কবিতাপাঠ দুটি জিনিস দিয়ে বিচার করা হতো চিরকালই
কাব্যকলা মানে লেখার মান এবং পাঠশৈলী
কিন্তু ইদানীং, তৃতীয় একটি মাপকাঠি তৈরি হয়েছে
এক তৃতীয়াংশ লেখা, এক তৃতীয়াংশ আবৃত্তি বা কথকতা
এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার উষ্ণতা
কিন্তু সমস্যা হল এই যে, কবিতার
এক তৃতীয়াংশ যাদুময়তা,
এক তৃতীয়াংশ সততা
আর এক তৃতীয়াংশ হলো 'মারা খা'
এবং এর মধ্যেও রয়েছে মজার,
পছন্দনীয়, হালকা হাসির বিষয়
যদি ভাল হতে হয়, তবে জোরালো অভ্যন্তর লাগে, এটাই আমি
আবার যেমন অন্যরাও আছে, এ নিয়ে কিইবা আর করা যায়?
অন্যদের গুমুত মিষ্টি, মধুর এবং মজার হওয়া অসম্ভব নয়
কারণ অন্যরাই হয়তো মিষ্টি, মধুর, এবং প্রেমময়
তবে কবিতা লিখতে হলে পাছামারা কবিতা লিখতে হয়
অন্যথায়
এটা শুধু বাজে বালছাল কথাই হয়ে যায়
পাঠক বা দর্শকদের সম্মান করা ঠিকাছে
কিন্তু সন্তুষ্ট করার দরকার নেই
তাই বিচারকরা নম্বর দেয়ার সময় নিজেরা কী ভাবছেন সেটাই করুক প্রদর্শনী
দর্শকরা কি ভাবছে সেটা নয়
তা আমরা ইতিমধ্যেই জানি
এবং আমাদের সবাইকেই এই মঞ্চে পালাক্রমে হবে দাঁড়াতে
একটা শিক্ষাব্যবস্থা গড়েই ওড়ে পার্থক্যমূলক মতামতে
প্রাচীনকালের সমস্ত গ্রীক মহান নাটকগুলো
প্রতিযোগিতার জন্যই লেখা হয়েছিল
একদম আমাদের মত
মানুষ এত কিছুই শিখতে পারে তাই হয়তো
একটি কবিতাপাঠের একমাত্র উপায়ই হল এটাকে অভিনয় না করা
যখন ভেতরে ব্যথা, তখন কান্নার চেষ্টা করা হয় না
বরং কান্না না করার চেষ্টাই আটকায় অশ্রুধারা
যদি কবিতা লেখার কারণটা হয় 'হবে লিখতেই'
তখন সবই লেখা
আর কিছুই না
সেখানে প্রদর্শনীর কিছু নেই
"কবিকে ভালোবাসা দাও" লন্ডন, নিউ ইয়র্কে বলে ওরা
কিন্তু আমি ভালবাসা চাই না
আমার সবচেয়ে খারাপ, দুর্বলতম মুহূর্তগুলো ছাড়া
আমি মরুভূমিতে যেতে চাই
যেখানে ভালবাসা বা ঘৃণা বা করতালি বা হাসি, কিছুই নাই
শুধুই শব্দ
এবং শব্দরা যা করার তা-ই করে
আর এটি শোনার পরে,
সম্ভবত শ্রোতা চিৎকার বা হুঙ্কার করতে চায় না
হয়তো লাফঝাঁপও দিতে চায় না
বোধহয় তখন শুধুই থাকে নিজের দমটা ফিরে পাওয়ার বাসনা...
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩২