খুন করবার আগে আগে হাত কেটে নেয়া, চোখ তুলে ফেলা, পুলিশের এইসব সাইকোপ্যাথিক আচরণ, এই হত্যা, এই বর্বরতা, এর নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হতে পারেনা। কখনই না। যদি এরই নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হয়ে থাকে তবে সেই চেতনায় অন্তরের অন্তস্থঃতল থেকে স্রেফ ঘৃণা। আশারাখি এই চেতনাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে যাবে।
.
সোহান নামের এই ফুটফুটে বাচ্চাটির বয়স ষোলো। ফেইসবুকে এর এই ছবিটি এবং মাঠে পড়ে থাকা লাশের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। একে খুন করেছে আওয়ামী পুলিশ বাহিনী। আগেই ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। ১২ দিন আগে পুলিশ তাকে তুলে নেয়, স্থানীয় দোকান থেকে। পুলিশ তাকে তুলে নেওয়ার খবর অস্বীকার করতে থাকে! মা কান্নাকাটি করে,সংবাদ সম্মেলন করেন। নাহ, ফলাফল শূন্য! গতকাল তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়!
.
লাশের ছবি দেখে আমার বিশ্বাস হয়নি। বিশ্বাস হয়নি এ কারণে যে, লাশের একটি হাত কাটা, চোখ দুটো উপড়ানো। অর্থাৎ, মেরে ফেলবার আগে এর একটি হাত কাটা হয়েছে কনুই পর্যন্ত। চোখ দুটো উপড়ানো হয়েছে। তবুও যখন দম ফুরোচ্ছিলো না তখন গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকারের পুলিশ বাহিনী। পত্রিকা মারফত জানলাম, ছেলেটির মা আহাজারি করে বলছেন, মারবেই যখন আমার বাবুরে তাইলে চোখ দুইটা তুইলা নিলো ক্যান বাবুর?
.
এইসব দেখে শুনে বিশ্বাস করতে পারিনি যে, এটি কি করে সম্ভব? একটি সরকার কতটা হিংস্র হলে মাত্র ষোলো বছরের একটি ছেলেকে বিরোধীদল করবার অপরাধে পৃথিবীর ভয়াবহতম নৃশংসভাবে কানিবালিজমিয় কায়দায় হত্যা করতে পারে! আপনার বিশ্বাস হয়? ভাষার মহামারীতে আর শব্দ খুঁজে পাইনা সেই ঘৃণা প্রকাশে
শামীম ওসমানের চেয়েও বড় অপরাধ করেছে সোহান। শিবিরকর্মী!
জানি, বিচার হবে না।কে বিচার করবে? বিচারকই যে খুনী!
...কিন্তু সুস্থ বিবেকবান মানুষদের কাছ থেকে অন্তত প্রতিবাদ আশা করেছিলাম।
যারা এই হত্যা নিয়ে চুপ আছে, এমনকি মনে মনেও ঘৃণা জানায়নি, আমরা তাদেরকে অভিশাপ দিচ্ছি না, সত্যিই অভিশাপ দিচ্ছি না। দোয়া করছি, আপনারা ভালো থাকুন। আপনাদের ছেলেরা ভাইয়েরা ভালো থাকুক।
তবে আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আপনি যেই দলই করুন না কেন, যতই "নিরপেক্ষ" হোন না কেন, একদিন এ বিপদ আপনার ঘরেও আসবে!
.
স্থানীয় এমপির কাছে গিয়েছিলো, সোহানের এলাকার তিন শতাধিক মানুষ। তারা কথা দিয়েছিলো, ভবিষ্যতে তারা সবাই আওয়ামিলিগ করবে, তবুও সোহানকে যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আহ, আকুতি!
এমপি জবাব দিয়েছেন, আওয়ামিলিগ করার লোকের অভাব নাই!
আর কি ঘটলে তাকে নৃশংসতা বলে, আর কত প্রান গেলে মানবাধিকার লংঘিত হয়,আর কিভাবে কি ঘটলে দ্রুত বিচার চাওয়া যায়, আর কিভাবে কি হলে গনতন্ত্র আর স্বৈরাচার প্রার্থক্য করা যায়, আর কত মানুষ মরলে ঘৃনা কে প্রতিঘাতে রূপ দেওয়া যায়।আমি জানি না,আমি আসলেই জানিনা।আমি বাকরূদ্ধ।
সোহানের শূন্য অক্ষিকোটর যেন
আমার সারা বাংলাদেশ
রাক্ষসী কেবল খাঁটি মাটিই চায়
বৃক্ষ নদী করে নি:শেষ !!!!!
Elora Zaman
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪