পত্রিকার লিংক দিতে মন চায়না তার পরও নিচের নিউজটা দিলাম।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে রোববার ও মঙ্গলবার থেরাপি নিতে যেতে হয়ে ষাটোর্ধ্ব সুলতানা বেগমকে। মেডিক্যাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে রোববার তার ১০ বছরের নাতনি আফরোজাকে নিয়ে শহরের দেওভোগ এলাকা থেকে রিকশায় করে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসেছিলেন সুলতানা।
কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় ঢাকা যেতে না পেরে অনেকটা চিৎকার করেই বলতে লাগলেন, ‘এইড্যারে গণতন্ত্র কয় না, অভিশাপ লাগবো। আমার মত বুইড়া মাইনসেরে কষ্ট যারা দিতাছে আল্লাহ হেগো উপরে গজব ফালাইবো। যারা এইডা করতাছে হেরা মানুষ না। মানুষ মাইনসেরে কষ্ট দিতে পারে না।’
বৃদ্ধ সুলাতান বেগমের ক্ষুব্ধ কণ্ঠের এ ধরনের কথা শুনে বাসের জন্য অপেক্ষা করা অন্য যাত্রীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
বাস টার্মিনাল এলাকায় কথা হয় জাহানারা বেগম নামের অপর এক নারীর সঙ্গে।
শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড় বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকায় বসবাসকারী জাহানারার সঙ্গে ছিল তার দু’শিশু সন্তান। ছয় বছর বয়সী এক শিশুর হাপানি কষ্ট। এ কারণে তাকে মাতুয়াইলে শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস খুঁজছেন।
কিন্তু কোথাও না পেয়ে তিনি একটি সিএনজি অটোরিকশা খুঁজে পান। কিন্তু ৫শ’ টাকা ভাড়া শুনে হতবাক তিনি। তবে ছেলের কষ্টের কথা চিন্তা করে তিনি ওই ভাড়া দিয়েই চলে যান মাতুয়াইলে। রওনা দেওয়ার আগে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘ভাইরে এত কষ্ট দিতাছে আমাগো। আমাগে কী দোষ?’
চাষাড়া বাস কাউন্টারে সকাল থেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করে অনেক যাত্রীকে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন খাইরুল ইসলাম ক্ষোভ নিয়েই বাংলানিউজকে বলেন, ‘আপনারা লিখলে আর কী হবে। যদি হতো আমাদের এত কষ্টের কথা পইড়া সরকার তো নরম হইলো না?’
আরেক যাত্রী মতিউর রহমান বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচি সফল করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এত ভয় কিসের? একটি গণতান্ত্রিক দেশে সব দলই কর্মসূচি করতে পারে। তাই বলে সরকার অনেকটা বাড়াবাড়ি করছে।’
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে বিএনপির ১২ মার্চের সমাবেশকে সামনে রেখে শনিবার বিকেলের পর থেকে নারায়ণগঞ্জে বাস ও লঞ্চ চলাচল কমিয়েছেন মালিকরা। রোববার সকাল থেকে তা একেবারেই বন্ধ রয়েছে। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিআরটিসি ও আসিয়ান পরিবহনের কিছু বাস চললেও তা যাত্রীর সংখ্যায় একেবারেই কম।
পরিবহন সঙ্কটের কারণে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে যাতায়াত করা হাজার হাজার মানুষ রোববার থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেকে এদিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঢাকায় কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। সেই দৃশ্য সোমবারেও বিদ্যমান। কিছু লোকজন লোকাল বাস, ট্যাক্সি, অটো রিকশায় করে সাইনবোর্ড, পরে সাইনবোর্ড হয়ে যাত্রাবাড়ী হয়ে রিকশায় করে মতিঝিল এলাকায় যাচ্ছেন।
সুত্র:: Click This Link