টিভিতে ব্লগার ইমরানের বক্তব্য শুনছিলাম। আশা করেছিলাম আজ এই দীর্ঘ ১১ দিনের অভাবনীয় আন্দোলনের অবসান হবে। কারণ ইতিমধ্যে সরকার তাদের সব দাবী মেনে নিয়েছেন। ফাঁসি দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আইন পরিবর্তনের কাজও চলছে।
সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এই আন্দোলনের উপর। সরকারের পক্ষ থেকে সব রকমের সহায়তাও দেয়া হচ্ছে। এটাতো বিরোধীদলের আন্দোলন নয় যে, পুলিশ মরিচের গুড়া মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে সব পন্ড করে দেবে!
তাহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অর্থ কী? এটা দেশের জন্য কী উপকারে আসবে? এখান থেকে আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটা অত্যন্ত বাজে উদাহরণও তো তৈরী করতে পারি...? যেমন, কারণে অকারণে রাজপথ দখল!!! সভ্য দেশে যা হয়না, তা বর্জন করাই শ্রেয়।
তরুণ ভাইদের বলি, আপনাদের এ্ই দাবীর পক্ষে আমিও আছি। দু'দিন শাহবাগ গিয়ে একাত্ম হয়েছি। বেসরকারী চাকুরী করে যখন তখন যাওয়া যায় না। দেশের বেশীর ভাগ মানুষই আছে আপনাদের সাথে। তবে দেশের বেশীরভাগ মানুষ কিন্তু এই আন্দোলন দীর্ঘ সময় অব্যাহত রাখার পক্ষে নয়।
আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সাথে আলাপ করেছি। অনেকেই বলেছেন যে দু'এক দিন এই আন্দোলন চালালেই চলতো। যেহেতু সরকার এর পক্ষে আছে পুরোপুরি। বরং অনেকে যৌক্তিক প্রশ্ন তুলছেন, এই আন্দোলন কার বিরুদ্ধে? সরকারের বিরুদ্ধে নাকি বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে? খুবই স্পর্শকাতর বিষয়...
সব রাজাকারের ফাঁসি দিতে তো অনেক সময় লাগবে। এই সরকারের আমলে তো নয়ই, হয়তো কখনোই সম্ভব হবে না! কাদের মোল্লার পরেও তো অনেকে আছে একের পর এক। বিচার বিভাগের উপর আস্থা হারালে তো চলবে না। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই সবাইকে আসতে হবে। দেশের সার্বিক অবস্থাও চিন্তা করতে হবে...
একজন মুরুব্বীও এসে তরুণদের বলছেন না যে, তোমরা এবার ক্ষ্যান্ত দাও, সরকার দাবী মেনে নিয়েছে। নাকি মুরুব্বীদের কথা কেউ শুনছে না?
তরুণদেরকে সবকিছু করতে দেয়া উচিত হবে না্। মুরুব্বীদের কথাও তাদের শুনতে হবে। তা না হলে এই হতভাগা দেশটা ভয়াবহ অনিশ্চিয়তার দিকে যাবে সন্দেহ নেই! কিছু একটা হলে এর দায়-দায়িত্ব কিন্তু তখন তরুণরা নেবে না, তখন সবকিছু সরকারের উপর বর্তাবে, এটা আমাদের বুঝতে হবে।
সকল মিডিয়া আপনাদের সাথে সার্বক্ষণিক ভাবে আছে, ব্যাপক কাভারেজ দিচ্ছে। এটা একটি বিরাট প্লাস পয়েন্ট আপনাদের জন্য। বেশীদিন এই আন্দোলন চালালে এটা গুরুত্বহীন হয়ে যেতে পারে!
সুতরাং সময় থাকতেই মাতৃভূমির স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন দয়া করে।