somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টির মৌসুমে মহানবী (সা.) যা করতেন

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





এই পৃথিবীর সৃজন, রাত-দিনের আবর্তন ও মৌসুমের পরিবর্তন মহান আল্লাহ তাআলার কুদরতের নিদর্শন। প্রত্যেক মৌসুমের পরিবর্তন দ্বারা উদ্দেশ্য কেবল বান্দাদের পরীক্ষা করা যে বান্দা সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহকে স্মরণ করে কি না এবং তাঁর নির্দেশিত পথে চলে কি না। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে এরই দীক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। তাই বর্তমান ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমেও আমাদের প্রতি একই নির্দেশ আবর্তিত হবে।

ঝড়ো বাতাসের সময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমল

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, 'যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত; তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারায় পেরেশানির ভাব ফুটে উঠত। এ অবস্থায় এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তে থাকতেন, 'আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আঊজু বিকা মিন শার্রিহা-ওয়া শার্রি মা-ফিহা-ওয়া শার্রি মা-উরসিলাত বিহি।' অতঃপর যখন বৃষ্টি হতো, তখন তিনি শান্ত হতেন।' আয়েশা (রা.) আরো বলেন, 'আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি এতে পেরেশান হয়ে থাকেন?' রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, 'আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে তা আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না, কেননা পূর্ববর্তী


উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে আজাব পতিত হয়েছিল।' (মুসলিম, হা. ৮৯৯)

বজ্রের আওয়াজ শুনলে করণীয়

হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, "রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন, তখন এ দোয়া পড়তেন, 'আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগজবিকা ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা ওয়া আ-ফিনা- ক্ববলা জা-লিকা।' অর্থাৎ হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না; বরং এসবের আগেই আমাকে পরিত্রাণ দিন। (তিরমিজি, হা. ৩৪৫০)

বৃষ্টিতে বরকত লাভের দোয়া

রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বৃষ্টি হতে দেখতেন তখন এ দোয়া পড়তেন : 'আল্লাহুম্মা সায়্যিবান নাফিআ', অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি আমাদের উপকারী ও স্বচ্ছ বৃষ্টি দান করো। (বুখারি, হা. ১০৩২)

হজরত ইবনে সামুরাহ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টির সময় এ দোয়া পড়তেন, 'আল্লাহুম্মা দ'য় ফী আরদিনা বারকাতাহা ওয়া জিনাতাহা ওয়া সাকানাহা', অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি আমাদের জমিনে এর বরকত, স্বচ্ছতা ও উপকার দান করো। (আল মু'জামুল কাবীর, হা. ৬৯২৮)

অতিবৃষ্টির সময়ের দোয়া

হজরত আনাস (রা.) বলেন, একদা জুমার দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দেওয়া অবস্থায় জনৈক সাহাবি মসজিদে প্রবেশ করে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! জীবজন্তু মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে, পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের জন্য বৃষ্টি প্রার্থনা করুন। তৎক্ষণাৎ রাসুলুল্লাহ (সা.) দু হাত সম্প্রসারিত করে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ! তখন আকাশে বিন্দুমাত্র মেঘের ছোঁয়াও ছিল না, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দোআর পর দিগন্তে মেঘের উদ্ভাস হয়, কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ ছেয়ে ফেলে, অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়। আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ! পরবর্তী ছয় দিন যাবৎ আমরা সূর্য দেখিনি। সপ্তাহান্তে পরবর্তী জুমায় পুনরায় ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবারত অবস্থায়, ওই ব্যক্তি আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল!

ধন-সম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহ তাআলার কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার প্রার্থনা করুন। আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঁচিয়ে দোয়া করলেন, 'আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা'- অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদের ওপর থেকে আশপাশের অঞ্চলে সরিয়ে দাও, পাহাড়-মরু, খাল-বিল ও বনাঞ্চলের দিকে সরিয়ে নাও! বর্ণনাকারী বলেন, তখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, অতঃপর আমরা নামাজান্তে রোদের মধ্যে বের হই। (বুখারি, হা. ১০১৩)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:১৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যোগ্য কে???

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪১

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)




(সকল... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতান্ত্রিকভাবে লীগকে ক্ষমতার বাহিরে রাখা যাবে আজীবন।

লিখেছেন শাহিন-৯৯, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৩



লীগ সদ্য বিতাড়িত কিন্তু তাদের সাংগঠিক কাঠামো এখনো পূর্বের মতই শক্তিশালী শুধু ছোবল দিতে পারছে না, স্থানীয় নেতারা বিএনপির নেতাদের বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ইতিমধ্যে এলাকায় প্রবেশ করছে তবে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেললেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪১


মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী লম্বা রেইসের ঘোড়া মনে হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া হতে বেডরুমে যার নিয়োগ নিয়ে অস্বস্তি আছে তিনি খুব দ্রুত শিখে গেলেন কিভাবে মানুষের মাথা ঠান্ডা করতে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×