somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস ও একজন জেসিকা জেকলি

০৯ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ মরণশীল কিন্তু তার রেখে যাওয়া আইডিয়া বা ধারণাগুলো লাভ করতে পারে অমরত্ব। একটি ভাল আইডিয়া উৎসাহিত করতে পারে আরও হাজারো মানুষকে। আবার একটি ভাল আইডিয়া থেকে জন্ম নিতে পারে আরও হাজারটা ভাল আইডিয়া ঠিক যেমনটি একটি মোমবাতির আগুন থেকে হাজারটা মোমবাতি জ্বালিয়ে নেয়া যেতে পারে। আর এসব যুগান্তকারী আইডিয়া যাদের মাথা থেকে বেরোয় তারা হচ্ছেন ক্ষণজন্মা মানুষ। আর এই ধরনের ক্ষণজন্মা আর অত্যন্ত প্রভাব বিস্তারকারী একজন মানুষ হচ্ছেন আমাদের ডঃ ইউনূস। আমরা অনেকেই হয়ত জানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন তার প্রবর্তিত "ক্ষুদ্রঋণ" কার্যক্রমটি চালু রয়েছে। কিন্তু আমার আজকের ব্লগ পোস্টে আমি শুধু একজন জেসিকা জেকলিকে ডঃ ইউনূস কিভাবে প্রভাবিত করেছিলেন এবং তার ফলশ্রুতিতে জেকলি কিভাবে গড়ে তুলেন "কিভা" নামে বিশ্বখ্যাত এক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেই সম্পর্কে কিছু বলব।

জেসিকা ছোটবেলা থেকেই দরিদ্র লোকদের কথা চিন্তা করতেন। কিন্তু বাইবেলের একটি কথা তাকে প্রায়ই বিব্রত অবস্থায় ফেলে দিত। বাইবেলে স্বয়ং যীশু খ্রিস্ট ঘোষণা করেছেন যে দরিদ্র লোকেরা সর্বদাই থাকবে, সমাজ থেকে দারিদ্রতা জিনিসটা কখনই একেবারে দূর করা যাবে না। তাই জেসিকা যখন দরিদ্র লোকদের দেখতেন তখন তাদের যতটুকু পারতেন সাহায্য করতে চেষ্টা করতেন। এটা তাকে মানসিকভাবে এক ধরনের শান্তি দিত। তিনি মনে করতেন এর মাধ্যমে তিনি দরিদ্রদের প্রতি তার দায়িত্বটুকু কিছুটা হলেও পালন করেছেন এবং তাতে করে তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। কিন্তু তারপরও সমাজ থেকে দারিদ্রতার ব্যাপারটাকে পুরোপুরি দূর করতে পারা যাবে না বলে যে একটা ধারণা তার মধ্যে তৈরি হয়েছিল সেটা মাঝে মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিত। এমনি এক সময় জেসিকা শুনতে পেলেন ডঃ ইউনূস এর একটি বক্তৃতা আর ইউনূস এর ঐ বক্তৃতাই দারিদ্রতা সম্পর্কে জেসিকার পূর্বের সব ধারণা পালটে দিল এবং তার জীবনের মোড় ঘুরে গেল।

জেসিকা জেকলির একটি ইউটিউব ভিডিওঃ


ইউনূস এর আইডিয়া জেসিকাকে এত বেশী অনুপ্রাণিত করল যে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই তিনি চাকরি ছেড়ে দিলেন এবং সোজা চলে গেলেন পূর্ব আফ্রিকাতে যেখানে তিনি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন ইউনূস এর আইডিয়া আসলে কিভাবে কাজ করে বাস্তব জীবনে। ৩ মাস তিনি ঘুরে বেড়ালেন কেনিয়া তানজানিয়া ও উগান্ডার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং নিজের চোখে দেখলেন কিভাবে ১০০ ডলার এর ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে সেখানকার উদ্যোক্তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সবচেয়ে যে জিনিসটা জেসিকাকে মুগ্ধ করল সেটা হচ্ছে তাকে কখনই ঐ দরিদ্র লোকগুলো দান করবার জন্য চাপাচাপি করে নি। তারা ঋণ নিতে চায় এবং ঋণ নিয়ে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে চায়। জেসিকা যখন এসব জিনিস পর্যবেক্ষণ করছিলেন তখনই তার মনের মধ্যে জন্ম নিল নতুন একটি স্বপ্ন, এই স্বপ্নের নাম পরবর্তীতে তিনি দেন "কিভা"। কিভা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তাদের অফিসিয়াল সাইট ভিজিট করুনঃ কিভা ডট অরগ

জেসিকার কিভা একটা সামাজিক আন্দোলনের রূপ নিল ধীরে ধীরে এবং কিভার মাধ্যমে তার পরিচয় ঘটল অত্যন্ত আশাবাদী একদল মানুষের সাথে। জেসিকা এখন সবাইকে নিয়ে কিভাকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। কিভার কাহিনী জেসিকার মুখ থেকে শুনতে অবশ্যই এই টেড টকটি দেখুন। এর একটি অংশ এতটাই মর্মস্পর্শী যে আমার চোখে জল চলে এসেছিল। জেসিকা নিজেও কেঁদে ফেলেছে শেষের দিকে। জেসিকার টেড টকঃ
জেসিকার অসাধারণ একটি বক্তৃতা

সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন জেসিকার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকেওঃ
জেসিকার নিজস্ব ওয়েবসাইট
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×