আমি একজন স্বপ্নবাদী।স্বপ্নের কথা বলি।আমার স্বপ্ন,চারপাশের মানুষের স্বপ্ন... ....কখনো কখনো অনেকের স্বপ্ন নিজের বলে মনে হয়।আমি সবার স্বপ্নের কথাই বলার চেষ্টা করি।
প্রায় এক বছর আগে আমারি এক ছোটবেলার দোস্ত ব্লগার ভাবারূ এর হাত ধরে আগমন এই ব্লগে। আমি আগে কবিতা লিখতাম অনেক। সেগুলো খাতাতেই লেখা থাকতো। তো একবার আমার এক ফ্রেন্ড সে খাতাটা চুরি করে নিয়ে যায়। সে কষ্ট ভুলিনি আমি এখনো। লেখাগুলোকে এক স্থানে সংরক্ষণ করবার মানসে আমি ব্লগিং শুরু করি। আমার প্রথম ও শেষ পোস্ট, দুটিই কবিতা। মাঝে শুধু ইতিহাস। সত্যি বলতে আমি এই পোস্ট লিখতে গিয়ে একটু ইমোশনাল হয়ে পড়েছি। কান্না আসছে বার বার। গরম কফি ঠিকই বলে, আমি খুব ইমোশনাল।
ব্লগিং এর শুরুতে আমি নিজেকে প্রকাশ করার চাইতে লুকাতেই বেশী পছন্দ করতাম। কোনদিনও ভাবিনি যে মানুষগুলো এখানে লেখালেখি করে তাদের সাথে সামনা সামনি দেখা হবে, কথা হবে, ভালোবাসা হবে, জড়িয়ে যাবো আবেগে আপ্লুত হয়ে, কিংবা ঘৃণা করে! সেই সে সময়ে আমি সারাদিনরাত পড়ে থাকতাম ব্লগে। এখন যেখানে রাতে ১৫৫ জন ব্লগার ও ২০৪ জন ভিজিটর , তখন রাত ৩ টার দিকে ২০ জনের মতো লগইন থাকতো আর ভিজিটর থাকতো ৫০-৬০ জনের মতো। সকালের দিকে থাকতো ৭/৮ জন লগইন। পুরাতন কয়েক হাজার পোস্ট পড়েছি আমি। ব্লগের ইতিহাসের প্রতি একটা আকর্ষণ ছিলো। পুরাতন পোস্ট খুজে খুজে কমেন্ট করতাম। তারি মাঝে দেখা হয়ে যেতো আরেক ইনসমনিয়াকের সাথে। ফারা তন্বীর এক পোস্টে সিরাজগন্জের স্থানীয় ভাষায় কথা বলতে সে আমার পোস্টে প্রথম কমেন্ট করে। তারপর দুই ইনসমনিয়াক মিলে সারারাত তক্কে তক্কে থাকতাম কখন নতুন পোস্ট আসবে। আসলেই প্রতিযোগীতা করে কমেন্ট করতাম। হ্যা, তিনি ব্লগের অন্যতম বিগশট, হাসান মাহবুব । ব্লগিং এর দিক নিদর্শন ও বিভিন্ন পথ আমি তাঁর হাত ধরেই শিখেছি।
এরই মাঝে লক্ষ্য করতাম বিভিন্ন নিক থেকে দেশদ্রোহীমূলক ও অবমাননা কর পোস্ট আসতো। কুৎসিত, নোংরা ও জঘন্য সে সব পোস্ট দেখে আমার বিবমিষা হতো, হতো জিঘাংখা। ছটফট করতাম চেয়ারে বসে। মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকের সন্তান হয়ে পারতাম না কোনভাবেই এগুলো বরদাশত করতে। তারপর অন্যদের দেখাদেখি শুরু করলাম ছাগু তাড়ানো। আমি ঠিক কি ভুল ছিলাম, গালি কেন দিতাম এগুলো আলোচনা সাপেক্ষ বিষয়। চেষ্টা করতাম অহেতুক কাওকে ছাগু না বলতে। প্রমাণ সাপেক্ষে বলতাম। এরই মাঝে পরিচয় হলো পাপী০০৭ ওরফে পাপতাড়ুয়া , হোসেইন১৯৫০(ব্যান) ও রাজসোহানের সাথে। সে ছিলো এক আনন্দময় আড্ডা ও বন্ধুত্বের উৎস...যার স্রোতে ভেসে গেলাম আমরা সবাই। সোহান তখন নতুন, ব্লগিং মাত্র শুরু করেছে। আমি যে পোস্টে কমেন্ট করতাম, আমার পেছন পেছন গিয়ে কমেন্ট করে আসতো। কোন সমস্যায় পড়লে ফোন দিতো। আমাদের ৪ জনের বন্ধুত্ব হয়ে উঠলো গাঢ়। এরই মাঝে একদিন ছাগুদের উৎপাত সহ্য করতে না পেরে হোসেইন১৯৫০ বললো আসো, আমরা একটা গ্রুপ করি। সবাই একমত হলাম। ডাকলাম আরো দুই তিনজন বড়ভাইকে। তাদের সাহস ও সাথে থাকার প্রত্যয়ে শুরু হলো সিপিজি (ছাগু পোন্দানো গ্রুপ) এর কার্যক্রম। সে কি উত্তেজনা, সে কি বিপুল বিক্রম! আমাদের নিক গুলো ব্লগের ভিজিটর লিস্টে দেখলেই ছাগুরা ভয়ে পিঠটান দিতো। বেশ কয়েকটি গ্রুপ নিক খুলে আমরা সবাই ব্যবহার করতাম। করতাম নিক অদল বদল। সামুতে ছাগু লিস্ট পোস্ট করলে ব্যান করে দেয় বলে ফেসবুকে সিপিজি গ্রুপ খুলে সেখানে রাখতাম লিস্ট। একেকজনের একেক দ্বায়িত্ব ছিলো।
এরই মাঝে আমার এক বন্ধুর ছোটবোনকে বাঁচানোর আহ্বানে পোস্ট দিলাম। সে এক ইতিহাস। সে ইতিহাসের পথ ধরে সব ধরনের ব্লগার হলো একত্রিত। তাঁরা কি করেনি বোনটির জন্য। আল্লাহর রহমতে বোনটি এহন সুস্থ প্রায়। আরো কিছু টাকার প্রয়োজন, সেটাও ইনশাল্লাহ যোগাড় হয়ে যাবে। সবার নাম উল্লেখ করলাম না, সম্ভবও না। তাঁরা যা করেছেন তার জন্য আমি, আমরা কৃতজ্ঞ। হোসেইন এর মাঝে করলো গাদ্দারি। সে শিবিরের পক্ষে পোস্ট দেয়া শুরু করলো। আমরা প্রথম প্রথম দ্বিধা বিভক্ত হলেও পরে তার শিবির সংশ্লিষ্টতার জন্য সাবাই মিলে তাকে বয়কট করলাম। নিথর হয়ে গেলো সিপিজি। সবাই খুব কষ্ট পেয়ে সরে গেলাম। বিচ্ছিন্ন ও ছাড়া ছাড়া ভাবে তবু চলতো ছাগুদের দমন। এরি মাঝে ছিলো আমার জন্মদিন। আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে খেয়াল করলাম আমার সেই জন্মদিনে ব্লগাররা একত্রিত হলো, জানালো জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
এদিকে আমাকে নিয়ে শুরু হলো ছাগুদের চক্রান্ত। শাওন নামক একজন ব্লগার আমার শারিরীক অক্ষমতাকে ঈঙ্গিত করে পোস্ট দেয় আমি নাকি আজমেরীর টাকা মেরে খেয়েছি। আমার পাশে সেদিন ছিলেন অনেক ব্লগার, যারা আজমেরীর জন্য গায়ে খেটেছেন, নিজের চোখে দেখে এসেছেন। এমনকি যারা রেসি বলে পরিচিত, তারাও এসে পাশে দাড়ালেন। প্রমাণ দেখাতে না পেরে পোস্ট মুছে দেয় শাওন। সবার টাকার হিসাব আমি পোস্টে দিয়েছি, নিজের পকেট থেকে কত টাকা দিয়েছি সেটা কোনদিন উল্লেখ করিনি। প্রয়োজনও মনে করিনি। তবু আমাকে শুনতে হয়েছে আমি আজমেরীর টাকা দিয়ে গাঁজা খাই (গাঁজা খেতে কি লাখ টাকা লাগে নাকি?)!
যাদের ভালো পাই তাদের নাম এই পোস্টে গেলে পাবেন। আর কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে না। নস্টালজিয়ায় ভুগে আমি এখন কাতর... যাদের কথা বলতে পারিনি তারা মন খারাপ করবেন না। আমি সবাইকেই সমান ভালোবাসি... শুধু পোস্টের খাতিরে কয়েকটি নাম এসেছে।
আমি খুব ইমোশনাল। রাগ করে ব্লগ ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি আমাকে ব্যান করা হয়েছে। আরেকটা নিক খুললাম বাঁধন স্বপ্নকথক নামে, সেটিও ব্যান খেলো। জানিনা কি অপরাধ, কোন মেইলও পাইনি। এই নিকটা আমার কাছের এক বন্ধুর। এই পোস্ট টা তাকে অনুরোধ করেই দিলাম। মডারেটর রা দয়া করে ভুল বুঝে এটাকেও ব্যান করবেন না আশারাখি।
আজ থেকে আর কোন গালি না দেয়ার চেষ্টা করবো। সবাই সহযোগীতা করবেন আশা রাখি।
সবাই ভালো থাকুন। হ্যাপি ব্লগিং।
স্বপ্নকথক