ট্রাইব্যুনাল থেকে: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। রায় ঘোষণা শুরুর আগেই ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান ফজলে কবীর বলেন- রায় ঘোষণার আগে আমরা কিছু কথা বলতে চাই।
তিনি বলেন, আসামি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী গোটা বাংলাদেশে সুপরিচিত। তার বর্তমান নাম আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তিনি প্রখ্যাত মাওলানা এবং দুই বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় তিনি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির। তবে আমরা কি আজ সেই প্রখ্যাত মাওলানার বিচার করছি? না। আমরা কি জামায়াতের নায়েবে আমীরের বিচার করছি? না। আমরা কি সংসদ সদস্যের বিচার করছি? না।
বিচারপতি ফজলে কবীর বলেন, আসুন আমরা চলে যাই ৪০ বছর আগে। তখন তিনি ৩০ বছরের যুবক ছিলেন। পিরোজপুরে সাউথখালী গ্রামের বাসিন্দা। বিবাহিত জীবন ছিলো তার। এবং এক সন্তানের পিতা ছিলেন তিনি। তখন তিনি সাধারণ একজন মানুষ। কোনো ধর্মীয় নেতা ছিলেন না। পিরোজপুরের অনেক মানুষ তাকে চিনতেন। দেলু নামে ডাকতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তখন তিনি পাড়েরহাট এলাকার পিস কমিটির সাধারণ সদস্য ছিলেন। কোনো কমান্ডার নয়। তবে উর্দুতে ভালো কথা বলতেন তাই হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এ কারণে প্রত্যেক অপারেশনেই তিনি অংশ নিতেন।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান আরও বলেন, “দেলুর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। যার মধ্যে হত্যা-অপহরণ-ধর্ষণ লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তর করা, নির্যাতন রয়েছে। সেই ৩০ বছর বয়সী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বা দেলুর বিচার করতেই আমরা এখানে এসেছি। আমাদের মনে রাখতে হচ্ছে সেই সময়ে তিনি কী করেছেন তারই বিচার হচ্ছে। এতে রাষ্ট্রপক্ষের ২৮ জন ও আসামি পক্ষের ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই গ্রামের সাধারণ মানুষ। তাদের বক্তব্যের ওপরই আমরা এই বিচার পরিচালনা করেছি। এবং তার ভিত্তিতেই এই রায় দিচ্ছি।