বর্তমানে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার জন্য যে সব টুলকিট ব্যাবহার করা হয় তা তাৎক্ষনিক ফলাফল দেয়। কিন্তু একশ শতকের চেয়েও কিছুটা কম সময় আগে মহিলাদের ব্যাঙের উপর নির্ভর করতে হত।
আফ্রিকান ব্যাঙ যেটা তখনকার সময়ে সারা পৃথিবীতে রপ্তানি করা হত শুধু মাত্র মহিলাদের প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার জন্য। তো কিভাবে করা হত এই পরীক্ষা? প্রথমে ডাক্তার রোগিণীর মূত্র সংগ্রহ করে টেস্টটিউবে রাখতেন । তারপর সে মুত্রভর্তি টেস্টটিউব ব্যাঙ ল্যাবরেটরিতে নিয়ে গিয়ে আফ্রিকান মহিলা ব্যাঙের পেছনের পায়ে মহিলার মূত্রের কয়েক ফোঁটা ইনজেকশান দিয়ে পুশ করে দিতেন। তারপর রোগিণীর জন্য নির্ধারিত একটি পাত্রে ব্যাঙটিকে রাখা হত। সারারাত অপেক্ষা করার পড় ব্যাঙের পাত্রটি নিয়ে একজন টেকনিশিয়ান চেক করতেন ব্যাঙ পানিতে কোন ডিম ছেড়েছে কিনা!! যদি ব্যাঙ ডিম ছেড়ে থাকে তাহলে টেকনিশিয়ান বুঝে নিতেন যে মহিলার মূত্র ব্যাঙ্গটিকে পুশ করা হয়েছিল তিনি তখন প্র্যাগন্যান্ট। যখন কোন মহিলা প্র্যাগন্যান্ট হন তার মূত্র দিয়ে তখন প্র্যাগন্যান্সির জন্য দায়ী যে হরমোন বের হয় সেই একই হরমোনের প্রভাবে আফ্রিকান ব্যাঙের প্রজাতিটা ডিম পাড়ে। রিসার্চাররা এই টেস্টের নাম দিয়েছেন হগবেন টেস্ট।
এই কাজের জন্য ১৯৩০ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার ব্যাঙ বিভিন্ন দেশে আমদানি করা হয় আফ্রিকা থেকে।
একসময় হাসপাতালে এর চেয়ে সহজ পদ্ধতিতে প্র্যাগন্যান্সি টেস্ট করা শুরু হয়। ফলে ব্যাঙ গুলো স্থানীয় এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এই কারণে আফ্রিকান এই ব্যাঙ এখন বিশ্বজনীন বাসিন্দা।
২০০৬ সালে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই ব্যাঙ বিষাক্ত chytrid ছত্রাক এর বাহক। এই ব্যাঙের বিষাক্ত ছত্রাক থেকে অন্তত ২০০ টী এমপিবিয়ান প্রজাতি এখন বিলুপ্তির মুখে। হয়তো এটা ২০ বছর ধরে তাদের নির্যাতন করার প্রতিশোধ।
এই পোস্টটি আগে আমার ছোট্ট বিজ্ঞান ব্লগ সায়েন্সথার্স্ট এ প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫