যা। ইলেকশন করে যাদের কে নির্বাচিত করি আমরা, চাই তাদের মধ্যে গনতান্ত্রিক চর্চা হোক, দেশের সমস্যাগুলা নিয়ে আলোচনা হোক, এবং সেখান থেকে বের হয়ে আসুক আমাদের কাঙ্খিত সমাধান। দেশের এই রাজনৈতিক সংকটের আমরা চাই, প্রধান দুটি দলের দুই নেত্রীরা সংলাপ করুক। আমরা চাই না দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়ে কোন তৃতীয় শক্তি অগনতান্ত্রিকভাবে সেখান থেকে ফায়দা নিক। এই আন্দোলনে শুধু আমাদের একটাই দাবি, সেটা হচ্ছে, দুই নেত্রীকে সংলাপে বসতে হবে। এই ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করা এবং তাদেরকে সংলাপে বসতে বাধ্য করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

প্রশ্নঃ আপনাদের পিছনে কে/কারা আছে ? আপনাদের মদদ দিচ্ছে কে ?

উত্তরঃ আমাদের মদদ যোগাচ্ছে আমাদের বিবেক এবং মূল্যবোধ। আমাদের বিবেক বলে, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধান দুটি দলকে অবশ্যই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানে আসতে হবে। এটাই গণতন্ত্রের মূল উপাদান। আমাদের জানা নেই, পৃথিবীতে এমন কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আছে কিনা যেখানে দুই দলের প্রধানরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেন না। রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণ হারানো যেকোনো মানুষের মা আমাদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে।আমাদের চেতনায় আছে ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা- বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধ। যেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল শোষণমুক্ত, দল মত ধর্ম নির্বিশেষে গণতান্ত্রিক একটি সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। মুক্তিযুদ্ধের নায়ক আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ত, মুক্তিযুদ্ধের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে রয়েছে আমাদের প্রেরণা হয়ে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সময়ে সংগ্রাম করে যাওয়া সকলেই আমাদের অনুপ্রেরনা হয়ে আছে।

প্রশ্নঃ আপনাদের রাজনৈতিক আদর্শ ?

উত্তরঃ আমজনতা রাজনীতি করে না, এটা আমাদের কাজও না। রাজনীতি করবেন রাজনৈতিকরা। কিন্তু তারা যখন ভুল করবেন সেটা দেখিয়ে দেবার মত প্রজ্ঞা আমজনতা রাখে কারন আমরা রাজনীতি না করলেও ভালোভাবেই রাজনীতি নিয়ে সচেতন।

প্রশ্নঃ ধর্মের ব্যাপারে আপনাদের মতামত কি ?

উত্তরঃ আমরা সকল ধর্মের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল। এই ব্যাপারে কোন বিতর্কের অবকাশ নেই।

প্রশ্নঃ ৭১ ঘণ্টার অনশনের ফলাফল কি হতে পারে বলে মনে করেন ? তারা কি একসাথে বসবে বলে মনে করেন ?

উত্তরঃ আমরা চাই এই ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে উঠুক , আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের এই দাবি মানতে তারা বাধ্য হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

প্রশ্নঃ আপনারা কি মূলত শুধু বিরোধী দলকেই চাপ দিচ্ছেন না সংসদে আসার জন্য ? সরকারি দল তো সংসদে যায়।

উত্তরঃ সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যাবস্থায় আমরা চাই সকল দল নিয়মিত সংসদে যাক, এই কারণেই তাদের কে আমজনতা নির্বাচিত করে থাকে। সকল আলোচনার কেন্ত্রবিন্দু হবে সংসদ, এইটাই সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যাবস্থার মূল ভিত্তি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুই দলের নেত্রী যেকোনোখানেই সংলাপে বসতে পারে। আমরা শুধু তাদের সংলাপে বসার আহবান জানাচ্ছি। কোথায় কখন বসবেন এবং কি নিয়ে আলোচনা হবে এটা তাদের ব্যাপার।

প্রশ্নঃ আপনাদের আর কি কি দাবি আছে , শাহবাগের মত যেমন রাজাকারের বিচার এবং অন্যান্য ?
উত্তরঃ শুরুতেই বলা হয়েছে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি অর্থাৎ শাহবাগের মূল স্পিরিটের সাথে আমরাও আছি। আমরাও রাজাকারের বিচার চাই যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল বাঙালি এটা চায়, এটা নিয়ে কোন নোংরা রাজনীতি আমজনতা দেখতে চায় না। এই আন্দোলনে শুধু আমাদের একটাই দাবি সেটা হচ্ছে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসতে হবে। এছাড়া এই অনশনের আর কোন দাবি নেই।


প্রশ্নঃ কোন পক্ষ যদি আপনাদের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে ?

উত্তরঃ আন্দোলনের ইস্যুর জন্য সেটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো এটাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেও কোন লাভ হচ্ছে না। খেয়াল করে দেখবেন, এই আন্দোলনের মূল অংশগ্রহণকারীর কেউই কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নয়। তারা সাদা কে সাদা এবং কালো কে কালো বলতে পারে।

প্রশ্নঃ কতজন অনশন করবেন ?

উত্তরঃ ৭ জন মূলত অনশন করবেন, অনশনকারীদের নাম ও পরিচয় ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রশ্নঃ অনশন কখন থেকে শুরু হবে এবং কোথায় ?

উত্তরঃ অনশন শুরু হবে ২৭ মার্চ সকাল ৭ টা থেকে এবং চলবে ৩০ মার্চ সকাল ৬ টা পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজাকে নির্ধারণ করা হয়েছে অনশনের স্থান হিসেবে।

একটাই দেশ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ
একটাই দাবী দুই নেত্রী মুখোমুখি
একটাই ঘোষণা দুই নেত্রীর আলোচনা
একটাই যুক্তি সংঘাত নয় শান্তি

আমজনতার ফেসবুকে অনশনের ইভেন্টটির লিঙ্ক দুই নেত্রীর সংলাপের দাবিতে ৭১ ঘন্টা অনশন
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×