সারাবিশ্বে অগণিত গুগল সার্ভার
আমরা সবাই বলে বেড়াই গুগল একটা টেক জায়ান্ট । কিন্তু এর বিস্তৃতি কতটুকু আমরা আসলে কল্পনা করতে পারি না । আপনারা যারা ব্রডব্যান্ড ইউজার তাদের মধ্যে অনেকেই দেখবেন ইউটিউব , গুগল ড্রাইভ, জিমেইল এইসব গুগল সার্ভারে অতিরিক্ত স্পীড পাচ্ছেন। আপনার নরমাল লাইন যদি ১ এম বি পিএসের লাইন হয় তাহলেও ইউটিউব কিংবা গুগল ড্রাইভে ৫ থেকে ৬ এমবিপিএস স্পীড পাচ্ছেন। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন যে আই এস পি আপনাকে ২ এমবি পি এস লাইনে ৫১২ স্পীড দিতেও দ্বিধা করে সেই তারাই আপনাকে ইউটিউব কিংবা গুগল ড্রাইভে ৫ থেকে ৬ এম বি পি এস স্পীড দিচ্ছে? আসলে এইটা কিন্তু আই এস পি থেকে প্রোভাইড করা হয় না। পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে গুগলের নিজস্ব সার্ভার আছে। আপনি যখন ইউটিউব দেখছেন কিংবা গুগল সার্ভিস ইউজ করছেন তখন কিন্তু গুগলের মূল সার্ভার থেকে ডাটা সাপ্লাই হচ্ছে না। আপনার পাঠানো রিকুয়েস্ট প্রথমে বাংলাদেশ সার্ভারে যাবে। সেখানে চেক করে দেখা হবে ফাইলটা বাংলাদেশ সার্ভারে আছে কিনা যদি থাকে তাহলে সে আপনাকে ল্যান স্পীডে ডাটা সার্ভ করে। কিন্তু যদি না থাকে তখন সে মেইন সার্ভারকে রিকুয়েস্ট করে তারপর সেখান থেকে তাদের সার্ভারের ডেডিকেটেট স্পীড (সর্বোচ্চ ১ জিবি পি এস ) দিয়ে ফাইলটি বাংলাদেশ সার্ভারে নামায় তারপর সেটা আপনাকে ল্যান স্পীডে সার্ভ করে। এভাবেই আপনি গুগল সার্ভিস গুলোতে নরমাল স্পীডের চেয়ে অনেক বেশি স্পীড পান। এদিক দিয়ে কিন্তু আই এস পিরও অনেক সাশ্রয় হয়। কেমন সাশ্রয়? কারণ গুগল তাদের ১০০ এমবি পি এস ব্যান্ডুইথ ১৫০০ টাকায় প্রোভাইড করে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের প্রায় আই আই জির প্রতি এম বি পি এস ব্যান্ডুউইথ এর দামই ১৫০০ টাকা।ফলে যে ফাইলটা আপনাকে গুগলের মেইন সার্ভার থেকে নামিয়ে দিতে যে খরচ হত সেটা সম্পূর্ণ প্রায় ফ্রীতেই পাওয়া যাচ্ছে এবং মূল ইন্টারনেট সার্ভিসের উপরে চাপ কম পড়ছে।
বাংলাদেশে গুগল সার্ভারের অবস্থান
ঢাকা শহরে গুগল ক্যাশ পোর্ট
চট্টগ্রাম শহরে গুগল ক্যাশ পোর্ট
গুগল ক্যাশ সরবরাহকারী ঢাকার আই এস পি
গুগল ক্যাশ সরবরাহকারী চট্টগ্রামের আই এস পি
কিন্তু কখনো ,কি ভেবে দেখেছেন এর থেকে গুগল কিভাবে লাভবান হচ্ছে? আচ্ছা আমরা একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যাই। আমরা তো সবাই তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য আয়োজিত ইন্টারনেট ডট অর্গ সম্পর্কে জানি যার মূল উদ্যোক্তা হল ফেসবুক।আমরা এখন প্রায় সিম প্রোভাইডারের আন্ডারে ফ্রী ফেসবুক চালাতে পারি। এর ফলশ্রুতিতে আমাদের দেশের তরুন তরুণীদের ইন্টারনেট সার্ফের মূল মাধ্যম হয়ে গেছে ফেসবুক। ফলে ফেসবুক তার বিজ্ঞাপন গুলো থেকে তিনগুণ বেশি টাকা আয় করছে। ঠিক একই ভাবে আপনি ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিসের জন্য ভিমিও তে না ঢুকে ইউটিউবেই ঢুকছেন। অন্যদিকে প্রায় ভার্সিটি তাদের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমের জন্য গুগল ক্লাস রুম ব্যাবহার করছে। অন্যদিকে গুগল তাদের সার্ভারে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের অল্প খরচে তাদের সফটওয়্যার হোস্ট করতে দিচ্ছে। তাছাড়া এন্ড্রয়েডের গুগল প্লে সার্ভিস, এডসেন্স এডমব তো আছেই। এভাবেই গুগল এই সার্ভিসগুলোর সূলভ বিপণনের মাধ্যমে তাদের ব্যাবসা হস্তগত করে টেকজায়ান্ট হয়ে যাচ্ছে।
পূর্বে আমার ব্যাক্তিগত শখের সাইট সায়েন্সথার্স্টএ প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭